I start where the last man left off.
– Thomas A. Edison
৩৫৩.
প্রয়োজন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। তার জন্য দরকার স্পেকট্রাম। বিশেষ করে ‘আইএমটি’ স্পেকট্রাম। আরো বেশি। আবার সব দেশের স্পেকট্রাম সমান, তাহলে অন্যরা সুবিধা নিচ্ছে কিভাবে? ওটার গল্পে যাবার আগে বলুনতো আইএমটির জন্য কতটুকু ফ্রিকোয়েন্সি দরকার? আমাদের দেশে? তিন গিগাহার্জের মধ্যে কতোটুকুই বা দেবেন এই আইএমটির জন্য? মানে মোবাইলের জন্য? এ ব্যাপারটা নির্ভর করছে দেশগুলোর ওপর। তবে, আসল রিপোর্ট পড়ে চোখ কপালে। মানে সেই দুহাজার সাত থেকেই। নামছে না নিচে। কার কতোটুকু মোবাইল ফ্রিকোয়েন্সি প্রয়োজন সেটার হিসেব করার তুখোড় পদ্ধতি বলে দিয়েছে আইটিইউ-আর (রেডিও) এর রেকমেন্ডেশন এম.১৩৯০ আর এম.১৭৬৮. এই রেকমেন্ডেশনগুলোর পেছনে স্টাডিগ্রুপগুলোর অবদান ভোলার মতো নয়। মোটেই নয়। স্টাডিগ্রুপগুলোর চেয়ারম্যানদের মধ্যে অনেককেই চিনি আমি। ব্যক্তিগতভাবে। দেশগুলোর প্রশাসন থেকে যতো মানুষ আছে এই স্টাডি গ্রুপগুলোতে – তার থেকে বেশি মানুষ হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি থেকে। পৃথিবীর ডেভেলপমেন্ট তো ওদের হাতে।
৩৫৪.
দেশগুলোর সুবিধার জন্য এই রেকমেন্ডেশনগুলোতে দেয়া আছে হাজারো প্যারামিটার। আইএমটির টেরেস্ট্রিয়াল অংশগুলোর হিসেবের জন্য মানে ভবিষ্যতে কি কি ব্যান্ড আসতে পারে সেটার ধারণা আছে ওখানে। কান্ট্রি স্পেসিফিক না করে জেনেরিক ভাবেই রাখা হয়েছে হিসেব করার টুলগুলোকে। কোন রিজিওনে আছি আমরা আর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কোন প্যারামিটারগুলো আমার দেশের সাথে যায় – সেটা হলেই বের করতে অতটা সমস্যা হবার কথা নয়। আমার ধারণা, যেকোনো ইউনিভার্সিটিকে দ্বায়িত্ব দিলে ওটা বের করে নিয়ে আসবে মাস দুয়েকের মধ্যে। কোন ধরনের সার্ভিস চালাচ্ছি আমরা, আর সেটার ট্রাফিক ভলিউম আর কোয়ালিটি অফ সার্ভিস (কিউওএস) কনস্ট্রেইন্টস ধরে নিতে হবে সবার শুরুতে। রিজিওনাল ট্রাফিক আর সময়ের পার্থক্য – স্পেকট্রামটা ‘টেকনোলজিক্যাল নিউট্রাল’ মানে প্রোভাইডারের ইচ্ছেমত ভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি না; এধরনের গল্প থাকবে এর সাথে। ভবিষ্য আর চালু প্রযুক্তির ভেতরে কতোটুকু দক্ষতার অভাব আছে সেটা না জানলে চলবে কিভাবে? সাধারণ ‘জিএসএম’ আর ‘এলটিই’ প্রযুক্তির মধ্যে কোনটা কতোটা ‘স্পেকট্রাল এফিসিয়েন্ট’ সেটাও আসবে এই হিসেবে। স্পেকট্রাম ফেলে রাখলে কতো ক্ষতি তার হিসেব বের করতে পড়তে হবে আরেকটা রিপোর্ট।
৩৫৫.
স্পেকট্রামের ব্যান্ডউইডথ এর দরকারের হিসেব মানে তার এস্টিমেশন করতে তৈরী করা হয়েছে রিপোর্ট আইটিইউ-আর (রেডিও) এম.২০৭৮| এটা তৈরী করা হয়েছিলো দুহাজার ছয়ে। এটার একটা রিভিশন দরকার হয়ে পড়েছে এখন। এটা ডাব্লিউআরসি-০৭ এর ‘রেডিও এক্সেস টেকনিকস গ্রুপস’ সংক্ষেপে ‘আরএটিজি’র জন্য তৈরী করা হয়েছিলো ওসময়ে। ডাব্লিউআরসি-০৭ এর এজেন্ডা আইটেম ১.৪ মানতে গিয়ে তৈরী করা হলো চার চারটা ‘আরএটিজি’| এই আইএমটি আর আইএমটি-অ্যাডভান্সডএর ভবিষ্যত কার্যক্রম চালিয়ে নেবার জন্য এই ব্যবস্থা। ভাবছেন এতো কিছু জানি কিভাবে? আমার থেকে অনেক ভালো জানবেন আপনি – ‘আরএটিজি’এর ব্যাপারে। বিশ্বাস হচ্ছে না? নিচের বইটা ম্যানেজ করুন কোনভাবে! বেগ, বরো ওর স্টিল! ও হ্যা, ‘স্টিল’ বাদ। কারণ, আমারো আছে একটা।
৩৫৬.
আইটিইউ’র বাইরের অর্গানাইজেশনগুলো থেকে দুহাজার দশের পরের ডাটা নিয়ে হিসেব করা হয়েছিলো একটা। ব্যবহার করা হয়েছিলো ওই রেকমেন্ডেশনের অংকগুলোকে। বিশেষ করে আইটিইউ-আর এম.১৭৬৮| ওখানে নতুন আর পুরনো সার্ভিস নয়, খিচুড়ি সার্ভিসকেও নেয়া হয়েছিলো বিগ পিকচার পাবার জন্য। অনেক পরিপূরক সার্ভিসের সাথে ছিলো ‘আরএটিজি’গুলো। রিপোর্টের হিসেবে দুহাজার বিশের মধ্যে ‘আরএটিজি১’ আর ‘আরএটিজি২’এর জন্য আইএমটি’র স্পেকট্রাম প্রয়োজন ১,২৮০ মেগাহার্টজ! বলে কি? হ্যা, এটাই নুন্যতম! এখানে আছে ব্যবহৃত হয়েছে এমন ফ্রিকোয়েন্সি, ব্যবহার হবে ভবিষ্যতে, আরএটিজি১ সহ। এই এস্টিমেশনে স্পেকট্রামের ব্যান্ডউইডথএর প্রয়োজনীয়তা শুরু হয়েছে ১,২৮০ থেকে ১,৭২০ মেগাহার্টজ পর্যন্ত। এই রেঞ্জ হচ্ছে গিয়ে বড় আর ছোট মার্কেটের হিসেবে। এমনিতেই বোঝা যায়, বড় বাজারের জন্য স্পেকট্রাম দরকার ওপরের দিকে আর ছোট বাজারে নিচের দিকে। রিপোর্ট আইটিইউ-আর এম.২০৭২য়ে মার্কেট সেটিংসটা পড়ে দেখতে পারেন। বাংলাদেশের জন্য আপনারা কি ভাববেন জানি না, তবে আমাদের ইন্টারনেটের জন্য ফিক্সড ইনফ্রাস্ট্রাকচার অতটা না থাকার কারণে স্পেকট্রাম ডিপেন্ডেন্সি অনেক অনেক বেশি। আর – আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ জনপদ আছে কোথায়? বাংলাদেশের আইএমটি’র কতো স্পেকট্রাম দরকার তার চুলচেরা হিসেব নিয়ে আসবো পরে।
৩৫৭.
অন্যরা কি বলছে তা শুনি বরং। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাফ জানিয়েছে নুন্যতম ১,২০০ মেগাহার্জের কথা – দুহাজার পনেরোর মধ্যে। দুহাজার পনেরোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৯৫০ মেগাহার্টজ। নুন্যতম। ওর এনবিএন (ন্যাশনাল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক) তো ফাইবারের আখড়া। অতটা দরকার নেই ওদের স্পেকট্রাম। তাও প্রয়োজন ১,১০০ মেগাহার্টজ নুন্যতম – দুহাজার বিশের মধ্যে। আরেক কাঠি সরেস জাপান। দরকার ১,৫০০ মেগাহার্টজ – বিশ সালের মধ্যে। কোরিয়ারও দরকার ৯৮৮ মেগাহার্টজ – যাদের ফাইবারের নেটওয়ার্ক বিশ্বসেরা। আমেরিকার দরকার আরো বেশি। যা আছে তার সাথে যোগ করতে হচ্ছে ৫০০ মেগাহার্টজ। সবাই বুঝে গেছে একটা কথা। স্পেকট্রাম ধরে রাখলেই ক্ষতি দেশের। ব্যবহার করতে হবে স্পেকট্রাম, দক্ষতার সাথে। ওখানেই উৎকর্ষের কারুকাজ!
আসছি সামনেই।
[ক্রমশঃ]
রিপোর্টগুলোর লিংক দেবো কালই।