Knowledge is the new capital, but it’s worthless unless it’s accessible, communicated, and enhanced.
— Hamilton Beazley, Strategic Leadership Group
Some people drink deeply from the fountain of knowledge. Others just gargle.
— Bright, Grant M
২৪৫.
শ্রীলঙ্কার রেগুলেটরের একটা উদ্যোগ মুগ্ধ করেছিল আমাকে – বছর কয়েক আগে। উদ্যোগটা ছিল ব্রডব্যান্ড স্পিড নিয়ে। ব্যবহারকারীরা তাদের কেনা ব্যান্ডউইডথ প্রতিশ্রুতি মতো পাচ্ছেন কিনা সেটা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগটা নেয়া। ভালো উদ্যোগ। আর সেকারণেই ইন্টারনেটের আসল গতি বের করার জন্য সার্ভার দুটোর লোকেশন রেখেছিলো দেশের বাইরে। দেশের ভেতরে ইন্টারনেটের গতি ভালো পেলেও বাইরেরটা নিয়ে শঙ্কা থাকে বেশি। আপনার প্রোভাইডার প্রয়োজন মতো ইন্টারন্যাশনাল আইপি ট্রানজিট [ব্যান্ডউইডথ] না কিনলে ওই সমস্যাটা হতে পারে।
শ্রীলংকা? আপনার প্রশ্ন।
২৪৬.
আমাদের রিজিয়নে দুহাজার ছয়েই থ্রীজি লাইসেন্স দিয়েছিলো শ্রীলংকা। আর সেকারণে এখানে ওদের কাজ হয়েছে কিছুটা বেশি। ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ডের ‘কোয়ালিটি অফ সার্ভিস’ নিয়ে ভালো কাজ হয়েছে তাদের। অপারেটরদের মধ্যে থ্রীজি সার্ভিসের ওপর বেঞ্চমার্কিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছে তাদের সাইটে। তবে দুহাজার ছয় থেকে আজ পর্যন্ত হিসেব করলে বেশি পিছিয়ে নেই আমরাও। কাভারেজ বাড়ছে আমাদের। বিশেষ করে থ্রীজির। বসে নেই কেউই। দ্রুততম সময়ে বাড়ছে এর সীমানা। লাইসেন্স পাবার পরদিন থেকেই শুরু হয়েছে তাদের কাজ। নতুন স্পেকট্রাম প্ল্যানিং, রেডিও টিউনিং – বিটিএসে ফাইবার ব্যাকহল সংযোগ দেয়া; অনেক কাজ। লোকাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ পীয়ারিংয়ের কাজও এগুচ্ছে। থ্রীজিতে লোকাল কনটেন্ট বাড়তে বাধ্য। গুগলের লোকাল ক্যাশে ইঞ্জিনের অনেকগুলোই বসেছে দেশের ভেতরে। লক্ষণ ভালো।
২৪৭.
আমার গল্প অন্যখানে। অন্যদেশের রেগুলেটরদের খোঁজ খবর নেয়া আমার অভ্যেসে দাঁড়িয়েছে। ভালো অভ্যাস কি? ছেড়ে দিলাম আপনার ওপর। আবার, আমার দেশী হ্যান্ডসেটের ওপর বিভিন্ন এপ্লিকেশন চেখে দেখার বদঅভ্যাসটাও ত্যাগ করতে পারছি না। মার্কিন ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি) একটা অ্যাপ তৈরী করে ছেড়েছে গুগলপ্লে স্টোরে। মোবাইল ব্রডব্যান্ডের গতি আর তার পারফরমেন্স চেখে দেখার জন্য গ্রাহকের জন্য তৈরী করে দিয়েছে ছোট্ট একটা অ্যাপ। ভোক্তা পর্যায়ে মোবাইল ব্রডব্যান্ডের গতি নিয়ে কাজ চলছে ওদের ন্যাশনাল ব্রডব্যান্ড প্ল্যান বের হবার পর থেকেই। ওখানে একটা সুপারিশও ছিলো ওটার ওপর ভিত্তি করে। ভুল বুঝবেন না, ব্রডব্যান্ড গতির পরিমাপের জন্য আগে থেকেই এফসিসি’র সাইটে একটা টুল রয়েছে। এই মোবাইল অ্যাপটা একটু ভিন্ন ধাঁচের।
২৪৮.
আমেরিকার সমস্যা অন্যখানে। বিশাল মহাদেশ। আবার মানুষও অনেক কম। ওদের সেলুলার টেলিকমিউনিকেশনস এন্ড ইন্টারনেট এসোসিয়েশনের হিসেব অনুযায়ী তিরিশটার বেশি ফ্যাসিলিটি বেসড অপারেটর রয়েছে। ফ্যাসিলিটি বেসড অপারেটর মানে ওদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে মার্কিন মুল্লুকে। আবার তার বড় বড় চারটা অপারেটরের ঘাড়ে ভর করে পঞ্চাশটার বেশি ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো কাজ করছে ওখানে। কাভারেজ তৈরী করা হচ্ছে ওদের বড় সমস্যা। মাইলের পর মাইল মানুষ না থাকলেও সেটার জন্য কাভারেজ তৈরী করতে তাদের বিজনেস প্ল্যান ‘অফসেট’ হয়ে যায়। ‘কমপ্লায়ান্স’ কস্ট অনেক বেশি। বাংলাদেশের কথা ভিন্ন। সর্বোচ্চ ঘনবসতির দেশগুলোর মধ্যে একটা। আর সেকারণে আমাদের ফোনকলের দাম কম।
২৪৯.
ফিরে আসি অ্যাপে। কেমন হয় এরকম একটা অ্যাপ থাকলে? আমাদের জন্য তৈরী? মজার কথা হচ্ছে এর সোর্সকোডও দেয়া আছে সফটওয়্যার কলাবোরেশন সাইট গিটহাবে। যারা টেকনিক্যালি বুঝতে চান, তাদেরকেও নিরাশ করেননি তারা। পুরো গল্পটা দেয়া আছে এফসিসি’র সাইটে।
ধারণা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন সবাই। সোর্সকোডটা দেখে ডেভেলপাররা ধারণা দেবেন কি?
পরবর্তী পড়াশোনা:
ক. শ্রীলঙ্কার মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিমাপ সাইট
খ. শ্রীলঙ্কার রেগুলেটরের দুহাজার বারোর একটা প্রেজেন্টেশন (যাদের সময় কম, তাদের জন্য বুকমার্ক – স্লাইড নয়)
গ. এফসিসি’র মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিমাপের অ্যাপ, গুগল প্লেতেও রয়েছে সেটা
ঘ. এফসিসি’র মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিমাপের টেকনিক্যাল গল্প
ঙ. গিটহাবে এফসিসি’র মোবাইল ব্রডব্যান্ড অ্যাপের সোর্সকোড