Google understood that if you’re just a search engine, people assume you’re a very, very good search engine.
— Rory Sutherland
৫০৪.
বলুনতো, নীতিমালা লিখতে কি লাগে? যেকোনো রেগুলেটরের একটা বড় কাজ হচ্ছে দেশ কি চায় সেটা ঠিক করা। আবার, দেশ আসলে কি চায় সেটা নির্ভর করছে গুটিকয়েক মানুষের হাতে। তারা কি আসলে বের করতে পেরেছেন দেশটা কি চায়? ফিরে আসি ব্যক্তি পর্যায়ে। আমরা কজন লিখে রেখেছি – জীবন থেকে কি চাই আমরা? বেশিরভাগ মানুষ লেখে না সেটা। আর সেকারণে নিজে আসলে কি চায় – সেটাও জানে না সে। তাই বলে দেশের ভালো কিসে হবে সেটা লিখবো না আমরা? কি চাই আমরা? সেটাই তো নীতিমালা। আর সেটা করতে কি কি করতে হবে – সেটা হবে অ্যাকশন পয়েন্ট। যারাই থাইল্যান্ড গিয়েছেন মুগ্ধ হয়েছেন তারা – বিশাল বিশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার দেখে। বেশিরভাগ ইনফ্রাস্ট্রাকচারই কিন্তু পিপিপি’র মডেলে করা। সরকারের অতো পয়সা থাকে না কোথাও। পিপিপি হচ্ছে গিয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ। পয়সা যোগান দেবে বেসরকারী কোম্পানি – কাগজ দেবে সরকার, আইনগত ভিত্তি সহ। আমাদের পিপিপি নীতিমালা তৈরী হয়নি এখনো।
৫০৫.
উন্নত দেশগুলোতে অনেক বড় বড় কাজে সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকে না জনগণ। কারণ এই পিপিপি। যেকোনো দেশের উন্নতির ইনডিকেটর বোঝা যায় ওদেশের পাবলিক ট্রানজিট সিস্টেম দেখে। মানে জনগন কতো সহজে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পারছেন – নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। ঢাকা শহরে সেটার অবস্থা আফ্রিকার অনেক দেশ থেকেও খারাপ। অথচ ব্যবস্যা বান্ধব পিপিপি নীতিমালা থাকলে প্রাইভেট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো প্রস্তাব দিতে পারতো সরকারের কাছে। তৈরী করতো ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড। ভাগ করে ফেলতো পুরো শহর – চার পাঁচ ভাগে। একেকটা ভাগের রুট নিয়ে দেন-দরবার করতো কনসেশন পিরিয়ডটা নিয়ে। এই রুটটা দাও আমাকে পঞ্চাশ বছরের জন্য। তৈরী করবো স্কাই ট্রেন। ইনফ্লেশন হিসেব ধরে ভাড়ার একটা চার্ট জমা দিতো সরকারকে।
৫০৬.
অন্য কোম্পানি হয়তো হাজির হতো আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ের প্ল্যান নিয়ে। সরাসরি টেন্ডারে যেতো সরকার। যে সবচেয়ে কম ভাড়া (জন প্রতি মানুষের) চাইতো, তার সাথে দর কষাকষি চলতো কনসেশন পিরিয়ডটা কমানোর জন্য। টাকার সমস্যা? ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ডের আওতায় বেশিরভাগ টাকা তোলা যায় জনগণ থেকে। মানে এই ট্রানজিট সিস্টেমটার বড় একটা মালিকানা চলে যাবে মানুষের হাতে। গুগল করুন ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড’ – পাগল হয়ে যাবেন আপনি। অথবা – ‘বিওওটি’। এধরনের মেগা প্রজেক্টের জন্য চোখ রাখতে পারেন থাইল্যান্ডের বিটিএস মাস ট্রানজিট সিস্টেমের দিকে। স্কাই ট্রেনগুলো সব তাদের। এই গত বছরই জনগনের কাছ থেকে তুলেছে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি টাকা। এই ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ডের প্রজেক্ট স্পন্সর হিসেবে বড় বড় কোম্পানি থাকলেও তারা জনগণকেও সম্পৃক্ত করে ওই মেগা-ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মালিকানা নেবার জন্য। শেয়ারের দাম দশ টাকা হলে ক্ষতি কি? থাইল্যান্ডের একদম নতুন টেলিফোন কোম্পানি ‘ট্রু কর্প’ তুলেছে ১.৮ বিলিয়ন ডলার। এই ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড থেকে। নতুন মোবাইল কোম্পানিটার জন্য। একেকটা শেয়ারের দাম ছিলো দশ বাথ করে।
৫০৭.
খুলবো নাকি একটা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড? তৈরী হবে বিশ্বমানের একটা ইউনিভাসিটি? নাকি একটা হাসপাতাল, বাম্রুডগ্রাডের মতো? আগেই বলেছিলাম কিছু পারি আর না পারি – লিখতে পারি নীতিমালা। আমাদের নীতিমালা লিখতে হবে আমাদেরই। লিখে দেবে বা অন্য কেউ। সাহায্য নেবো ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং ফার্মগুলো থেকে। প্রসেস তৈরিতে ওস্তাদ তারা। একটু আগেই পড়ছিলাম অ্যাকসেন্চারের একটা রিপোর্ট। সরকারগুলোর অদক্ষতার গ্যাপগুলো ধরে ধরে দক্ষ সিস্টেম তৈরী করছে তারা। তারা জানে ভালো মতো। সমস্যা মানুষে। সিস্টেমে নয়। তৈরী করতে হবে এমন প্রসেস – মানুষের জায়গায় কলাগাছ দাড়ানো থাকলেও কাজ চলবে রীতি মেনে। নীতিমালা লেখার কোর্স শুরু করছি শিগগিরই। আপনারা হবেন ‘পলিসি আন্টপ্রেনর’ মানে নীতিমালার উদ্যোক্তা। গুগল করবেন নাকি একটু? আমার ধারণা, আমরা শুরু করলে লিখবে সবাই। সবাই মিলে লিখবো আমাদের ভবিষ্যত। ক্রাউডসৌর্সিং করে লিখে দেবো আমাদের নীতিমালা। ক্রাউডসৌর্সিং মানে উইকিপেডিয়ার মতো সবাই মিলে কোনো কাজ বের করা। আইসল্যান্ডের সংবিধান নতুন করে লেখা হয়েছে এই ক্রাউডসৌর্সিং করে। অথবা কানাডার বাজেট? ফিনল্যান্ডের কথা তো সবার জানা।
বলুনতো, শুরু করা যায় কোনটা দিয়ে? সংবিধান?
[ক্রমশঃ]
বইটা পাবেন স্ট্যানফোর্ডের একটা পাবলিকেশন হিসেবে। নীতিমালা কোর্স শুরু করার আগে এটা একটা অবশ্য পাঠ্য। লিংক ছবিটাতে।
[…] মাত্র। আর, পয়সার জন্য ওর সাথে থাকবে ইনফ্রাস্ট্রাক্চার ফান্ড। আর এসপিভি। লাগবে এটাও। […]
LikeLike