Feeds:
Posts
Comments

Archive for January, 2015

It’s better to be at the bottom of the ladder you want to climb than at the top of the one you don’t.

– Stephen Kellogg

৬৫৩.

ব্রডব্যান্ডের সুফল দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দিতে হলে আগে নির্ধারন করতে হবে জাতীয় ‘ফোকাল পয়েন্ট’। বুঝতেই পারছেন, হাজারো কাজ হবে এই ব্রডব্যান্ড নিয়ে। সরকারের কোন এজেন্সি যদি সেটাকে ঠিকমতো ‘মনিটর’ অর্থাত্‍ কাজগুলো ঠিক মতো হচ্ছে কিনা – কোন কাজটার সুফল আসছে আর কোনটার আসছে না সেটাকে চিহ্নিত করার দ্বায়িত্ব নিতে হবে সেই ফোকাল পয়েন্টকে। কাজটা হচ্ছে দেশের – সেখানে নন-গভর্নমেন্ট অর্গানাইজেশনের তো আর ‘লীড’ নেবে না। সরকারী আর বেসরকারি ‘শত’ এজেন্সি কাজ করবে এখানে, কাজ হবে বিশাল প্রজেক্ট আকারে। ফোকাল পয়েন্ট থাকবে ‘ক্লিয়ারিং হাউস’ হিসেবে – এই বিশাল প্রজেক্টের। প্রজেক্টের কাজের সফলতা, অগ্রগতি আর একেকটা কাজের ‘ইন্টার-ডিপেনডেন্সি’ অথবা, কার জন্য আটকে আছে কাজটা – এধরনের ধারাবাহিকতা ‘মনিটর’ করার জন্য থাকতে হবে সরকার থেকে মনোনীত ‘ফোকাল পয়েন্ট’ একটা এজেন্সিকে। এটাকে ধরে নেব ‘পিএমও’ মানে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অফিস হিসেবে।

৬৫৪॰

ফোকাল পয়েন্ট এজেন্সি হিসেবে থাকছেন যারা, তাদের ‘ক্যাপাসিটি’ তৈরি করা জরুরী। ব্রডব্যান্ড ডেভেলপেমেণ্ট প্রোগ্রাম তৈরি করতে তাদের জানতে হবে বিভিন্ন টুলস। পুরো পৃথিবীতে ব্যবহার হচ্ছে এই টূলগুলো। রকেট সায়েন্স নয় বলে এগুলো ব্যবহার করে ‘উন্নত’ থেকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশগুলো সুফল পাচ্ছে সরাসরি। বইটার তৃতীয় অধ্যায়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে এই টুলগুলো নিয়ে। এই কাজগুলো অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সাথে কিভাবে সম্পৃক্ত সেটা জানতে হবে আগে। আর সেকারণে বেশ কিছু অর্থনীতিবিদ থাকতে হবে সেই ফোকাল পয়েন্ট এজেন্সিতে। রেগুলেটরী এজেন্সি থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয় এবং ব্রডব্যান্ড প্রোমোশন এজেন্সি (যদি থাকে) সবাইকে জানতে হবে জিনিসগুলো। ব্যাপারগুলো না জানলে অপারেটর, ইনভেস্টর আর ইনডাস্ট্রির কাছ থেকে নেয়া যেতে পারে ধারণাগুলো – ‘পাবলিক কন্সাল্টেশন’ হিসেবে। সবদেশের অপারেটরদের কর্পোরেট হেডকোয়ার্টারে জ্ঞানগুলো জমা রাখা হয় বিভিন্ন দেশের প্রয়োজন মেটানোর জন্য। বলতে বাঁধা নেই, তাদের ‘জ্ঞান ব্যবস্থাপনা’ অনেক উঁচুমানের। হবে না কেন? এক কোম্পানী যখন ‘অপারেট’ করে অনেক দেশে, তাদের জানতে হয় অনেক কিছু। ব্যবসার খাতিরেই।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

What a loss to spend that much time with someone, only to find out that she’s a stranger.

– Joel, Eternal Sunshine of the Spotless Mind

৭৩.

কেমন হতো বলুনতো? মাথার কিছু কিছু স্মৃতি যদি মুছে ফেলা যেতো ইচ্ছে করলেই। বলেন কি? ভালো হবে না। একেবারেই না? আচ্ছা – যে স্মৃতিগুলো চান না মনে রাখতে? অথবা, যে ঘটনাগুলো ভুলে যেতে চান তাড়াতাড়ি? খুলেই বলি তাহলে। সম্পর্ক খারাপ দিকে মোড় নেয়াতে মাথা থেকে ‘জিম ক্যারি’র স্মৃতি মুছে ফেলে ‘কেট’। কেট মানে আমাদের ‘কেট উইনস্লেট’। পরদিন থেকে ক্যারি’কে আর চেনে না সে। পাগল হয়ে গেল নাকি মেয়েটা? নাকি ভাব নিচ্ছে মেজাজ খারাপ হবার কারণে? খোচাখুচি করে জানা গেল আসল ঘটনা। করেছে কি মেয়েটা? আঁতকে উঠলেন আপনি।

৭৪.

মন্টাকে গিয়েছিলাম কয়েকবার। এই ট্রেনে করে। এই মুভিটা হবার অনেক আগে। ‘এলআইআর’ মানে লং আইল্যান্ড রেইলরোড ট্রেনে ওই তুষারপাতের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলাম ওর শেষ মাথায়। মানে নিউ ইয়র্কের শেষ সীমানায়। সাগর দেখতে। ‘মন্টাক পয়েন্ট লাইট’ হচ্ছে অ্যামেরিকার সবচেয়ে পুরোনো লাইটহাউস, কাজ করে এখনো। মুভিতে কেটের আগ বাড়িয়ে ক্যারি’র সাথে খুনসুটি খারাপ লাগছিলো না আমারো। মেয়েদের মধ্যে এই ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ ব্যাপারটা বোধহয় সবাইকে টানে। স্বীকার করছেন না আপনি? আচ্ছা, মেনে নিলাম। টানে শুধু আমাকে। মেয়েরা হয়তোবা ওই জিনিসটা পছন্দ করবে না ছেলেদের মধ্যে। ছেলেরা ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ হলে কি হবে – ধারনা করতে পারছেন কিছু?

৭৫.

সম্পর্ক খারাপ। তাই ওই স্মৃতিটা মুছেই ফেললো কেট। একটা কোম্পানী করে কাজটা। এদিকে ক্যারি কেঁদে কেটে অস্থির। বূক ফাঁকা ফাঁকা লাগলে কি করবে ও? মনে হয় বুকের ভেতর তেলাপোকা হাটছে সারাদিন। কষ্টে টিকতে না পেরে একই পথ বেছে নিল ক্যারি। তারপরের ঘটনা মজার। আবার প্রেমে পড়ে ক্যারি, এই কেটের। ছেলেদের মন মনে হয় নরম থাকে, কি বলেন? আমার ধারনা স্মৃতি মোছার পরও কিছু ছিটেফোটা বাকি ছিলো ক্যারি’র মাথায়। হাজার হোক ছেলে তো! জানি, মার একটাও পড়বে না মাটিতে। পালাই বরং।

৭৬.

যাবার আগে এর থিম স্কোরটা দিয়ে যাই – কি বলেন? একটা অজানা কারণে ‘কিউ’টা মনে ঢুকে গিয়েছে এগারো নম্বর চার্টে। মুভিটার আছর তো আছে বটেই। দেখলে আছর পড়বে আপনার ওপরও। তবে সেটার সাথে অন্য কিছু না খুজলেই ভালো। ও হ্যা, কম্পোজার ছিলেন জন ব্রাইয়ন। শুনলেই বুঝবেন পাগলা কিসিমের কিছুটা।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

If you were born without wings, do nothing to prevent them from growing.

― Coco Chanel

৬৫২.

বাংলাদেশে কি চলবে আর চলবে না, সেটা দেখার আগে দেখে আসি অন্য দেশগুলোতে কি কি চলেছে। ব্রডব্যান্ডের সুফল পাবার আগে ওই দেশগুলো কি করেছে? যার ফলাফল পেয়েছে হাতেনাতে। মজার কথা – পঞ্চাশটার বেশি দেশের ব্রডব্যান্ড নীতিমালা দেখে একটা প্যাটার্ন পাওয়া যাচ্ছে যার অনেকটাই মিলে যাচ্ছে ব্রডব্যান্ড হ্যান্ডবূকের সাথে।

ক॰ ব্রডব্যান্ড নয়, দেশের উন্নতির নীতিমালা তৈরি করেছে উন্নতির শিখরে পৌছে যাওয়া দেশগুলো – সবার আগে। দেশের সমস্যা আর তার সমাধান চলে আসবে সেই ‘স্ট্র্যাটেজিক’ ক্যানভাসে। টার্গেট আর সেটাকে সময়মতো মেটানোর টাইমলাইন চলে আসবে ওই কাগজে। ওই কাগজ দেখবে সবাই। প্রাইভেট সেক্টর, ইনভেস্টর, ইনডাস্ট্রি। আর সেটা দেখে পরিমার্জন করবে তাদের ‘ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান’। এই সবকিছুর টূল হচ্ছে এই ব্রডব্যান্ড নীতিমালা।

খ॰ দেশের উন্নতির নীতিমালা অথবা ওই দেশের ‘দর্শন’ তৈরি করার প্রক্রিয়ার সময় আলোচনা করতে হবে সবার সাথে। সরকার হয়তোবা তৈরি করতে পারে নীতিমালা, কিন্তু সেটার বাস্তবায়ন করবে প্রাইভেট সেক্টর আর ইনডাস্ট্রি। সেটার পয়সা ঢালবে ইনভেস্টর। তাদের সাথে কথা না বলে অথবা তাদের মতামত – তাদের সুবিধা অসুবিধা না জেনে নীতিমালা তৈরি করলে কাজ এগোবে না দরকার মতো। গ্রাহক কি চান সেটা তো আসবে সবার আগে। ভুল বলেছি?

গ॰ তৈরি হলো নীতিমালা, তবে সেটা কাজ করছে কিনা বা তার ধারাবাহিকতা দেখার জন্য দ্বায়িত্ব নিতে হবে রেগুলেটর অথবা মন্ত্রণালয়কে। যেকোন কাজের ‘প্রগ্রেস ট্র্যাক’ করার অনেকগুলো ঝামেলা রয়েছে বলে উন্নতদেশগুলো একটা ‘রিসার্চ মেকানিজম’ বের করে নেয় আগে থেকে। নীতিমালার কাজ শুরু হয়ে গেলে পাল্টে যেতে থাকবে অনেকগুলো ‘ভ্যারিয়াবল’। যেমন, মানুষের ডিজিটাল লিটারেসি অনেকখানি বেড়ে যেতে পারে নীতিমালার ‘প্রজেক্টেড’ সংখ্যা থেকে। মানুষের ইন্টারনেট ব্যাবহারের ‘অ্যাডপশন রেট’ বেড়ে যেতে পারে সময়ের আগেই। আবার অনেকগুলো এজেন্সি ট্র্যাক করতে থাকবে তাদের অংশগুলো। ফলে, এই ‘মাল্টিলেয়ারড’ ফাংশনালিটিতে কার কার কাজ কতটুকু এগোলো সেটা বের করতে দরকার হবে ওই ‘রিসার্চ মেকানিজম’ প্রোগ্রাম। কি ধরনের ‘প্রগ্রেস ট্র্যাক’ হতে পারে এই প্রোগ্রামে? মানুষ কতটুকু সুবিধা নিচ্ছে এই ইন্টারনেটের, কি ধরনের প্রতিবন্ধকতা আটকে দিচ্ছে কাজগুলোকে, ডিজিটাল লিটারেসী বেড়েছে কতটুকু, সাপ্লাই সাইডের প্যারামিটারগুলোর কি অবস্থা, নেটওয়ার্ক তৈরির গতি কেমন, ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে জিনিসগুলোর মাপার একক ‘ইউনিভার্সাল’ না হলে বিপদে পড়বে অন্যান্য এজেন্সিগুলো। কারণ, সব এজেন্সির জবাবদিহিতার প্যারামিটার এক নয়।

ঘ॰ ব্রডব্যান্ড নীতিমালাকে অনেক লম্বা সময় নিয়ে কাজ করতে হয় বলে এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কঠিন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। একেকটা নীতিমালার পনেরো থেকে বিশ বছরের টাইমলাইন থাকে বলে সেটাকে ঠেলে নেয়ার মতো ‘প্রজ্ঞা’ সরকারগুলোতে থাকে কম। পাঁচ বছর পর পর নতুন সরকার এলেও আগের কাজগুলোকে ধরে রাখলে দেশ অর্জন করতে পারে তার সেই লক্ষ্যমাত্রা। উন্নতদেশগুলোতে এই লম্বা সময় ধরে ‘লেগে থাকা’ ব্যাপারটাই দিয়েছে তাদের সফলতা। সাধারণ মানের ব্রডব্যান্ড নীতিমালা নিয়েও শুধুমাত্র ‘লেগে থাকা’র কারণে উঠে গেছে ওই উন্নয়নশীল দেশগুলো। এদিকে, দুহাজার সালের ‘আইটি বিল’ নিয়ে শুধুমাত্র লেগে থাকার কারণে সাফল্যের চূড়ায় পৌছেছে সুইডেন।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

A dream is a seed.
Vision plants it.
Imagination nurtures growth.
Opportunities create blooms.
Thoughts become things!

― Donna McGoff

৬৪৯.

দেশকে ওপরে ওঠাতে হলে কাজ করতে হবে সব সেক্টর মিলে। ব্রডব্যান্ড হচ্ছে সেটার একটা ‘টুলস’ মাত্র। অথবা, বলতে পারেন নাট বল্টু! দেশের মানুষকে চাইতে হবে বিশ – পঞ্চাশ বছরে কোথায় যেতে চায় সে। বর্তমান অবস্থান থেকে উত্তরনের একটা রোডম্যাপ। ভুলে যান টেকনিক্যাল কথা বার্তা। শিক্ষা,স্বাস্থ্যসেবা, জ্বালানী, চাকরির বাজার তৈরি অথবা ‘সরকারী সার্ভিস ডেলিভারী’ খাত যাই বলুন না কেন, সেটা একটা একটা ধরে ঠিক করতে হবে আগে। তৈরি করতে হবে সেই টার্গেটগুলো। টাইমলাইন সহ। সেই টার্গেটগুলো পূরণ করতে ব্রডব্যান্ডের যে ধরনের নীতিমালা দরকার সেটাই নিয়ে এসেছি এখানে। তবে, সরকারকে নিয়ে আসতে হবে সবাইকে, এক টেবিলে। ইনভেস্টর, প্রাইভেট সেক্টর, টেলিকম ইনডাস্ট্রি সবার মতামত নিয়ে তৈরি হবে ‘হলিস্টিক’ নীতিমালা। তারাই তৈরি করবে ওই ব্রডব্যান্ডের পাইপটা। শুনতে হবে তাদের কথা। তার সাথে বুঝতে হবে ‘সাপ্লাই আর ডিমান্ড সাইডে’র হিসেব। সেটার জন্য থাকতে হবে জ্ঞান – প্রজ্ঞা, সরকারের ভেতর। প্রয়োজনে, অবিভাবক হিসেবে সরকারকে নামতে হতে পারে ‘ক্যারট এণ্ড স্টিক’ খেলায়। উন্নতদেশগুলোতে প্রথম দিকে দরকার হয়েছে সেগুলো। খালি বকবেন, হবে না সেটা। সমস্যার সমাধান তৈরি করে দিতে হবে তাদেরকে। শাসন করা তাকেই সাজে, সোহাগ করে যে।

৬৫০.

সামরিক বাহিনীতে চাকরির সুবাদে সব যায়গায় ‘চেকলিস্ট’ ধারনাটা ঢুকে গেছে রক্তে। প্রায় কাজে তৈরি করতাম একেকটা চেকলিস্ট। সেটার একটা চেষ্টা করা হয়েছে এখানে। লিস্টটার পরিবর্ধন, পরিমার্জন হবে সময়ের সাথে। যেহেতু সরকারী ‘রোলে’ ছিলাম সাত সাতটা বছর, সেকারণে ‘সরকারী’ কার্যপরিধি নিয়েই বইটা। বিভিন্ন দেশের ‘বেস্ট প্র্যাকটিস’ নয়, বরং বাংলাদেশে কি কি জিনিস কাজ করবে সেটাই তুলে আনা হয়েছে বাস্তব ‘অভিজ্ঞতা’ থেকে। তবে, কোন কোন দেশে কি কাজ করেছে আর কি কাজ করেনি সেটা জানা জরুরী। আগেই বলেছি, প্রাইভেট সেক্টরের গতির ওপর লাগাম না ধরে সেটা দেশের প্রবৃদ্ধিতে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেটাই ‘বিজ্ঞান’ এখানে। আমরা ‘রকেট সায়েন্স’ নিয়ে আলোচনা না করে ইন্টারনেটকে সারা দেশে কিভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায়, কীওয়ার্ড ‘সস্তায়’, সেখানে সরকার কিভাবে এগোবে সেটাকে ভাগ করে ফেলবো মাত্র চার চারটা ভাগে। পৃথিবীব্যাপী যখন সরকারী কোম্পানীগুলোর অবস্থা তথৈবচ, তখন সরকার সরে যাচ্ছে ব্যবসা থেকে – নিজে নিজেই। বরং, স্বীকার করতে বাঁধা নেই প্রাইভেট সেক্টর এখানে তুখোড়। ফলে, সরকার ফিরে গেল নীতিমালা তৈরিতে, ‘কিভাবে ব্যবসা চালাবে এই প্রাইভেট সেক্টর?’ কিভাবে দেখবে গ্রাহকস্বার্থ। নীতিমালাগুলো হবে কিছুটা ‘লাইট হ্যান্ডেড রেগুলেশন’এর ধারণায়। বেশি চাপচাপি করলে দেশ হারাবে ‘উদ্ভাবনা’। দ্বিতীয় কীওয়ার্ড হচ্ছে এটা।

৬৫১.

চারটা ভাগ কি হতে পারে সরকারী কাজে? ক॰ প্রাসঙ্গিক নীতিমালা প্রণয়ন আর পরিমার্জন খ॰ ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যে’র মতো ‘সবার জন্য ইন্টারনেট মানে যোগাযোগ’ নীতিমালা প্রণয়ন। উন্নত বিশ্বে এটাকে বলে ‘ইউনিভার্সাল অ্যাক্সেস’। সরকার যা করবে, করবে সবার জন্য। গ্রামের মানুষদের কি দোষ? গ॰ প্রাইভেট সেক্টরকে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক তৈরি করার যা যা ‘প্রণোদনা’ দরকার সেটা দেয়া ঘ॰ ইন্টারনেটের চাহিদা এবং এর ‘অ্যাডপশন রেট’ বাড়ানোর জন্য ডিমান্ড সাইডের নীতিমালা প্রণয়ন করা।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

I guess it comes down to a simple choice, really. Get busy living or get busy dying.

– Andy, Shawshank Redemption

৭০.

স্টিফেন কিংয়ের সব বই পড়িনি ইচ্ছা করেই। এক, সময় কম। ভৌতিক অথবা ‘সুপার ন্যাচারাল’ জিনিস খুব একটা টানে না আমাকে। ফ্যান্টাসি, সেটা চলে মাঝে মধ্যে। আর ‘ফ্যান্টাসি’ ছাড়া আছে কি দুনিয়ায়? তবে এই লোকটাকে পছন্দ অন্য কারণে। ওর ছোট গল্পগুলো আটকে ফেলে আমাকে। তবে, সবচেয়ে টেনেছে ‘অন রাইটিং’ বইটা। যারাই লেখাজোকা করেন – তারা পড়েছেন বইটা। আমি কি করি সেটা না জানলেও পড়েছি বইটা। বার কয়েক। কেনই বা তার লেখালেখি ‘হরর’ অথবা ‘সুপার ন্যাচারাল’ জিনিসপত্র নিয়ে? সঙ্গত প্রশ্ন। গল্প আছে, খুব ছোটবেলায় উনি খুব কাছে থেকে মৃত্যু দেখেছিলেন তার এক বন্ধুর। ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গিয়েছিলো ওই বাচ্চাটা। দুজনে খেলতে গিয়েছিলো একসাথে।

৭১.

‘ক্যারি’ বইটা হাতে পড়ে অনেক আগেই। প্রথম দিকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে। স্কুলের লাইব্রেরীতে। জর্জিয়া’র একটা গ্রামে থাকতাম বলে যাই পেতাম হাতের কাছে, পড়তাম তাই। ভৌতিক হলেও লেখার স্টাইলটা ভালো হবার কারণে টেনেছিল বইটা। এরপর এর ‘মুভি অ্যাডাপ্টেশন’ হয়েছিল দু দুবার। শেষটা বের হয়েছে গত বছর। ভয়ের ছবি কিন্তু! ওই দেশের স্কুলে মাঝে মধ্যেই ‘ব্যান’ করা হয় বইটা। ভীতিকর বলেই। অনেকগুলো বড় বড় চরিত্রের মৃত্যু দেখানো হয়েছে বইটাতে। প্রতিশোধের গল্প – পরতে পরতে।

৭২.

‘সসাংক রিডেম্পশন’ মুভির বইটার নাম ছিলো আরেকটু বড়। বই বাদ, আমরা আলাপ করছি সাউন্ডট্র্যাকের ‘স্কোর’ নিয়ে। তবে, মুভিতে টিম রবিন্স আর মর্গান ফ্রীম্যান থাকলে আর লাগে কি? ‘অ্যান্ডি’ মানে রবিন্স ‘দু জনমে’র সাজা পায় স্ত্রী আর তার প্রেমিককে মারার জন্য। তবে, অ্যান্ডি সবসময় বলে আসছে সে নিরপরাধ। এখানে ‘রেড’ হচ্ছে ফ্রীম্যান। আর অ্যান্ডি অনেক ঘটনার পর কাজ পায় লাইব্রেরীতে। সাহায্য করতে হবে ব্রূককে, ফাইনান্সিয়াল ব্যপারে। ও আচ্ছা, বলাই হয়নি। অ্যান্ডি ছিলো ব্যাংকার। একসময় ‘প্যারোলে’ মুক্তি পায় ব্রূক। তবে, পঞ্চাশ বছর জেল হাজতে থাকার পর বাইরের পরিবেশের সাথে মানাতে পারেনি ব্রূক নিজেকে। আত্মহত্যা করে সে। তখনই শুরু হয় এই ‘কিউ’টা। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দর্শকের হৃদয় এই ‘ব্রূক ওয়াজ হিয়ার’ স্কোরে। ব্রুক ঝুলে থাকতে থাকতে সরতে থাকে ক্যামেরাটা।

নাম বলতে হবে কম্পোজারের?

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

He dotes on you. You don’t see it.

– The Firm, ‘Road to Perdition’ soundtrack

৬৬.

টম হ্যাঙ্কসের মুভি নিয়ে বাছবিচার করতাম আগে, এখন করি না আর। মুভি করেন না বেশি, তবে যা করেন ভালো করে করেন। ‘ব্যক্তি’ টম হ্যাঙ্কস ফ্যানদের কাছেও বেশ জনপ্রিয় তার ব্যবহারের জন্য। মানুষ হিসেবেও ভালো সে। ভালো খারাপ মানুষ নিয়ে মাথা ঘামচ্ছি কেন? আসলে, সাফল্যের চূড়ায় পৌছালে মাথা ঠিক রাখতে পারেন না অনেকেই। সে হিসেবে বলছিলাম আর কি। তবে, মানুষ ভালো না খারাপ, সেজন্য দেখিনি এটা। ‘ফরেস্ট গাম্প’এর সাথে তুলনা করা যায় এরকম একটা মুভি খুজছিলাম মনে মনে। মুভিটা দেখতে দেখতে মনে পড়ছিল ‘হ্যামলেট’ স্টাইলের প্লটের কথা। অথবা, কিছুটা ব্লেণ্ডিং আছে হয়তোবা ‘সফোক্লিসে’র সাথে।

৬৭.

বাবা হয়েছি নিজে – চোদ্দ বছর আগে। সৃষ্টিকর্তার তৈরি করা এই ‘বন্ধন’ (বন্ধন, নাকি … আর কি বলবো, বলবেন নাকি কাছাকাছি একটা সমার্থক শব্দ?) পাল্টে দেয় মানুষকে। স্নেহের ছোট্ট ‘মাংসপিন্ড’টা কিভাবে বড় হচ্ছে চোখের সামনে – সেটা বলে দিতে হয় না বুঝিয়ে। হাসি আমি। হোয়াট ইজ ইট লাইক টু বি আ ফাদার? উত্তর আমার, ওয়েট ফর ইয়োর টার্ন, বাডি! এখন বুঝি নিজের বাবা মা তাকাতেন কিভাবে আমাদের দিকে। স্নেহ ঝরে পড়তো আমাদের ওপর। আগে বুঝতাম না, বুঝি এখন। কারণ? নিজে যে তাকাই ওদের দিকে? স্নেহ ঝরিয়ে। তবে, বুঝবে না সেটা ওরা। দে উইল বি অ্যাজ রেবেলিয়ান অ্যাজ আওয়ারসেল্ভস! না বোঝাই ভালো।

৬৮.

তিন বাবা – সন্তানের গল্প হচ্ছে গিয়ে এই ‘রোড টু প্রেডিশন’। দুটো হচ্ছে সত্যিকারের দুই বাবা, আরেকটা ইমোশনাল। ভাড়াটে খুনে হিসেবে টম হ্যাঙ্কস হারিয়ে ফেলে তার স্ত্রী আর ছোট সন্তানকে। আরেক সন্তানের কারণে ঘটে এই বিপর্যয়। কিন্তু, সন্তানের হাজার দোষ মাফ ওই – বাবার কাছে। সেই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে বেড়ায় হ্যাঙ্কস। এদিকে হ্যাঙ্কসকে ‘খুনে’ হিসেবে বড় করেছে আরেক গডফাদার, যার ছেলে ঘটায় বিপর্যয়টা। মানে, মেরে ফেলে হ্যাঙ্কসের স্ত্রী আর ছোট ছেলেকে। গডফাদার বাবা ছেলেকে বাঁচাতে বিলিয়ে দেয় নিজের জীবন। এই ইমোশনাল পিতা-পুত্রের গল্পটা হচ্ছে হ্যাঙ্কস আর গডফাদারকে নিয়ে। তারা রক্তের সম্পর্কে বাবা ছেলে নয়।

৬৯.

এই পালানোর সময় নতুনভাবে চিনতে পারে পুত্র পিতাকে। হ্যাঙ্কস একবার গুলি খেয়ে আশ্রয় নেয় ফার্ম হাউজে। তখন তাকে সাহায্য করে এক বুড়োবুড়ি। হ্যাঙ্কস কিছুটা সুস্থ হলে বসে একদিন বারান্দায়। ওই ফার্ম হাউজে। ওই সময় কিছু কথা হয় বুড়ির সাথে। তখনই শুরু হয় আমার প্রিয় স্কোরটা। ‘দ্য ফার্ম’। সাউন্ডট্র্যাকের কথা বলছিলাম আর কি! এটারও কম্পোজার ছিলেন থমাস নিউম্যান। শেষের দিকটা আরো ভয়াবহ। পুরোটা বলে দিলে রাগ করবেন আপনারা। হ্যাঙ্কস মারা যায় শেষে। মুভিটা দেখা ওই ‘পিতাপুত্রে’র গল্পের জন্য। আর অর্কেস্ট্রার সাউন্ডট্র্যাকগুলো অতুলনীয়।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

A painter paints his pictures on canvas. But musicians paint their pictures on silence.

– Leopold Stowoski

৬৩.

মাছের কান্না! সেটাও দেখতে হলো বাচ্চাদের সাথে বসে। বাচ্চাদের সাথে বসে বিশ্বাস করেছি সেটাও। মুভিটা দেখলে বলবেন আপনিও। এখন ওদের বিশ্বাস ভাঙ্গাবে কে বলেন? আপনি? তাও, বাচ্চাদের সামনে? তো, চেষ্টা করুন গিয়ে! মাছের কান্না তো দূরের কথা, মুখস্ত হয়ে গেলো মাছের মুখের হাজারো অভিব্যক্তি। তাও ভালো, ডিজনী খুঁজে নিয়েছে ক্লাউন ফিশ। কি বললেন? বুড়োরা দেখে নাকি ডিজনী মুভি? বলেন কি? আমি তো জানি, ওরা তো দেখে বেশি বেশি। মনে হয়ে যায় নিজেদের হারানো দিনের কথা। হয়তোবা। বউ বাচ্চা নিয়ে মুভি দেখতে জুড়ি নেই এই ডিজনীর। এর সাথে ‘পিক্সার’ যোগ হলে উপায় থাকে না আর না দেখে। আর অ্যানিমেটেড মুভি কোথায় চলে গেছে সেটা দেখতে হলে বসতে হবে হালের কিছু মুভি নিয়ে।

৬৪.

ফাইণ্ডিং নিমো’র শুরুর দৃশ্যেই খারাপ হয়ে গেল মন। হতচ্ছাড়া বারাকুডাটা মেরে ফেললো নিমো’র মাকে। মার্লিন, নিমো’র বাবাটা যে কি কাদলো ‘ক্যারল’কে হারিয়ে। ওর মাকে খুঁজতে খুঁজতে পেল তাদের ডিমটাকে। ডিমটাকে তার ফিন দিয়ে বুকে টেনে নিতেই চালু হয়ে গেল মুভির টাইটেল। মানে শুরু হলো মুভিটা। খারাপ লাগানোটাকে আরো ত্বরান্বিত করলো ‘থীম’ সাউন্ডট্র্যাকটা। অসম্ভব সুন্দর একটা ট্র্যাক। মানুষের শব্দ শোনার ওপরের সীমার দিকের কিছু বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। লাগে না কানে। শুনতে হয় মনোযোগ দিয়ে। ভালো অডিও সিষ্টেম হলে বোঝা যায় এফেক্টটা। সমস্যা একটাই। খুবই ছোট একটা স্কোর। এক মিনিট ষোল সেকেন্ডের। বরাবরের মতো, গুড থিংস কাম ইন স্মল প্যাকেজেস! নিন্দুকেরা বলবেন একটা কথা। এক অ্যানিমেটেড মুভি, তার আবার স্কোর? তবে যারা শুনেছেন, তারাই পাল্টেছেন দল। গ্রেট ব্যারিয়ার রীফের সাগরের তলার সৌন্দর্য্য হাজার গুণে বাড়িয়েছে এই স্কোরগুলো।

৬৫.

মুভি’র ডিরেক্টর ছোটবেলায় প্রায় যেতো ডেন্টিস্টের কাছে। আমার ধারনা, চকলেট খেত মনে হয় বেশি। আমার বাচ্চাদের মতো। আর বাচ্চাদের সাথে ভাগ বসায় স্বাতী। মীমাংসা করতে হয় আমাকে। তবে, ওই ডেন্টিস্টের অফিসের মাছের অ্যাকুরিয়ামটা টানতো বেশি ডিরেক্টর সাহেবকে – ওই ছোট বেলায়। তার মনে হতো – মাছগুলো মনে হয় যেতে চায় তাদের বাসায়, মানে ওই সাগরে। সেভাবেই তৈরি হলো এই অসাধারণ মুভিটা। আমাদের হৃদয়কে তছনছ করার জন্য যোগ দিলেন আমাদের গুরু ‘থমাস নিউম্যান’। পরে সেটা গ্র্যামী অ্যাওয়ার্ডে নমিনেশনও পেল অরিজিনাল সাউন্ড ট্র্যাক হিসেবে। সেই সাথে আমার লিস্টে যোগ দিলো ‘নিমো এগ’ চোদ্দ নম্বরে। শোনার সুবিধার জন্য দেয়া হলো এক্সটেন্ডেড ভার্সনটা, মানে লম্বা করা হয়েছে টেনে।

হেডফোন লাগিয়ে শুনবেন নাকি একবার?

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

When you see something from afar, you develop a fantasy. But when you see it up close, 9 times out of 10, you wish you hadn’t.

– Matthew, @Wicker Park

৬০.

মুভিতে সাউন্ডট্র্যাকগুলো মানুষের মানসিক অবস্থা নিয়ে এমনভাবে খেলে, সেটার শিকার হই আমাদের মতো ‘নিরীহ’ দর্শকরা। আগেও ছিলো, বর্তমানে এটার অবস্থা ভয়াবহ। আমাদের মনে ‘লাস্টিং ইম্প্রেশন’ রাখার জন্য অর্কেস্ট্রার ওঠা নামা, কানে ধরে ওঠায় নামায় আমাদেরকে। মুভি থিয়েটারে ‘স্টেট অফ আর্ট’ সাউন্ড সিস্টেমস থাকলে তো আরো খারাপ অবস্থা। ‘উইকার পার্ক’ দেখতে গিয়েই নাস্তানাবুদ ওই সান ফ্রান্সিসকো’র এক সিনেপ্লেক্সে। নাম পার্ক দিয়ে, তবে মুভি একটা এটা। নাস্তানাবুদ হবার কারণ, ছবিটার আগা মাথা পাচ্ছিলাম না – প্রথম দিকে। মুভি’র একটা ধর্ম হচ্ছে মানুষকে বিভ্রান্ত করা, সেটাতে সফল এই মুভিটা। আবার, ছাড়তেও পারছিলাম না, ‘কি বুঝতে পারছিলাম না’, সেটা বুঝতে গিয়ে বসে থাকলাম আরো কিছুক্ষণ। বাদই দিলাম পয়সা দিয়ে টিকেট কাটার কথা। গল্পের বইয়ের প্লটে ‘টুইস্ট’ এণ্ড ‘টার্ন’ থাকাটাই স্বাভাবিক, এখানে মনে হলো এটার পরিমাণ একটু বেশি।

৬১.

আরেকটা কথা রাখি বলে। আগে ভাগে। ফ্রেঞ্চ মুভি দেখতে বসলে এধরনের কিছু ব্যাপার হয় বটে। মানে বুঝতে বুঝতে অর্ধেক সিনেমা পার। পরের ঘটনা আরো মারাত্বক। শুনলাম, মুভিটা উনিশশো ছিয়ানব্বইয়ের ফ্রেঞ্চ মুভি ‘লা’পার্টমেন্ট’এর রিমেক। দেখেছিলাম পরে ওটাও, মেলানোর জন্য। মিল পাইনি আমি। নিম্ন বুদ্ধিবৃত্তির প্রাণী হলে যা হয় আরকি। মুভির প্লট জানতে চাইলে বলাটা দুষ্কর। মুভিটা দেখতে চেয়েছিলাম কেন? ডায়ান ক্রুগারের জন্য। এই জার্মান অভিনেত্রী ছিলেন ‘ট্রয়’ মুভিটাতে। আরেক অভিনেত্রী অস্ট্রেলিয়ান। যাই দেখলাম মুভিটাতে, মন খারাপ হতে থাকলো শেষের দিকে। অনেকগুলো দৃশ্যে নেই কোন কথাবার্তা, ‘সো মাচ লেফট আনসে(ই)ড’। সেটাই বিপদ।

৬২.

ভুলে যেতাম এই মুভিটাও, অন্য অনেক মুভির মতো। তবে, আটকে রেখেছে একটা সাউন্ডট্র্যাকের স্কোর। সাউন্ডট্র্যাকটা দিয়ে বুঝে নিয়েছিলাম অনেক কিছু। নায়ক অপেক্ষা করতে থাকে উইকার পার্কে। নায়িকার জন্য। তখনই শুরু হয় এই স্কোরটা। অসাধারণ। স্কোরটা তৈরি করেছে একটা স্কটিশ ব্যান্ড। নামও অদ্ভুদ। ‘মগাই’। গান গায় না তারা। ইন্স্ট্রুমেণ্টাল সবই। স্কোরটা দৃশ্যের সাথে এমন মানানসই, মনে হবে স্কোরটা তৈরি করা হয়েছে ওই দৃশ্যটারই জন্য। স্কোরটার নামটাও পাগল পাগল। আই নো ইউ আর, বাট হোয়াট অ্যাম আই। আপনারা কি ভাবছেন জানি না, তবে দেখতে পারেন মুভিটা। বকতে পারবেন না পরে, কারণ বাকি সাউন্ডট্র্যাকগুলোও সুন্দর।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

It takes backbone to lead the life you want, Frank.

– April Wheeler @Revolutionary Road

৫৭.

‘টাইটানিক’ মুভিটা পছন্দ হয়নি। ভুল বললাম বোধহয়। বলতে হবে, পছন্দ হয়নি ‘অতটা’। আর যাই হোক আপনাদের রাগাতে চাইছি না এমুহুর্তে। আপনি রাগলে তো নট নড়ন-চড়ন। পড়া বন্ধ এখানেই। আমি জানি না – তবে কি লজিক কাজ করেছে এই মুভিটার ব্যপারে সেটা কিছুটা গবেষনার বিষয়। প্রথমত: বিগ বাজেটের মুভি নিয়ে বিতর্ক আছে আমার মনে। সেটার গল্পের মুন্সিয়ানার চেয়ে ‘সেট’ তৈরি অথবা কম্পিউটার গ্রাফিক্সে ইনভেস্টমেন্ট থাকে বেশি। ভুলও হতে পারে ধারনাটা। তবে কেট উইনস্লেটকে দেখে আসছি অনেক আগে থেকে। এই মুভিটাতে তাকে ‘ফ্ল্যাসি’ মনে হয়েছে বেশি। কেট হচ্ছে গিয়ে ‘গার্ল নেক্সট ডোর’। অন্য ছবিগুলো দেখে মনে হয়েছে তাই। তাকে ভালো লেগেছে বরং ‘ইটারনাল সানশাইন …’ মুভিটাতে। সত্যি বলেছেন! পাগল কিছিমের মুভি একটা।

৫৮.

মুভিটা কোথায় দেখেছিলাম সেটা মনে আছে দিব্যি। এখনো। আর সেটা সম্ভব হয়েছে ‘এন্ড টাইটেল’ স্কোরটার কারণে। মুভিটা শেষ হবার অনেক পরেও বসে ছিলাম মুভি থিয়েটারে। টাইটানিকের পর লিয়োনার্দোর সাথে আর কোন মুভিতে আসেনি কেট। হয়তোবা ‘টাইপড’ হবার ভয়ে। তবে এই মুভিটা পুরোপুরি রোমান্টিক না হবার কারণে নিজে থেকেই আগ্রহী হয় কেট। বিশেষ করে, রিচার্ড ইয়েটসের বইটার অ্যাডাপ্টেশনে। বইয়ের নামেই হয়েছে সিনেমাটা। বিয়ে হবার পর যে বাড়িতে উঠেছিল সেই রাস্তাটার নামটাই ‘রেভোল্যুশনারী রোড’। বিয়োগান্ত এই মুভিটাতে ‘কেট’ মারা যায় শেষে। তবে সেই ঘটনাটা খুব কষ্টের।

৫৯.

কষ্টের বলেই ‘রুট টুয়েল্ভ’টা কানে লেগে আছে এখনো। কেটের শরীর থেকে ফোটা ফোটা রক্ত পড়ছিল, তখনি মনে হচ্ছিল খারাপ কিছু হবে একটা। ‘পার্ফেক্ট ম্যারেজ’টা বিষিয়ে যায় কিভাবে সেটা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না মোটেই। আর সেকারণেই খারাপ লাগাটা। গল্পের ‘টুইস্ট’টা শেষের দিকে যেদিকে মোড় নেয় সেটার ব্যপারে অধিকাংশ মানুষ দ্বিধায় ছিলো। ছিলাম আমিও। তবে ঘটনাটা বাস্তবতার সাথে মেলে বলে মুভিটা দেখেছে মানুষ। সপ্তাহখানেক খারাপ ছিলো মনটা। এটার কম্পোজার ছিলেন নামকরা ‘থমাস নিউম্যান’। পাগল করা স্কোর লিখতে ওস্তাদ উনি। এটার শুরুর পিয়ানোটা অন্য ধরনের।

বোকারাই মন খারাপ করে – মুভি দেখে।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

In Memory of those who made the ultimate sacrifice so others could reach the stars.

– Apollo 1 Plaque at Launch Complex-34

৫৪.

তিন মাস বয়স ছিলো ওর। আর্শিয়ার কথা বলছিলাম। তেরো বছর আগের কথা। ‘ডিউটি কল’। চলে যেতে হলো বেশ লম্বা সময়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা সামরিক বেসে। কম্যুনিকেশন ট্রেনিং। অনেক ঘুরপাক খেয়ে পৌছালামও থ্যাংকসগিভিংয়ের ছুটির আগের দিন। এরপর কিভাবে যেন পড়ে গেছে লম্বা উইকএন্ড! কাউকে চিনি না, তার ওপর টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে সবাই হাওয়া। আমাকে যিনি এয়ারপোর্ট থেকে তুলেছিলেন তিনিই অ্যাপার্টমেন্টে নামানোর আগে দেখিয়ে দিয়েছিলেন আশেপাশের কিছু খাবারের দোকান আর ‘পিএক্স’। সামরিক বেসে এই ‘পিএক্সে’ পাওয়া যায় সবকিছু। রূমে ফিরতেই মনে হলো কেন আসলাম এই দেশে। কান্নায় ভেঙে পড়লাম আর্শিয়ার কথা ভেবে। প্রথম সন্তান। ও হ্যা, কান টানলে আসে মাথা। আর্শিয়ার মা’র জন্য বূক ফাঁকা হয়ে আছে সেই সিংগাপুর থেকেই।

৫৫.

কেপ ক্যানাভেরালের চৌত্রিশ নম্বর পুরোনো লঞ্চ সাইটে ছোট একটা ‘প্লাক’ পড়বে চোখে। খোদাই করা ওই লেখাটা ভিজিয়ে দেবে যে কারো চোখ। প্রায় পয়তাল্লিশ বছর আগে এই লঞ্চসাইটে জীবন দিয়েছিলেন তিন নভোচারী, অ্যাপোলো-১এর ঘটনায়। অনেকের মনে আছে – আর্মাগেডন মুভিটাতেও দেখিয়েছিলো ওই প্লাকটা। আমি আজো বুঝি না ‘ট্রান্সফরমার’ ব্যবসা করে বিলিয়ন ডলারের, ‘আর্মাগেডন’ নয় কেন? মানুষের মনের ওপর তো হাত নেই কারো। কে কোন মুভি দেখবে সেটা তার বিষয়। তবে মুভিটা মনে আছে দুটো কারণে। দুটোই বাবা আর মেয়ের মিলনের দৃশ্যের ওপর। বাবা হ্যারি আমার মতোই উড়নচণ্ডী। মেয়ে গ্রেস হচ্ছে সেইরকম – যার ওপর নির্ভর করা যায় প্রতি পদে। কেপ ক্যানাভেরালের ওই লঞ্চ সাইটেই কথা হয় মেয়ে বাবার সাথে। প্রথম দিকে। তখনি শুরু হয় দুই নম্বর ‘কিউ’।

৫৬.

বুঝতেই পারছেন স্কোরটার নাম হচ্ছে ‘হ্যারি এণ্ড গ্রেস মেক পিস’। এক কথায়, ভেরি শর্ট এণ্ড সুইট! মেইন থীমের কাজটাকে ছোট করে অ্যাকোষ্টিক গিটারে তোলা। সঙ্গে রয়েছে ব্যাকগ্রাউন্ড স্ট্রিংয়ের চমত্কার কাজ। কম্পোজার ট্রেভর রবিনের ‘ওয়ান অফ দ্য বেস্ট’ না হলেও আমার লাগে ভালোই। ১৪ সেকেন্ড থেকে গলতে শুরু করে মন আমার। আর্শিয়ার কথা মনে পড়ে এক মিনিট চার সেকেন্ড থেকে।

ভাগ্যবানদের নাকি প্রথম সন্তান হয় মেয়ে?

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

Older Posts »