Feeds:
Posts
Comments

Archive for July, 2015

Where words leave off, music begins.

― Heinrich Heine

০৬.

পেট চলে যোগাযোগ দিয়ে। যুদ্ধের মাঠে সবাই যাতে ঠিকমতো তার দরকারী তথ্য পায় সেটা দেখার দ্বায়িত্ব আমার। তথ্য পাঠানোর একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মানুষের কথাবার্তা। এই কথাকে এক যায়গা থেকে আরেক যায়গায় পাঠাতে দরকার ‘ফ্রীকোয়েন্সি ক্যারিয়ার’। আকাশ, ফাইবার আর তার যেখান দিয়ে পাঠাইনা কেন – সবখানেই ওই গলার শব্দকে চড়াতে হয় দরকার মতো ক্যারিয়ারে। এদিকে ডিজিটালের যুগ এখন। অবিকৃত শব্দ ওপারে পাঠাতে ‘স্যাম্পলিং’য়ের জুড়ি নেই। ক্যারিয়ারে ওঠানোর আগ পর্যন্ত এর চলাফেরা। আর তার রিফাইনড ভার্সন হচ্ছে এই ‘অ্যাকুস্টিক’ মানে সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। নিজে গান শুনি অনেক। অনেক মানে অনেক! জীবিকার সাথে মেলেও খানিকটা। আর ভালো শব্দের জন্য বহুদূর যেতে রাজি। ‘পার্ফেকশনিষ্ট’ না হলেও ব্যাপারটা কষ্ট দেয় আমাকে।

০৭.

গান হচ্ছে অ্যানালগ, আর তার আধার হচ্ছে ডিজিটাল। অ্যানালগ আধারে রাখলে রিপ্রোডাকশনে সমস্যা। অ্যানালগ হচ্ছে নদীর ঢেউয়ের মতো। হারিয়ে যায় সময়ের সাথে সাথে। আর ডিজিটাল হচ্ছে ইটের মতো। কাঠখোট্টা। বাঁকা ত্যাড়ার কিছু নেই। হিসেব রাখা সহজ। তার মানে – এখন গান মানে হচ্ছে শূন্য আর একের গল্প। কম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে এটা বলতে পারি যে – স্টুডিওর বাইরে ধারণ করা ওই সিগন্যালকে আবার একদম ঠিকমতো তৈরি মানে ‘রি-কন্সট্রাক্ট’ করা যাবে যদি স্যাম্পলিং ফ্রিকোয়েন্সিটা ওই সিগন্যালের সর্বোচ্চের দ্বিগুণ হয়। বেশি গল্প দিয়ে ফেললাম নাকি? গল্প আমার না। হ্যারি নাইকুয়িস্ট বলেছিলেন সেই উনিশশো চব্বিশে।

০৮.

তাহলে গল্পটা দাড়ালো কোথায়? গানকে যদি কোন আধারে ঠিকমতো ধরতে হয়, তাহলে সেটার স্যাম্পলিং হতে হবে নিদেনপক্ষে ৪০ কিলোহার্টজ। ভালো কথা। আগেই বলেছিলাম মানুষের কান শুনতে পায় ২০ কিলোহার্টজ পর্যন্ত। আমাদের গানের ডিস্ট্রিবিউটররা গানগুলো যে সিডিতে ছাড়ছেন সেটা আসছে ৪৪.১ কিলোহার্টজ স্যাম্পলিং আর ১৬ বিট ট্রান্সফার রেট নিয়ে। হিসেব অনুযায়ী, মানুষের কানের জন্য সিডি কোয়ালিটি শব্দ ঠিক থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে ১৯৬ কিলোহার্টজ স্যাম্পলিংয়ের গান কি যেন কিছু একটা দিচ্ছে যা মাথা খারাপ করে দিচ্ছে আমাদের। আগে শুনিনি সেই শব্দও শুনতে পারছি ইদানিং। গল্প দিচ্ছি? এখন ভেগে গেলে কষ্ট পাবো কিন্তু! কথা দিচ্ছি দ্বিতীয় পর্বের পর অংক কম থাকবে সামনে।

[ক্রমশ:]


শুনছি এখন: দ্য লাস্ট ওর্থলেস ইভনিং – ডন হেনলি
অ্যালবাম: দ্য এন্ড অফ দ্য ইনোসেন্স

Read Full Post »

People haven’t always been there for me but music always has.

― Taylor Swift

০৩.

কেন এই লেখা? জীবনে প্রচুর পয়সা খরচ করে এই ‘একটা ব্যাপার’ ধরতে পেরেছি বলে মনে হচ্ছে এখন। বর্তমান প্রযুক্তির মারপ্যাচে স্টুডিও কোয়ালিটি সাউন্ড তৈরি আর শোনার খরচ নেমে এসেছে হাতের নাগালে। প্রি-অ্যাম্প্লিফায়ার, অ্যাম্প্লিফায়ার মানে অ্যাম্প, ইকুয়ালাইজার, ড্যাক – সব চলে আসছে বাসায় ব্যবহৃত প্রযুক্তিতে। সহজ ভাষায়, সব চলে আসছে সিঙ্গেল বোর্ড কম্পিউটারে। হাতের নাগালের মধ্যে। চলছে অ্যান্ড্রয়েডে, লিনাক্সে। ইন্টারনেট অফ থিংস মানে ‘আইওটি’ এখন চালাচ্ছে দুনিয়া। এমবেডেড বোর্ড আর নেটওয়ার্কের ক্ষমতা জড়ো করলে যা হয় আরকি। ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং করার ডেডিকেটেড প্রসেসর চলে এসেছে আঙ্গুলের টিপে।

০৪.

‘ড্যাক’ মানে ডিজিটাল টু অ্যানালগ কনভার্টার তৈরি করতে পারছি বাসায়। তবে মূল খরচটা এখনো পড়ে আছে ফাইনাল আউটপুট অংশে। স্পীকার অথবা হেডফোনে। ওখানে এখনো কিছু করতে পারছি না আমরা। একটা ‘অডিওফাইল’ গ্রেডের হেডফোনের দাম আপনার ‘এলইডি’ টিভি থেকেও বেশি। দামের ওপরের রেঞ্জ জানতে চাইলে পাগল ঠাউরাবেন আমাকেই। তিরিশ হাজার ডলার? হেডফোন অ্যাম্প ছাড়াই! পড়ে গেলেন নাকি? তবে হাতের নাগালের মধ্যে থাকা একটা হেডফোন দেখতে পারেন চেখে। স্যানহেইজারের এইচডি ৮০০ মডেলের হেডফোনটা বের হয়েছিল সেই ২০০৯য়ে। অবাক করা ‘সাউন্ডস্টেজ’ তৈরি করে জিনিসটা। ওপেন ব্যাক এই হেডফোনটার এখনকার দাম মাত্র পনেরোশো ডলার। বেশি মনে হচ্ছে তাও?

০৫.

সবকিছুর মূলে হচ্ছে সাউন্ড সোর্স। আর গানটা শেষমেষ ডেলিভারি হচ্ছে কি ভাবে। আর – আমাদের কান নিয়েও আছে বড় গল্প। ‘কানমামা’ কতটুকু শুনতে পারবে না পারবে সেটাও তো একটা বড় গবেষনার বিষয়। মানুষ শুনতে পায় ২০ কিলোহার্টজ পর্যন্ত। ওর বেশি পারে অনেক প্রাণী, যেমন বাদুড়। এদিকে, বেশি শুনলেও খারাপ। এজন্য মানুষ অনেক কিছু শুনেও চুপ থাকে। না হলে তো শান্তি নষ্ট। বাসায় তো আরো বেশি। আমাকে বিয়ে দেবার সময় বলা হয়েছিল হয়তোবা – ছেলে সাত চড়েও রা করে না। এগজ্যাক্টলি এটা না বলা হলেও এধরনের কিছু বলা হয়েছিল বলে আমি নিশ্চিত। না হলে আমাকে পার করা কঠিন ছিলো বলে সবার ধারনা। তার মানে এই নয় যে আমি শুনতে পাই না। শুনি, তবে কম ‘রিঅ্যাক্ট’ করি। সংসারের ‘শান্তি’র সাথে ‘নাইকুয়িস্ট থিওরি’র সম্পর্ক কম।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

Where words fail, music speaks.

– Hans Christian Andersen

০১.

গান না শুনে বড় হয়েছেন কে? আমার মনে হয় খুব কম মানুষই। যতোদূর মনে পড়ে – বিয়ের আগে আমার বেতনের একটা বড় অংশ চলে যেতো এই গানের পেছনে। আগে দৌড়াতাম রেইনবো, রিদম আর সুর-বিচিত্রাতে। ছয়মাস বসে থাকতাম একেকটা ক্যাসেটের পেছনে। ক্যাডেট কলেজের এক ছুটিতে অর্ডার দিয়ে আরেক ছুটিতে পাওয়া আর কি! তাও ভালো। নিজে আয় দিয়ে ‘ভাইনল’ (যাকে আমরা সচরাচর বলে থাকি ভিনাইল) – পরের দিকে নতুন নতুন সিডি কেনা, আর নতুন পুরানো অডিও হার্ডওয়্যারের সংগ্রহ বাড়ানোই ছিলো আমার লিস্টের ওপরের দিকে। ওই সময়ে হাজার ‘পাঁচ’ ডলারের নিচে পাওয়াও যেতো না কোন ভালো অডিও হার্ডওয়্যার। এই হাই-ফিডেলিটি (হাই-ফাই) সাউন্ড নিয়ে যারা অতিমাত্রায় সচেতন, তাদের নামও আছে একটা। জানেন নিশ্চয়ই।

০২.

অডিওফাইল। হ্যাঁ। স্টুডিও কোয়ালিটি সাউন্ডকে নিজের বাসায় আনার প্রানান্তকর চেষ্টা করতে গিয়ে যা যা করা দরকার সেটা করে তারা। স্বাতী বিয়ের পর আমার রুমে এসে অবাক। না আছে টিভি, না আছে একটা ভালো পর্দা, না মটর সাইকেল। না একটা কার্পেট। পুরো রুম ধরে একটা কম্পোনেণ্ট সিষ্টেম। আর হাজার খানেক অরিজিনাল সিডি, ভাইনল। বই তো আছেই। আমি ওই ‘অডিওফাইল’ ব্যান্ডে না পড়লেও অডিওফাইল স্পেকট্রামের ওপরের দিকেই থাকবো বলে ধারনা করি। ছুটিতে আসার সময় মেয়ের জন্য একটা হেডফোন নিয়ে আসাতে ও অবাক হয়ে তাকিয়েছিলো আমার দিকে। কি ভেবেছিল সে? পাগল বাবা? মেয়েদের কাছে সব বাবাই ‘পাগল’।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

(বস্তুত) এটা (আল কোরআন) হচ্ছে মানবজাতির জন্য একটা সুস্পষ্ট ব্যাখা আর বিবেকের অনুসারীদের জন্য একটা পথ নির্দেশ ও সদুপদেশ (বৈ কিছুই নয়)।

– সূরা ৩ আলে ইমরান, আয়াত ১৩৮

১০.

রিসার্চ বলে আমরা সরে গিয়েছি ইসলামের মূলধারা থেকে। কথাটা অন্যরকম মনে হতে পারে তবে বিভক্তি বেড়েছে আমাদের মধ্যে। অথচ কোরআন একটাই। কোরআন থেকে দূরে সরে যাওয়াতে যতো সমস্যা। অনুবাদ পড়তে পারি, তবে সেটা কিন্তু মূল কোরআন নয়। অনুবাদের ‘এসেন্স’ ধরার জন্য যতটুকু ‘পন্ডারিং আপন’ মানে চিন্তা ভাবনা দরকার – সেটাও করছি না আমরা। অনুবাদই বা আমরা পড়েছি কতো শতাংশ? এতো সহজ করে দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা, আমি নিশ্চিত – পুরো কোরআনের অনুবাদ পড়লে পাল্টে গেছেন আপনি। ভেতরে ভেতরে। প্রচুর ঘটনার যোগসূত্র দেখলেই বুঝবেন কি বলতে চাইছি আমি। কানেক্টিং দ্য ডটস? হ্যাঁ, ইট স্টার্টস রাইট হিয়ার। আর কোরআনকে আরবী ভাষায় বুঝতে চাইলে? ইট’স অল অ্যাবাউট মাইন্ডব্লোইং এক্সপিরিয়েন্স! বিশ্বাস করুন।

১১.

আজ আমাদের ধর্মের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ‘মিস-ইন্টারপ্রেটেশন’। ইসলাম ধর্মে এটা শুরু হয়ে গেছে আমাদের খুব কম মানুষ ‘আরবী’ বোঝে বলে। পুরো কোরআন না পড়ার ফলে একেকটা আয়াত নিয়ে যে যার মতো করে ‘ইন্টারপ্রেট’ করছেন। নিজের সুবিধার্থে। কনটেক্সট না জেনে। প্রচুর ঘটনা বলা আছে কোরআনে। আল্লাহ (সু.আ.তা.) নিজেই বলেছেন তা তিনি দিয়েছেন – চিন্তা করার খোরাক হিসেবে। জ্ঞানী মানুষকে। এরপর ওই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত কিছু সতর্কীকরণ অথবা নির্দেশনা এসেছে তার পরেই। আর সবাই ‘ইন্টারপ্রেট’ করছেন ওই একটা দুটো লাইনের ইংরেজী অথবা বাংলা অনুবাদ পড়ে। কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই লাইন – সেটা না জেনেই শুরু হয় আকাশ পাতাল গল্প। অনেকে বলেন, পুরো কোরআন পড়েছেন বাংলায়। অথবা ইংরেজীতে। রিসার্চ বলে সেটা কোরআন পড়া নয়, বরং অনুবাদ দিয়ে প্রাথমিক একটা ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ আসে মাত্র। আরবী একটা ভীষণ ধরনের ‘গভীর’ ভাষা। সামনে আসবো তার প্রমাণ নিয়ে।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

নিশ্চয়ই এ কোরআন (আল্লাহর মনোনীত পথের) একটা রিমাইন্ডার, এখন যার ইচ্ছা সে তার মালিকের (সন্তুষ্টি লাভের) পথ ধরুক।

– সূরা ৭৬ আদদাহার, আয়াত ২৯

০৮.

ধরুন, গাড়ি কিনলেন অনেক টাকা দিয়ে। মানে, জমানো সব টাকা খরচ করে। ম্যানুয়ালে যেভাবে বলেছে সেভাবে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ না করলে টিকবে গাড়ি? বলা আছে চলবে ওটা পেট্রোলে, কেরোসিন দিলে হবে? বিশ্বাস করি আমরা মুসলমান, ‘ম্যানুয়াল’ না পড়েই। পড়লেন কিন্তু বুঝলেন না, এটা হয় কখনো? তাহলে পড়ার অর্থ হয় কোন? পড়ার থেকে কোরআনকে মেনে চলার ‘সওয়াব’ যে কতো বেশি – যদি সেটা জানতাম আমরা। চলি অন্যের কথা শুনে। সেকেন্ড হ্যাণ্ড ইনফর্মেশনের ওপর ভিত্তি করে। কোরআনের বিচ্ছিন্ন ‘কোটেশন’ বিভিন্ন যায়গায় পড়ে মনে করি অনেক কিছু শিখে গেছি আমরা। ব্লগ পড়লে তাই মনে হয় ইদানিং। আজ পৃথিবী জুড়ে দুর্দশার বেশীরভাগ হচ্ছে মুসলমানদের ঘিরে। অবাক হবার কিছু নেই। এখন যা ঘটছে তার সবকিছুই ভবিষ্যত্‍দ্বানী করে গেছেন হযরত মুহাম্মদ (সঃ)।

০৯.

মজার ব্যাপার হচ্ছে – সৃষ্টিকর্তা যা যা বলেছেন আর যা কিছু মানা করেছেন সেটার কোনটাই মানছি না এই আমরাই। মিথ্যা বলে যাচ্ছি ইচ্ছেমতো। ক্রমাগত। অন্যের জিনিস নিয়ে নিচ্ছি নিজের মনে করে। ভ্রুক্ষেপ ছাড়া। নিজে মানি না নিয়ম, আশা করি মানবে অন্যরা। অন্যেরা ভাঙ্গলে সরব হয়ে উঠি এই আমরাই। মানুষকে নিগ্রহ করতে নিসপিস করতে থাকে আমাদের হাত পা। আফ্রিকাতেও দেখিনি এভাবে মানুষ পেটাতে। পরচর্চা তো আছেই। প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গছি প্রতিদিন। টাকা ধার নিলে ফেরত দেবার কথা মুখে আনছি না আর। দান খয়রাত তো ভুলে গেছি কবে। কৃতজ্ঞতাবোধও উঠে গেছে অনেক আগে। যে সাহায্য করে, ক্ষতি করি তারই বেশি। তির্যক কথা বলে অন্যকে পঁচাতে পারলে স্মার্ট মনে করি নিজেকে। অথচ – সবকিছুই পরিষ্কার করে বলা হয়েছে কোরআনে। রিপিটেডলি। হ্যাঁ, বার বার। সমস্যা কোথায় তাহলে?

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

(বিচারের দিন) আল্লাহর রসুল (অভিযোগ করে)বলবেন: হে প্রভু! আমার লোকেরা এই কোরআনকে পরিত্যক্ত করে রেখেছিলো।

– সূরা ২৫ আল ফুরকান, আয়াত ৩০

০৬.

ফিরে তাকাই আমার দিকে। ছোটবেলায় কোরআন পড়েছিলাম শুধুমাত্র পড়ার জন্য। আজ পয়তাল্লিশ বছর বয়সে এসে কোরআন পড়লাম আবারো। তবে, এবার বোঝার আগ্রহ নিয়ে। তাও সেটা এলো সৃষ্টিকর্তার ইশারায়। মানে, ওই বিপদে না পড়লে হয়তোবা পড়তাম আরো পরে। ওই ধাক্কাটার জন্য ধন্যবাদ সৃষ্টিকর্তাকে। ধাক্কা কি পায় সবাই? পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ‘পড়া’ বইগুলোর মধ্যে এই বই বাদ পড়লো কিভাবে সেটাই বিস্ময়। মানে, আমি নিজেই পড়িনি এতোদিন। বুঝে। এখন চিন্তা করছি অন্য কথা। এমন কি আছে এখানে – যা অন্য ধর্মের মানুষদের টেনে আনছে চুম্বকের মতো? আর আমরা ফেলে রেখেছি আলমারির ওই উঁচু তাকে। গিলাফে সযত্নে মুড়িয়ে। মনে কষ্ট পেলেও প্রবোধ দিলাম নিজেকে। নাও তো জানতে পারতাম কি আছে এই বিশ্বসেরা ‘ম্যানুয়ালে’। তার আগেও তো চলে যেতে পারতাম এই দুনিয়া থেকে।

০৭.

যিনি তৈরি করেছেন মানুষকে, তিনিই বাতলে দিয়েছেন জীবন ব্যবস্থা। যন্ত্রপাতির সাথে ইউজার ম্যানুয়াল যেমন ‘ইন্টেগ্রাল’ পার্ট, তেমনি এটাও। মিডল-ইস্ট আর আফ্রিকাতে বন্ধু হয়েছে অনেক। ইদানিং। আগে ছিলো, তবে বেড়েছে আরো। যখন বলি, একটা ভাষা পড়তে লিখতে পারি, তবে বুঝি না, মুচকি হাসে তারা। হয়তোবা ভাবে, এ আবার কি ধরনের ভাষার দক্ষতা? মুখ ফুটে না বললেও বোঝা যায় হাবভাবে। দোষ দিয়ে লাভ নেই তাদেরকেও। ব্যাপারটা তারা বুঝবেনা। আমিও দাড়িয়ে থাকি হাসি দিয়ে। বউয়ের সাথে এই কাজ করি বলে বউ থাকে খাপ্পা। আফ্রিকায় বউ সাথে থাকে না বলে কোরআনকে বোঝার ‘ভাষা আরবী’ নিয়ে নেমে গেলাম একটা প্রজেক্টে। শুধুমাত্র – কোরআন বুঝতে। যা পেলাম – মাথা খারাপ করে দিলো আমার!

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

অবশ্যি আমরা এ কুরআন বোঝার জন্য সহজ করে নাযিল করেছি। অতএব কে আছে এ থেকে উপদেশ গ্রহণ করবে?

– সূরা ৫৪ আল কামার, আয়াত ৪০

০৪.

রিসার্চ করতে বসলাম কি শেখা যায় এই বয়সে। লূকিং ব্যাক, নামাজ নিয়ে সমস্যায় ছিলাম আমি। মাঝে মধ্যে ধরেও ছেড়ে দিতাম আবারো। নামাজে দাড়ালে হাজারো চিন্তা চলে আসতো মনে। বুঝলাম এটা কনসেনট্রেশনের সমস্যা। বেশ বড় সমস্যাই বটে। কারণ, আমি নিজেই জানিনা কি বলছি নামাজে। মুখস্ত জিনিস বলে যাচ্ছি গড়বড় করে। আজান শুনলে মনে হতো পরে পড়ে নিবো বাসায় গিয়ে। অজু করার পানি পাব কোথায়? অলসতাও আরেকটা বড় সমস্যা। ভীষণ একটা বিপদে পড়ে ফিরে এলাম নামাজে। সত্যিকারের রিসার্চে বসলাম এবার।

০৫.

শুরু করলাম ‘যারা ধর্মান্তরিত’ হয়েছেন আমাদের ধর্মে তাদেরকে দিয়ে। আমরা যারা জন্ম থেকেই ধর্মটা পেয়েছি তাদের ব্যাপারটা আলাদা। খুঁজতে চাইলাম, একটা মানুষ তার বাবা দাদার ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্মে আসার পেছনে ‘সিঙ্গল মোস্ট’ ‘মোটিভেশনাল ফ্যাক্টর’টা কি? আমি যদি অন্য ধর্মে থাকতাম, (উদাহরণ হিসেবে বলছি) তাহলে ধর্মান্তরিত হবার ওই মানসিক শক্তি আসার পেছনে কি কারণ থাকতে পারতো? ‘মুভিং দ্য মাউণ্টেন’য়ের মতো মানসিক শক্তি। একটা জিনিস বুঝে গেছি এর মধ্যে। আমাদের দেখে মানে আমাদের বেশিরভাগ মানুষের আচার ব্যবহার দেখে অন্য ধর্মাবলম্বীরা আসেনি এই ধর্মে। এসেছে একটা অলৌকিক শক্তির টানে। কোরআন পড়ে। সত্যি তাই। প্রায় শতভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মে এসেছেন কোরআনের টানে। কোরআন পড়ে। ‘কাভার টু কাভার’। কোরআন বুঝে। একেবারে ‘পন্ডারিং ওভার’ করে।

কারণ, কোরআন পড়তে গিয়ে তারা বুঝেছেন – দিস ইজ ইট! ফাইনালি!

মিরাকল?

অ্যান্ড, উই হ্যাভ টেকেন ইট ফর গ্র্যান্টেড।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

এটি একটি বই। আমরা এটি তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছি আশীর্বাদ হিসেবে। এই আশীর্বাদ বই আমরা এজন্য পাঠিয়েছি যাতে মানুষ এর আয়াতগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা (গবেষণা) করে। আর, জ্ঞানবান লোকেরা যেনো এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে।

– সূরা ৩৮ সোয়াদ: আয়াত ২৯

০১.

নতুন বত্‍সরের ‘রেজ্যুলুশন’ নিয়ে অনেক কথা হলেও রমজান মাস নিয়ে ভেবেছেন কখনো? তিরিশ দিন, সময় কম নয়। কি করা যায় বলুনতো? আমার মাথায় খেলছে জিনিস একটা। বলবো?

নতুন ভাষা শিখলে হয় কেমন? নতুন একটা ভাষা। যেটা আমরা পড়তেও জানি কিছুটা।

হটাত্‍ কেন এই কথা?

পৃথিবী চষে বেড়ানোর পর এ উপলব্ধি কেন আপনার? এড়াতে পারলাম না প্রশ্নটা।

০২.

যুগটা গ্লোবালাইজেশনের। বন্ধুও জুটিয়েছি বিভিন্ন টাইমজোনে। তাদের মধ্যে পৃথিবী চষে বেড়াচ্ছে তারাই – যারা ভাষা জানে নিদেনপক্ষে পাঁচটার মতো। ‘জিম রনে’র ভাষায় একেক ভাষা মানে এক মিলিয়ন ডলার। বাড়তি আয়। মিথ্যে বলেনি সে। ছোট বাচ্চাদের হাজারো গিফটের মধ্যে এটাই সব সেরা গিফট। সারা জীবনের জন্য। ঘুরে বেড়াবে পৃথিবী দাপিয়ে। ধন্যবাদ দেবে আপনাকে মনে মনে। দূরদৃষ্টির জন্য।

কতো গুলো ভাষা শিখতে পারে বাচ্চারা?

যতোগুলো চান আপনি। ভাষাতত্ববিদদের উত্তর। তবে সংখ্যা ছয় ব্যপারটা খারাপ নয়। রিসার্চ বলে বাচ্চারা একসাথে দুটো করে ভাষা শিখতে পারে ওই ‘দুই-তিন’ বছর বয়সে। কোন সময়ে কোন ভাষা ব্যবহার করতে হবে সেটাও ধরতে পারে ওই সময়ে।

০৩.

আচ্ছা, বাদ দিলাম বাচ্চাদের কথা। আমাদের কি হবে? চুল পেকে গেলেও আরেকটা ভাষা শেখা কঠিন নয়। নিজের কথাই বলি। জার্মান নিয়ে খোঁচাখুচি করেছিলাম একসময়ে। খবর পড়ুয়াদের বেশ বড় অংশ বুঝতেও পারতাম একসময়। টিভিতে সারাদিন জার্মান দেখলে না শিখে উপায় কি? কঙ্গোতে ছিলাম এক বছর। ফ্র্যাংকোফণিক দেশ হিসেবে ফরাসী ছাড়া ওদেশ অচল। কিছুটা শিখতে হয়েছিল অবস্থার চাপে পড়ে। দশ বছর পরে আবার এসে পড়লাম এই আইভরি কোস্টে। এখানেও সবাই কথা বলছেন ফ্রেঞ্চে। পুরোনো ফ্রেঞ্চকে ঝালাই করতে আবার ভর্তি হলাম ফ্রেঞ্চ ক্লাসে। এই আইভরি কোস্টে। মন টিকলো না মাসখানিক পরে। পুরানো জিনিস ভালো লাগে কার? নতুন কিছু শেখার জন্য আকুপাকু করতে থাকলো মন।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »