Feeds:
Posts
Comments

Archive for the ‘ইন্টারনেটের দাম’ Category

আজকে আবার কিসের দিন? মানে, এই তেইশে অগাস্ট। অনেকে লিখেছেন আজকে।

হ্যাঁ, ইন্টারনেট ডে। বলেছেন কেউ কেউ।

হুম। সেটাতো অক্টোবরের উনত্রিশে।

তাই তো! ওহো বুঝেছি। তাহলে ‘ইন্টারনট ডে’। নট? মানে খট খট?

সেটা আবার কী?

এটা একটা শব্দের যৌগ। ‘বিশাল’ আর ‘আকার’ যোগ করে হয় বিশালাকার। ওরকম আরকি।

বুঝলাম। তাহলে ‘নট’ আসলো কোথা থেকে?

ওটা এসেছে ‘অ্যাস্ট্রোনাট’ থেকে। ইন্টারনেট থেকে ‘ইন্টার’ আর অ্যাস্ট্রোনাটের  ‘নট’।

নট কেন? হবে তো নাট? আপনার প্রশ্ন।

আসলে ‘নাট’ বললে এসে যায় অন্যকিছু। মানুষ রাগলে বলে ওই কথা। তাই বাদ সেটা।

মানুষ সারাজীবনই অভিযাত্রী। ভুল বলেছি? পৃথিবী চষে বেড়িয়েছে মানুষ। সত্যের খোঁজে। নতুন কিছু জানতে। উল্টে পাল্টে দেখেছে পৃথিবী। এরপর গিয়েছে চাঁদে। তারপর? আরো, আরো দূরে।

আসলেই তাই! ইন্টারনেট মানুষকে নিয়ে গেছে অনেক অনেক দূরে। জ্ঞান পিপাসার্ত মানুষ বশে নিয়ে এসেছে প্রযুক্তিকে। অভিযাত্রীর মতো সত্যের খোঁজে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করছে এই মানুষ। নিমিষেই চলে যাচ্ছে পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। সেজন্যই এসেছে ‘অ্যাস্ট্রোনাট’ শব্দটা।

০৬ আগস্ট। ১৯৯১ সাল। টিম বারনার্স লী পোস্ট দিলেন নিউজগ্রুপে। বরাবরের মতো। তবে এটা ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব’ নিয়ে একটা প্রজেক্ট নিয়ে। ওহো, বলাই হয়নি ব্যাপারটা। ‘নিউজগ্রুপ’ ছিলো আমাদের মানে প্রস্তরযুগের ফেসবূক। মতামত জানতে সবাই ধারস্ত হতো এই নিউজগ্রুপে। ছিলোও হাজার হাজার গ্রুপ। একেক বিষয় নিয়ে একেকটা গ্রুপ। আমার প্রিয়টা ছিল শর্টওয়েভ নিয়ে।

তবে, ‘ওয়েব’ নয় সেটা। আলাদা অ্যাপ্লিকেশন। ‘এনএনটিপি’। আর উনার গ্রুপটার নাম ছিল অল্ট॰হাইপারটেক্সট!

আজকের দিন মানে ২৩ আগস্ট। খুলে দেয়া হয় সবচেয়ে প্রথম ওয়েবসাইটটা। সবার জন্য।

আর এখন?

ইন্টারনেটের সবচেয়ে ‘সবচেয়ে’ জনপ্রিয় জিনিস হচ্ছে এই ওয়েব। আমাদের মতো টেকি(!) লোকদের ভাষায় এটা ‘পোর্ট ৮০’। ‘এইচটিটিপি’। যে যাই বলুক জিনিস কিন্তু একটাই।

সত্যিই তাই। এজন্যই আজকের দিন হচ্ছে ওই ‘ইন্টারনট ডে’!

Read Full Post »

The hungrier one becomes, the clearer one’s mind works— also the more sensitive one becomes to the odors of food.

George S. Clason, The Richest Man in Babylon

ইন্টারনেট নিয়ে আমার কৌতুহল ওই অফলাইন ইন্টারনেট থেকে। নব্বইয়ের সেই “ওয়াইল্ডক্যাট” বুলেটিন বোর্ড সার্ভিস টানে এখনো। অফলাইন পুশ-পুল এফটিপি, এনএনটিপি পোর্ট দিয়ে নিউজ সার্ভিস – দৃক, প্রদেষ্টা, কাইফনেট সব অনেক অনেক আগের জিনিস। একটা কমোডোর ১২৮ নিয়ে খোঁচাখুচির ফল যা হয় আরকি! একটা জিনিস খেয়াল করতাম, ইউইউসিপি (ইউনিক্স টু ইউনিক্স) প্রটোকল দিয়েও সবাই কানেক্ট করতো কাছাকাছি প্রোভাইডারদেরকে। এরপর এলো আসল ইন্টারনেট, আমাদের সব ডাটা যেতো গোটা পৃথিবী জুড়ে। মানে – যুক্তরাষ্ট্র হয়ে!

সেটাও অনেক অনেক দিন। এরপর ঘুরতো সিঙ্গাপুর হয়ে। এখন?

স্যানোগ-৪ ই হবে হয়তোবা, ২০০৫ এর কথা। সুমন ভাইয়ের কাছ থেকে পেয়েছিলাম কিছু ডকুমেন্ট। যেটা বেশি টেনেছিলো – ‘আই-এক্স’, ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ নামের একটা গল্প। তখন কী জানতাম বিটিআরসিতে পোস্টিং হবে ওর দুবছর পর? “আই-আই-জি”, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে লাইসেন্সে অনেকটা মারামারি করে করে ঢুকিয়েছিলাম ‘এক্সচেঞ্জ’ ব্যাপারটা। সুমন ভাইয়ের সাহায্য নিয়ে।

সেটা কাগজে ঢুকলেও বাস্তবে আনতে কষ্ট হচ্ছিলো অনেক। মানে, আই-আই-জি’রা সবাই ডাটা পিয়ারিং করবে দেশের ভেতর। একটা ব্যাপার ঠিক। এটা কিছুটা ব্যবসায়িক স্বার্থেই চলে। জোরাজুরির কিছু নেই। লাইসেন্সিং দরকার নেই। ‘বিডিআইএক্স’ হলো। আইএসপিদের কল্যাণে। মোবাইল অপারেটররা কানেক্ট করছিলো না। নন-লাইসেন্সিং এনটিটিতে কানেক্ট করে কী না কী হয়? এক সময় সেটারও লাইসেন্স এলো।

এখন দেশের ভেতরেই থাকছে প্রচুর ডাটা। বড় বড় ডাউনলোড সার্ভারগুলো ‘ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ’ হয়ে যাচ্ছে একেকটা আইএসপিতে। লাভ অনেক। আইএসপিদের বিদেশী ‘আইপি ট্রানজিট’ কিনতে হচ্ছে কম। আসল কথা হচ্ছে দেশে হোস্টিং বেশি হলে একসময় অন্যদেশ ‘আইপি ট্রানজিট’ কিনবে আমাদের থেকে। ওটা অনেক পরে হলেও একসময় করতে হবে। ব্যালান্স করতে হবে না ট্রাফিক? ধরুন, বিদেশ থেকে কিনলেন ৩০ জিবিপিএস। ওরা যদি সমপরিমাণ নেয় আমাদের থেকে – তাহলে সেটা হবে “সেটলমেন্ট ফ্রী”। কেউ কাউকে পয়সা দেবে না। মানেও হয় না।

অনেক অনেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের একটা গ্রামে থাকার সময় ব্যবহার করতাম ‘ডিএসএল’ সার্ভিস। বেসিক ফোনের সাথে এসেছিলো ওটা। একবার ফোনে সমস্যা হলো, কিন্তু ‘ডিএসএল’ ডাউন হয়নি কখনোই! এখন তো ফোনের ওই কপারলাইন দিয়ে গিগাবিট ইথারনেটও চলছে অনেক জায়গায়। সেটা আরেকদিন!

বিটিসিএলএর ডিএসএল সার্ভিস নিলাম কয়েকদিন আগে। ওর আগে পাড়ার আইএসপি ছিলো বাসায়। পাড়ার আইএসপি’র সার্ভিস ছিলো রকেটের মতো। ‘গুগল ক্যাশে’ ইঞ্জিন থেকে শুরু করে ডাউনলোড সার্ভার, কী নেই তাদের! অনেকের বাসা পর্যন্ত ফাইবার টেনেছে তারা। বিদ্যুত্‍ চমকালেও যাবে না রাউটার। নতুন ‘ডিএসএল’ নেবার পরও ডাউনলোড ম্যানেজারে পুরানো আইএসপি’র একটা লিংক রয়ে গিয়েছিলো কোনো একটা কারণে। পিসি চালু করতেই লিংকটা মুছতে গিয়ে দেখলাম ঢাকা থেকে ঢাকার ওই দুই কিলোমিটার দূরত্বের ট্রাফিক ঘুরে আসছে ওই বিদেশ থেকে। মানে, এখনো যেতে হবে অনেকদূর!

আমার বাসা থেকে দুই আইএসপি’র ট্রাফিকের রাউটিং। এর থেকেও অনেক অনেক কমপ্লেক্স রাউটিং আছে অনেক জায়গায়। আমার কথা একটাই। দেশের ট্রাফিক বিদেশী ডলারের কেনা “আইপি ট্রানজিট” দিয়ে গেলে দাম বাড়বে বৈকি।  ইন্টারনেটের।

[এটা একটা উদাহরণ, কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়, আমরাও শিখছি প্রতিদিন]

1 5 ms 3 ms 2 ms Routing.Home.Inside [192.168.x.x]
2 1615 ms 1675 ms 2003 ms 123.49.x.x
3 1920 ms 1534 ms 1852 ms 123.49.13.x
4 931 ms 995 ms 892 ms 44.44.44.2 [এটা যাচ্ছে স্যান-দিয়াগো, অ্যামেচার রেডিও]
5 1399 ms 1458 ms 1571 ms 123.49.13.82
6 1400 ms 701 ms 729 ms 123.49.1.14 [বিটিসিএলের মধ্যেই অনেকগুলো হপ]
7 1062 ms 1115 ms 1189 ms 121-1-130-114.mango.com.bd [114.130.1.121]
8 1562 ms 1555 ms 1466 ms aes-static-133.195.22.125.airtel.in [125.22.195.133]
9 1456 ms 1536 ms 1591 ms 182.79.222.249 [ভারতে যেয়ে ঘুরে আসছে ট্রাফিক]
10 1878 ms * 1009 ms aes-static-118.1.22.125.airtel.in [125.22.1.118]
11 1479 ms 1605 ms 1444 ms 103-9-112-1.aamratechnologies.com [103.9.112.54]
12 1007 ms 1611 ms 1727 ms 103-9-112-1.aamratechnologies.com [103.9.113.130]
13 1619 ms 1596 ms 1810 ms 103.x.x.x
14 1774 ms 1058 ms 1222 ms x.x.82.x
15 1373 ms 1423 ms 1410 ms site1.myoldisp.com [x.x.28.x]

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

Net neutrality is the founding principle of the internet. It guarantees that all data packets are treated equally. This principle guarantees that the internet will remain diverse, innovative, and free. Telecoms companies want to change that. They want to establish new business models based on discrimination and restrictions. We cannot give up the economic and social value of the internet just to help a handful of companies to make more money.

Act now to tell your representatives to protect our rights and freedoms. The best way to do this is by calling a Member of the European Parliament (MEP). But you can also send them a Fax, a letter or an E-Mail – we provide you with all the information and calling them is free of charge.

– Statement from ‘SaveTheInternet.EU’

EU-save-the-internet১৪.

আমাদের মতো দেশে ‘সংযোগ বিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করবেন সবাই। এই আমাকে। কথা ঠিক আপনার। বিনি পয়সায় দিলে ক্ষতি কি শুনি? নাই মামার থেকে কানা মামা তো ভালো, তাই না? সত্যি তাই। তবে, আসলে কি তাই? ‘জিরো ইন্টারনেট’ ব্যাপারটা বিভ্রান্তিকর। আমাদের বিশাল একটা শতাংশের মানুষ ভাবে, ফেসবুকই ইন্টারনেট। অথচ, ফেসবুকে সত্যের পাশাপাশি চলছে হাজারো গল্প। সত্যি কি সবই? হতাশ হই, বিশাল একটা জনগোষ্ঠী পড়ে আছে এই এক সাইটে। আমরা বড় হচ্ছি ফেসবূককে ‘ইন্টারনেট’ ভেবে। পুরো জনগোষ্ঠীর কতোটা সময় নষ্ট হচ্ছে একটা ফুলপ্রুফ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের অভাবে।

১৫.

কুপের মতো ব্যাপারটা। যা হয়তোবা আসল ইন্টারনেটের ‘শূন্য দশমিক’ কিছু শতাংশ হতে পারে। অথবা নামমাত্র আরো ২৮টা সাইট। বের হতে পারছে না ওই গন্ডি থেকে। সবার কথা একটাই, কয়েকটা সাইটকে এই ‘এক্সক্লুসিভ’ সুযোগ না দিয়ে সবাইকে দিন অ্যাক্সেস। আগের মতো। বরং চার্জ করুন একটা সহনীয় মাত্রায়। আমাদের মধ্যম আয়ের মানুষদের কথা মাথায় রেখে। আজ যা ইন্টারনেট গ্রাহক, তা তৈরি হয়েছে এই ‘অসহনীয়’ চার্জের ভেতরে থেকেই। কমিয়ে দিলে সুবিধা হয় সবার। ‘চ্যারিটি’ করতে বলছে না কেউ।

১৬.

এই ফাঁকে ছোট্ট একটা গল্প পাড়ি, কি বলেন? ‘আসল ইন্টারনেট’ কিন্তু ভয়াবহ রকমের বড়। আমরা যা দেখি, মানে ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন যেগুলোকে খুঁজে পেতে নিয়ে আসে সেটাও কিন্তু আসল ইন্টারনেটের একটা ছোট্ট ছোট্ট ভগ্নাংশ। ওর একটা নাম আছে। ডীপ ওয়েব। ‘ডীপনেট’ বলেন অনেকে। আমরা বলি ‘অদৃশ্য’ অথবা ‘লুকানো’ ইন্টারনেট। সার্চ ইঞ্জিনকে মাছ ধরার জাল হিসেবে তুলনা করে পৃথিবীর সব সমুদ্রকে যেভাবে ছেঁকে আনা সম্ভব নয়, সেভাবে হাজারো জিনিস থেকে যায় আমাদের দৃষ্টির বাইরে। সিকিউরিটি স্পেশ্যালিস্টের মাথা ব্যাথা শুরু ওখানেই।

১৭.

এডওয়ার্ড স্নোডেনের কাগজ ঘাটলে পরিষ্কার হবে আরো। সার্চ ইঞ্জিনের মাতবরী ওই ‘সারফেস’ ওয়েব পর্যন্ত। আইসবার্গের চূড়াটাই হাতের নাগালে তাদের। আচ্ছা, ডীপ ওয়েব মানে ডার্ক ওয়েব – যা তৈরি হাজারো বেনামী নেটওয়ার্ক নিয়ে (ধরুন টর নেটওয়ার্ক, টেইলস, আইটুপি – যেটা নেটওয়ার্কের ভেতরের নেটওয়ার্ক … বেহুস হয়ে যাবার যোগাড়) – কতো বড় হতে পারে আমাদের ‘সারফেস’ ইন্টারনেট থেকে? অনেক আগের একটা এষ্টিমেশন থেকে জানা যায় ‘ডীপ ওয়েব’ নিদেনপক্ষে ৪০০ থেকে ৫৫০ গুণ বড়। তাও সেটা অনেক বছর আগের হিসেব। এখন যোগ হয়েছে আরো অনেক কিছু। ভয় ধরানো পেশা নয় আমার। ফিরে আসি – সাধারণ ইন্টারনেটের ‘অস্তিত্বে’র গল্প নিয়ে।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

In effect, they can become gatekeepers — able to handpick winners and the losers in the market and to favour their own sites, services and platforms over those of others. This would crowd out competition and snuff out innovative new services before they even see the light of day.

– Tim Berners Lee

save7১১.

ফ্রীডম অফ স্পীচ? কি হবে সেটার? বলেন ‘জিনিসপত্র’ যা ইচ্ছা, উত্তর দেবো কথায়। হাতাহাতি নয়। সমস্যা একটা যায়গায়। আমরা কেন জানি গুলিয়ে ফেলি ‘হেট স্পীচ’, ‘ফ্রীডম অফ স্পীচ’এর সাথে। খোঁচাখুচি করেন ভালো কথা, বিদ্বেষ নয়। ‘বিষেদগার’ অন্য জিনিস। আর সবার স্বাধীনতা আছে তার নিজ জিনিস নিয়ে। একটা ঘটনা বলি বরং। কয়েক দিন আগের কথা। পুরো ইন্টারনেট গরম এটা নিয়ে। উন্নত বিশ্বে মহিলারা যে কতো বেশি নিগৃহীত হন সেটার ঘটনা একটা। মহিলা টেলিভিশন রিপোর্টারদের নিয়ে অনেকদিন ধরেই চলছে জিনিসটা। গুগল করুন, ‘এফএইচআরআইটিপি’ দিয়ে। সঙ্গে ‘সিবিসি’ কীওয়ার্ড ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবেন তাহলে। শেষ ঘটনা ‘সিবিসি নিউজ’এর রিপোর্টার শ্যনা হান্টকে নিয়ে।

১২.

লাইভ রিপোর্টারদের চলন্ত ঘটনায় আর যাই হোক না কেন সেটাকে সপ্রতিভভাবে চালিয়ে নেয়ার প্রশিক্ষণ তাদেরকে কাবু না করলেও ব্যাপারটা রীতিমতো কষ্টের। ভিডিও দেখে মনে হলো সেটা। বিশেষ করে মহিলা রিপোর্টারদের। একটা খেলার পর দর্শকদের মতামত নিতে গিয়ে বিপদে পড়েন হান্ট। তবে তার সাহসের তারিফ করি। দর্শক তার ‘বাক স্বাধীনতা’ ব্যবহার করে যা ইচ্ছা তাই বললেও সেটা তার নেটওয়ার্ক ‘নিজস্ব স্বাধীনতা’ ব্যবহার করে ছেড়ে দেয় ইউটিউবে। বিতর্কের ঝড় ওঠে ওই ইউটিউব চ্যানেলে। সেটা ছড়িয়ে পড়ে ‘মেইন স্ট্রিম’ মিডিয়াতে।

১৩.

তারপরের ঘটনাটা আরো মজার। দর্শকদের চাকরিদাতা কোম্পানীও ‘নিজস্ব স্বাধীনতা’ ব্যবহার করে চাকরি খেয়েছে তাদের। একারণে আমার পছন্দ এই ইউটিউব। মানে, ইন্টারনেট। আপনার তথাকথিত ‘স্বাধীনতা’ ব্যবহার করলেই তো আর হবে না। আমারো তো রয়েছে ‘স্বাধীনতা’। আমার স্বাধীনতা এই ইন্টারনেট। আর তাই এই ‘জিরো ইন্টারনেট’ নিয়ে দিচ্ছি এতো গল্প। ইন্টারনেট হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ‘ইকুয়ালাইজার’। দেয় ‘লেভেল প্লেয়িং ফীল্ড’। ভাঙতে দেয়া যায় না একে। তাও আবার এই ‘জিরো ইন্টারনেট’ দিয়ে বৈষম্য তৈরি করে?

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

You can fool some of the people all of the time, and all of the people some of the time, but you can not fool all of the people all of the time.

– Abraham Lincoln

save6০৯.

বুকে হাত দিয়ে বলুনতো আজ ‘ইউটিউব’ বা ‘ফেসবুক’ বাংলাদেশী ইনকরপোরেটেড কোম্পানী হলে বছরে বন্ধ হতো কতো বার? কতো কনটেন্ট মুছে যেতো প্রতিদিন? আমার কথা একটাই। আপনার ভালো না লাগলে ওই সাইটে যাওয়া কেন বার বার? আর, ও মিথ্যে বললে কি উড়ে যাচ্ছে আপনার ‘ঠুনকো’ ইমেজ? ‘রেড লাইট এরিয়া’র মতো প্রতিটা ‘পর্নোসাইট’ বন্ধ করতে উঠে পড়ে লাগেনি পৃথিবী। সময়ের দাম আছে মানুষের। ‘নিষিদ্ধ’ কনটেন্টের সাইটে না যাবার জন্য নিজের ওপর ভরসা নেই কেন আমাদের? কেন সরকারকে বলা – ‘এটা ওইটা বন্ধ করেন’? রাস্তায় নামলেই দুর্ঘটনা হয় বলে ঘরে বসে থাকেন আপনি? আর, ভিন্ন মতাবলম্বী মানুষ থাকবেই। সবার মত তো আর এক হবে না। তাহলে, অন্যের মুখ বন্ধ করতে যাওয়া কেন? ওতো আপনার বাড়া ভাতে ছাই ফেলেনি। আপনার মতের বিরুদ্ধে কথা বলেছে হয়তোবা। এই যা! আর – উত্তরে দাড়া করান আপনার মতামত। এমনও তো হতে পারে সে ঠিক। গ্যালিলিওকেও তো মিথ্যেবাদী বলেছিল মানুষ।

১০.

আর সেকারণে আমার ভয় এই ‘জিরো ইন্টারনেট’ নিয়ে। আজ যা জিরো, সামান্য গুটিকয়েকের জন্য, কাল আপনাকে তারাই ফেলে দিতে পারে ‘স্লো’ জোনে। পরশুদিন ‘নো জোন’। মানে, পাওয়া যাচ্ছে না আপনার সাইট – দেশ থেকে। ‘ইন্টারনেট’ বৈষম্য করেনি কখনো। বৈষম্য তৈরি করে না প্রযুক্তি, তৈরি করি আমরা। মানুষেরা। একে ওকে ‘শূন্য ট্যারিফ’ – আর বাকিদের নয়, সেটাই মূলনীতির বাইরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন পলিসি নিয়ে হাজারো গল্প থাকলেও দেশের ভেতরে এই ‘সহিষ্ণুতা’ তাদেরকে ‘মাতবরী’ করতে দেবে অনেক কটা বছর। সহিষ্ণুতা মানে ‘অন্যের মতামতকে নেবার ক্ষমতা’। কারণ – তারা জানে ভিন্ন মতের মাহত্ব। আর সেকারণে ওই দেশের ফাউন্ডিং ফাদাররা তৈরি করেছিলেন ‘বিল অফ রাইটস’ বলে একটা কাগজ। সাদামাটা কথা। দেখবেন নাকি পড়ে একবার? ওই ১৭৮৭ সালে থমাস জেফারসন কি বলেছিলেন মনে আছে কি? “[A] bill of rights is what the people are entitled to against every government on earth, general or particular, and what no just government should refuse.”

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

There is one Internet. It must be fast, it must be robust, and it must be open. The prospect of a gatekeeper choosing winners and losers on the Internet is unacceptable.

– Tom Wheeler, Chairman – FCC

save5০৭.

ইন্টারনেটে সবকিছু আছে বলেই এখানে সহিষ্ণুতাটা লাগেও বেশি। নব্বইয়ের দিকে ‘ইউজনেট’ ব্যবহার করতে হতো আমাদের। যেকোন সমস্যার জন্য। বিশেষ করে ‘ইউনিক্স’ অপারেটিং সিষ্টেমটা নিয়ে কাজ করার সময়। আমরা জানি ‘সহিষ্ণুতা’র দাম কেমন। আর সেকারণে হাতে কলমে কাজ শিখিয়েছে ওই অপরিচিত ‘বন্ধুসুলভ’ মানুষগুলো। পৃথিবী চষে বেড়ানোর সময় দেখা হয়েছে তাদের অনেকের সাথে। তারা জানেন ইন্টারনেট তৈরি হয়েছে ওই মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে। যারা ইন্টারনেট বোঝেন না তারাই সারাদিন আমাকে (বিটিআরসিতে থাকাকালীন) বলতেন এটা বন্ধ করেন, ওইটা বন্ধ করেন। অথবা, ‘ইউটিউব’ বন্ধ করতে এতো সময় নিচ্ছেন কেন? সত্যি বলতে, আমাদের নীতিনির্ধারণীতে বসে থাকা মানুষগুলোও বন্ধ করতে চাননা সবকিছু। জনপ্রতিনিধিরা থাকেন বিপদে। ‘অসম্ভব’ চাপ তৈরি করেন ‘ইন্টারনেট’ না বোঝা আশেপাশের মানুষজন। এই আমরাই। ‘সূর্যের চেয়ে বালি গরম’এর মতো ব্যাপারটা। ফেসবুকে আমাদের কমেন্ট দেখলে মনে হয় ‘শিষ্ঠাচার’ ১০১ কোর্স দরকার অনেকের। কেন জানি সমালোচনা নিতে পারিনা আমরা। তবে, আশাবাদী আমি। ‘সত্যিকারের শিক্ষা’র সাথে সাথে পাল্টাবে এই ট্রেন্ড।

০৮.

ধরুন, সুন্দরবনে ঘুরতে গিয়েছেন আপনি। একা পেয়ে ‘বাঘমামা’ আঁচড় দিয়ে বসলো আপনাকে। ঢাকায় ফেরত্‍ এসে গরম হয়ে বললেন, আচড় দিলো কেন সে? প্রথম কথা হচ্ছে, আপনার ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে ঢুকে গিয়েছিলেন গহীন বনে। বাঘমামা তার ‘স্বাধীনতা’ ব্যবহার করে আঁচড় দিয়ে দিয়েছে – এই যা! আগুন তো সবকিছু পুড়িয়ে দিতে পারলেও সেটাকে তো আর ‘ব্যান’ করেননি আপনার সুবিধার জন্য। হাজারো হ্যাকিংয়ের ঘটনা চলছে বিশ্ব জুড়ে, কই কেউ তো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নেই বসে। সেটাতো – চোরের ওপর রাগ করে মাটিতে বসে ভাত খাওয়ার মতো। ইন্টারনেটে কে কি বললো, সেটাকে আটকাতে যাওয়া কেন? রাস্তায় তো পাগলও অনেক কিছু বলে, সেটাকে ছাড় দিলে ইন্টারনেটকে নয় কেন? রেগুলেটর হিসেবে অনেক ব্যাপার নিয়ে ‘আলাপ’ করে মধ্যপন্থী অবস্থান নিয়েছিলাম আমার ওই সাত সাতটা বছরে।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

“Net neutrality” has been built into the fabric of the Internet since its creation — but it is also a principle that we cannot take for granted. We cannot allow Internet service providers (ISPs) to restrict the best access or to pick winners and losers in the online marketplace for services and ideas. That is why today, I am asking the Federal Communications Commission (FCC) to answer the call of almost 4 million public comments, and implement the strongest possible rules to protect net neutrality.

Statement by the President Barack Obama on Net Neutrality

save1০৫.

ইন্টারনেট কিন্তু তৈরি হয়নি এজন্য। এতোদিন আপনি অপারেটর ‘ক’ তে থাকলেই কল করতে পারতেন ‘হেলথকেয়ার’ কলসেন্টারে। অপারেটর ‘খ’য়ের গ্রাহকদের কি দোষ? ‘কৃষি জিজ্ঞাসা’তে কল করতে পাল্টাতে হবে সিম আবার। ওই সিমের পয়সাটা দেবে কে শুনি? এই তো দেখে আসছি টেলকো’দের ‘ওয়ালড গার্ডেন’ মানে তৈরি করা ‘ইচ্ছে কুপে’। ইন্টারনেট এসে উড়িয়ে দিয়েছে সব কিছু। ফেসবুকে যেতে আলাদা করে সংযোগ নিতে হয় না আপনাদের। ইন্টারনেট নামের মহাসড়কে সংযোগ থাকলেই হলো। এই ইন্টারনেটই তৈরি হয়েছে হাজারো মতের ওপর দিয়ে। সহিষ্ণুতা এর বড় চাবিকাঠি। সব ধরনের মত নিয়ে তৈরি হয়েছে এই বিশাল সীমানাহীন দেশ। সব মত যে ভালো লাগবে সবার – সেটাও নয়। আপনার ভালো না লাগলে সেখানে না গেলেই হলো। আপনাকে তো বন্দুকের মুখে নিয়ে পড়তে বলেনি তার ব্লগ পোস্ট। এটা এমন যে আমার ধর্ম পালন করছি আমার পরিমণ্ডলে। অন্যকে না খোচালেই তো হলো। আপনার খোঁচা লাগলে উত্তর তৈরি করুন যুতসই। নয় গালাগালি।

০৬.

প্রথম প্রথম সার্চ ইঞ্জিন বের হলে হুমড়ি খেয়ে পড়লো মানুষ। নব্বইয়ের শুরুর ঘটনা। ‘সেক্স’ শব্দটা ছিলো এক নম্বরে। কই সার্চ ইঞ্জিন ‘ব্যান’ করেনি জিনিসটাকে। নিষিদ্ধ করলেই বরং বাড়ে ব্যাপারটা। সৃষ্টিকর্তা আমাদের তার অনেক গুণের মধ্যে বিচার বুদ্ধিটা দিয়েছেন আগে। সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধি বলে হয়তোবা। কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ সেটাকে বেছে নিতে পাঠানো হয়েছে আমাদের এই নশ্বর পৃথিবীতে। নিজের দেখভাল নিজের। আর সেকারণে আমরা প্রাপ্তবয়স্ক। বাচ্চাদের দেখভাল করার দ্বায়িত্ব আমাদের। তাই কম্পিউটারটা এনে রাখা ওপেন স্পেসে। আর সবকিছুর খারাপ ভালো দিক আছে বলেই হাজারো ‘নিষিদ্ধ’ জিনিস পাওয়া যায় এখানে সেখানে। পৃথিবী তো আর স্বর্গ নয়, এটা পরীক্ষার যায়গা। ভালো কাজের পুরস্কার আছে সব ধর্মে। যারা সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করেন না সেটাও একটা ধর্ম। সেটাও একটা ‘অ্যাট্রিবিউট’। পদার্থের ধর্মের মতো।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

I care about a lot of issues. I care about libraries, I care about healthcare, I care about homelessness and unemployment. I care about net neutrality and the steady erosion of our liberties both online and off. I care about the rich/poor divide and the rise of corporate business.

― Sara Sheridan

save3০৩.

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কম্যুনিকেশন কমিশনকে (আমাদের বিটিআরসি’র মতো) কম ধকল পোহাতে হয়নি এটাকে নিয়ে। এটা নিয়ে অনেকবার আলাপও হয়েছিল বেশ কিছু রেগুলেটরদের সাথে। ‘এফসিসি’সহ। বিলিয়ন ডলারের অপারেটরদের কথা একটাই। ডাটা পাইপ দিচ্ছি আমরা। আমরা জানি কাকে আটকাবো আর কাকে নয়। ভাবখানা এমন, পয়সা না দিলে ফেলে দেবো ‘স্লো’ জোনে। ভয়ংকর কথা। অথচ পাইপের টাকা নিচ্ছে কিন্তু গ্রাহকদের কাছ থেকে। দরকার আরো টাকার। এখন টাকার খেলা। ক্যারিয়াররা ভালো করেই জানেন মোবাইল ডাটার ৮৫% রেভিনিউ হারাবেন ওয়াইফাই প্রোভাইডারদের কাছে। ২০১৮ সালের পরে। তবে টাকা রয়েছে এমুহুর্তে। তাদের কাছে। অনেক দেশের রেগুলেটর হার মেনেছে তাদের কাছে। বিনি পয়সায় দিচ্ছি ইন্টারনেট। কার কি বলার আছে?

০৪.

কিন্তু সেটাই ‘বিভক্তি’ তৈরি করছে ইন্টারনেটে। আজ সচলায়তন, কাল সামহোয়ারইনব্লগ। অ্যাক্সেস পাবে কি না সেটা নির্ভর করবে টেলকো’র ওপর। এই ‘জিরো ইন্টারনেট’ ক্যাম্পেইন হচ্ছে তার ‘নিষ্পাপ’ মুখ। আজ সুবিধা দেয়া হচ্ছে ফেসবুককে। কাল দেয়া হবে ‘উইকি’। পরশুদিন আপনার তৈরি অ্যাপকে ব্রাউজ করতে হবে গাটের পয়সা খরচ করে। রেগুলেটর কি পারে ফেসবূককে সুবিধা দিতে? আলাদাভাবে? আপনার অ্যাপ অথবা সাইটের ওপর? ফেসবুকের পয়সা আছে বলে ও পাবে ‘জিরো ইন্টারনেট’, আর আপনি? আপনার দোষ কোথায়? আপনি দেশী কোম্পানী তাই? আবার আপনার মামা চাচা মানে ‘পয়সা’ আছে বলে অ্যাক্সেস পাবেন আর ভিন্ন মতাবলম্বী হলে সাইট পড়ে থাকবে ‘স্লো’ জোনে।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

Freedom of connection with any application to any party is the fundamental social basis of the internet. And now, is the basis of the society built on the internet.

– Tim Berners-Lee

save0০১.

ইন্টারনেট নিয়ে সখ্যতা আমাদের অনেক অনেক দিনের। আমাদের মানে আমাদের মতো বুড়োদের। ইন্টারনেট বড় হয়েছে আমাদের চোখের সামনেই। বিরানব্বই থেকে অফলাইন ইন্টারনেট নিয়ে খোঁচাখুচি। ব্রাউজও করতে পারতাম এই অফলাইন ইন্টারনেটে। ভাবা যায়? ভাবখানা কিছুটা আজকের পুশ-পুল এসএমএসের মতো। যাই হোক – জানা যেতো অনেক কিছু। সত্যি কথা বলতে – ‘লোকাল ইন্টারনেট’ মানে মোডেম দিয়ে এক বাসা থেকে আরেক বাসায় ফাইল পাঠানো শুরু হয়েছে বহু আগেই। তিরাশি সালের কথা। হাতে পড়লো একটা ‘কমোডোর’ কম্পিউটার। মোডেমসহ। পাল্টে গেল আমাদের দুনিয়া। এক সময় চালু হলো বুলেটিন বোর্ড সার্ভিস। এই ঢাকায়! মনে আছে ‘ওয়াইল্ড ক্যাট’এর প্রম্পটের কথা? কথাটা আপনাদের কাছে ‘হিব্রু’ মনে হলে বুঝতে হবে আসলেই বুড়ো হয়েছি আমরা।

০২.

আজকের ইন্টারনেট পাল্টে দিচ্ছে পৃথিবীকে। কোথায় কি হলো সেটা সরকার জানার আগেই জানে মানুষ। মানে জনগণ। জনগণ তার মুখ খুলতে পারে এই ইন্টারনেটের কারণে। ‘আরব বসন্তে’র দেখেছেন কি, ওটাতো আইসবার্গের ছোট্ট ‘নিষ্পাপ’ মাথা। আজকের গনতন্ত্রের বিশাল অংশ চলছে এই ইন্টারনেটকে ঘিরে। আল গোরের ‘ইন্টারনেট আর ভবিষ্যত গনতন্ত্র’ নিয়ে বক্তৃতা কিছুটা গল্প দিলেও তার সবকিছু শুরু কিন্তু একটা সহজ ‘টার্মেনোলোজি’ নিয়ে। ‘নেট নিউট্রালিটি’। পুরো ইন্টারনেট ‘সরব’ এই গল্পটা নিয়ে। হ্যা, প্রায় একযুগ ধরে। আমরা যারা ভোক্তা, তাদের ভয় একটাই। কোনদিন না বন্ধ হয়ে যায় সব। আমার প্রিয় সাইট হয়তোবা হারিয়ে যাবে এই টেলকোদের ধাক্কাধাক্কিতে। সাইট থাকবে, কিন্তু সেটাকে আর বইবেনা (মানে আর ‘ক্যারি’ করবে না) আমাদের ‘টেলকো’রা। কারণ বনিবনা হয়নি পয়সার ভাগ বাটোয়ারাতে। অপারেটর ‘ক’ এর ওপর দিয়ে ওই অ্যাপ্লিকেশন বা সাইট আসতে হলে পয়সা দিতে হবে ঘাটে ঘাটে। সব দোষ জর্জ অরওয়েলের। কেন লিখতে গেলেন বইটা? মানে ১৯৮৪ নামের বইটা।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

There’s a tremendous gap between public opinion and public policy.

– Noam Chomsky

৬৬৭.

আচ্ছা, টাকা নিয়ে আসবে কেন আমাদের দেশে? কেন নয় নিজের দেশে? চাকরিক্ষেত্র বাড়তো বরং ওই দেশে। তাহলে তো আইফোন তৈরি হতো খোদ মার্কিন ভূখণ্ডে। কোম্পানীগুলোর মূল লক্ষ্য থাকে মুনাফা বাড়ানো। তারা তো আর দাতব্য প্রতিষ্ঠান নয়। আর মুনাফা করা তো দোষের নয়। আজ মাইক্রোসফট মুনাফা করতে পেরেছিলো বলেই তৈরি হয়েছে মেলিণ্ডা এণ্ড গেটস ফাউন্ডেশন। ফলে বিলিয়ন ডলার যাচ্ছে মানুষের ভালো কাজের জন্য। কম টাকা নয়, নভেম্বর দুহাজার চৌদ্দ পর্যন্ত তার টাকা বিলি হয়েছে বিয়াল্লিশ বিলিয়নের বেশি। ফিরে আসি সরকারের কাজে। ওই কোম্পানীগুলোকে দেশে আনতে দৌড়াতে হবে অনেকদুর। একটা দেশকে নিজেকে ‘ইভাল্যুয়েট’ করতে হবে কেন দেশ বা কোম্পানীগুলো আসবে টাকা নিয়ে? তারা কি চায়? আপনি হলে কি চাইতেন? বেশি লাভ, কম সময়ে। ‘ক’ দেশে ইনভেস্ট করলে আপনি কি চাইতেন? সরকারী অফিসে কম ঘুরাঘুরি, লাইসেন্সের নীতিমালাগুলো কতটুকু আপনার দিকে? লাভটা দেশে নিতে পারবেন কিনা? ওই দেশের মানুষগুলো ওই কাজের জন্য উপযুক্ত কিনা? শ্রমবাজার কেমন সস্তা?

৬৬৮.

আপনি নিজেই করবেন হাজারো প্রশ্ন। কারণ, টাকাটা আপনার। খাটাবেন আপনি। করলেন ইনভেস্ট, এরপর পাল্টে গেল নীতিমালা। আর ইনভেস্ট করবেন আপনি? নীতিমালার ‘প্রেডিক্টিবিলিটি’ নিয়েও কথা হয়েছে আগে। প্রাইভেট সেক্টর ‘ভর্তুকি’ চায়নি কখনো। তারা জানে ব্যবসা করতে হয় কিভাবে। রেগুলেটর আর সরকারকে চায় ‘ফ্যাসিলেটর’ রোলে। বাকিটা করে নেবে তারা। যেখানে ব্যবসা নেই সেখানে সরকারের ‘রেগুলেটরী ব্যবস্থা’ – ধরুন ইউনিভার্সাল অ্যাক্সেস ফান্ড নিয়ে কাজ করতে চায় তারা। দেখা গেছে বাজারে প্রতিযোগিতার বেঞ্চমার্ক ঠিক থাকলে ‘এফিসিয়েণ্ট’ নেটওয়ার্ক তৈরি হয় সবাইকে নিয়ে। ‘প্রতিযোগিতা’ ব্রডব্যান্ড সাপ্লাই সাইডে কমিয়ে নিয়ে আসে দাম, বাড়ায় সার্ভিসের কোয়ালিটি, বৃদ্ধি পায় গ্রাহকসেবা। আর সেকারণে সম্প্রসারণ করে ব্রডব্যান্ড বাজার, অ্যাক্সেস পায় আরো বেশি মানুষ। বেশি গ্রাহক মানে কমে আসে দাম, তৈরি হয় নতুন নতুন ‘ভ্যালু প্রপোজিশন’। এই সাইকেল নিয়ে কথা বলা হয়েছে আগেও।

৬৬৯.

আবার ইনফ্রাস্ট্রাক্চারে অ্যাক্সেস না পেলে প্রোভাইডাররা বাড়িয়ে দেবে দাম। আর দাম বাড়লে বারোটা বাজবে ব্রডব্যান্ড ‘ডিফিউশনে’র। ব্রডব্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাক্চার না থাকলে গ্রাহকেরা সার্ভিস পাবে কোথা থেকে? আর নেটওয়ার্ক থাকলেও দাম না কমলে সেটার প্রতি আগ্রহ হারাবে গ্রাহকেরা। আবার সার্ভিস মানুষকে না টানলে নেটওয়ার্ক তৈরিতে আসবে মন্থরগতি। আর সেকারণে সরকারকে আসতে হবে এগিয়ে। ‘সাপ্লাই চেইনে’ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরির সাথে সাথে ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা, নেটওয়ার্ক তৈরিতে প্রণোদনা আর গ্রাহকসেবার মানদন্ডটা ঠিক রাখলে বাড়বে ব্রডব্যান্ডের গ্রহণযোগ্যতা। পুরো দেশে ব্রডব্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাক্চার থাকলে ভালো, আর না থাকলে? মানে, আমাদের দেশে যে জনবসতির ঘনত্ব, সব বিজনেস কেস কাজ করবে এখানে। তবে, ব্রডব্যান্ডের দাম হাতের নাগালে না এলে গ্রাহকদের আনা কষ্ট হবে। আর তখন, প্রোভাইডাররাও পিছিয়ে যাবে ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট থেকে। রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে যোগবিয়োগ করতে বসবে তারা। ওখানেই কাজ করতে হবে সরকারকে।

[ক্রমশ:]

Read Full Post »

Older Posts »