Feeds:
Posts
Comments

Archive for June, 2014

A conspiracy is nothing but a secret agreement of a number of men for the pursuance of policies which they dare not admit in public.

– Mark Twain

৫৩০.

ধরা যাক আপনি আইএসপি, চালাতে চান ডিএসএল। টিএন্ডটির লোকাল লুপ (কপার ইনফ্রাস্ট্রাকচার) আন-বান্ডল মানে খুলে দিতে হবে প্রতিযোগীদের কাছে। মুনাফার দামে নয়। জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করতে হবে তার সব রেফারেন্স ইন্টারকানেকশন অফার। ‘আরআইও’, রেফারেন্স ইন্টারকানেকশন অফার হচ্ছে গিয়ে আপনার নেটওয়ার্কের এলিমেন্টগুলোতে প্রতিযোগীদের এক্সেস দিতে গিয়ে তার দাম জানাতে হবে সবাইকে। অনেক দেশে রেগুলেটর সেটাকে দেখে দেয় আগে থেকে। বড় অপারেটর আবার দাম কমিয়ে বাকিদের মার্কেট থেকে উধাও করে না দিতে পারে সেজন্যও আছে ব্যবস্থা। ধরে দেয়া হবে তার দাম। নামতে পারবে না ওখান থেকে।

৫৩১.

থাইল্যান্ডে একটা রেগুলেটরি কোর্সে গিয়েছিলাম এবছর। ওদের ‘আনফেয়ার কম্পিটিশন নীতিমালা ২০০৬’ বলছে একই কথা। পঁচিশ শতাংশের ওপরে গেলেই ওই অপারেটরের ওপর নির্দেশনা আর নজরদারি আলাদা। হোলসেল এক্সেসে একেকজনকে একেক দাম আর শর্ত দিলেই বিপদে পড়বে সে। ‘বটলনেক রিসোর্স’গুলোতে (হতে পারে ব্যাকহল) এক্সেস কমিয়ে দিলে ধরবে রেগুলেটর। দরকারী তথ্য গোপন করলে জবাবদিহিতার মধ্যে পড়তে হবে ডোমিন্যান্ট অপারেটরকে। অন্যকে দিলাম না এক্সেস, টেকনিক্যালি সমস্যা করে রাখলাম – সেটা প্রমাণিত হলে আরো বিপদ। খুচরা ব্যবস্যায় এমন দাম দিলাম – বাকিরা বিপদে। সেটা পারবে না ডোমিন্যান্ট অপারেটর। একটা সার্ভিসের সাথে আরেকটা বান্ডলিং অথবা এটা না কিনলে ওটা পাবেনা বললেই ‘মার্কেট অ্যাবিউজে’ পড়ে যাবে সে। ভালো চলছে প্রোডাক্টটা, কমিয়ে দিলাম সরবরাহ – ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে ধরা হবে সেটাকে। কয়েকটা কোম্পানি মিলে যদি দাম এক রাখে, তাহলেও একই অবস্থা।

৫৩২.

মোদ্দা কথা – সুস্থ্য প্রতিযোগিতা নীতিমালা আর বড়দের ক্ষমতার অপব্যবহারগুলোকে নজরদারিতে নিয়ে এলে অপারেটররা নিজেরাই দাম কমিয়ে আসল দামের কাছে নিয়ে আসবে। আসল মানে প্রোডাকশন কষ্টের কাছাকাছি। সুস্থ প্রতিযোগিতার নীতিমালা জানে কিন্তু রেগুলেটর। ওই নীতিমালা মানলে খরচ কমে আসবে অপারেটরদের। নিট রেজাল্ট – দাম কম। সুস্থ্য প্রতিযোগিতার মাপার অংক আছে একটা। নাম হার্সম্যান হারফিণ্ডল ইনডেক্স। সংক্ষেপে এইচএইচআই। এর মান শূন্য হলে বোঝা যায় বাজারে ছোট কোম্পানি আছে অনেকগুলো। দশ হাজার হলে বাজারটা চলছে পুরো মনোপলিতে।

৫৩৩.

ধরে নেই – আমাদের সম্পর্কিত বাজার হচ্ছে মোবাইল সার্ভিস। বাজারে আছেও চার চারটা কোম্পানি। মার্কেট শেয়ার হিসেবে বড় অপারেটরের আছে পঞ্চাশ ভাগ। বাকিদের বাজার দখল আছে ৩০, ১০ আর ১০ শতাংশে। বাজারের এইচএইচআই ইনডেক্স হচ্ছে গিয়ে ২,৫০০ %২০ ৯০০ %২০ ১০০ %২০ ১০০ = ৩৬,০০। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে যদি দুটো কোম্পানি একত্রীভূত (মার্জার) হতে গেলে এধরনের একটা হিসেব করে সেটার বিপদসীমা পার না হলে ভালো সবার জন্য। সবুজ বাতি পায় কোম্পানিগুলো। এক হাজারের নিচে হলে ধরা হয় প্রতিযোগিতা কম। হাজার থেকে আঠারোশো – মধ্যম আর তার ওপরে গেলেই প্রতিযোগিতা আছে বাজারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে একই ধরনের তবে সেটার গল্প কিছুটা বড়। নিয়ে আসবো আরেকদিন। ‘এসএমপি’ অপারেটরের মার্কেট অ্যাবিউজ বা তার ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে আসছি সামনে। নাহলে রেগুলেটর জানবে কিভাবে? মানে, কোথায় সমস্যাটা?

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

No policy that does not rest upon some philosophical public opinion can be permanently maintained.

Abraham Lincoln

৫২৬.

আরেকটা দাম কমানোর টুলে আসি আজ। এটা আরেকটা রেগুলেটরি টুল, নাম এসএমপি। মানে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার। বাজারে প্রতিযোগিতা ঠিকমতো আছে কিনা সেটা দেখার দ্বায়িত্ব রেগুলেটরের। একাজে ‘কম্পিটিশন এজেন্সী’ একটা বিশেষায়িত সংস্থা। ওটা যতদিন না আসছে – ততোদিন টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরের কাজ এটা। ডাব্লিউটিও, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন এটা নিয়ে কাজ করছে অনেকদিন ধরে। কোন দেশে ঠিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থা না থাকলে ক্ষতি সবারই। ক্ষতি ছোট কোম্পানিগুলোর। সবচেয়ে ক্ষতি গ্রাহকের। গ্রাহক কখনো জানতে পারেনা প্রোডাক্টটার আসল দাম কতো। বাজার হারায় তার দক্ষতা। তৈরী হয়না বিকল্প পণ্য। ফলে দাম কমে না ইন্টারনেটের মতো অতি প্রয়োজনীয় জিনিসের।

৫২৭.

সাপ্লাই সাইডের সমস্যা নিরসনে ডাব্লিউটিও’র চুক্তিতে আমরা আছি কিন্তু। তবে নীতিমালার প্রযোজ্যতা নেই খুব একটা। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে এটা দেখে কোর্ট, তবে বাকি প্রায় সব দেশে সুস্থ্য প্রতিযোগিতার মানদন্ড নির্ধারণ করে থাকে কোম্পানিগুলোর মার্কেট শেয়ারের ওপর। অনেক কোম্পানি থাকার অর্থ এই নয় যে বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা বহাল আছে। এটা বের করারও অংক আছে কয়েকটা। দু-একটা কোম্পানি যদি বাজারের বেশি অংশ ধরে রাখে তাহলে দামটাও কিছুটা ‘ডিস্টর্টেড’ হয়ে পড়ে। এখানে জিনিষটার আসল দামটা কতো হওয়া উচিত সেটা বের করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কয়টা জিনিষের ‘কস্ট-মডেলিং’ করবেন আপনি? দু-একটা কোম্পানির পণ্য বাজারের অধিকাংশ মানুষ ব্যবহার করলে তৈরী হয় সমস্যাটা। বাজারে অন্য কোম্পানিগুলো থাকলেও প্রতিযোগিতামূলক ব্যাপারটা নিয়ে কেউ দেখভাল না করলে ‘মার্কেট ফেইলুর’ হবার সম্ভাবনা বেশি। ফলে – দাম আর কমে না। অথচ, উত্পাদন খরচ এর অর্ধেক। উদাহরন দেই বরং।

৫২৮.

ব্যবস্যা আমার মুড়ির। বাংলাদেশের ষাটভাগ বাজার আমার হাতে। কারণ, আমি ঢুকেছি বাজারে আগে। আমার ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক বড় অনেক। সরকারের সব লোককে চেনা আমার। প্রতিযোগীরা ধারে কাছে নেই আমার। পনেরো দশ শতাংশ নিয়ে আছে বাকিরা। আমার মুড়ি একদম প্রান্তিক পর্যায়ে যায় বলে ওটার বিকল্প হিসেবে ধারে কাছে যেতে পারেনি অন্যরা। পয়সা বেশি থাকায় প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর কয়েকটাকে কিনে নিলাম আমি। সাদা চোখে এখানে সমস্যা না থাকলেও প্রতিযোগিতা না থাকায় দাম বেশি থাকাটাই স্বাভাবিক। কম্পিটিশন এজেন্সি থাকলে কোন কোম্পানি বাজারের একটা নির্দিষ্ট শতাংশের ওপরে গেলেই তার মুনাফা বের করে সেটার আসল দামের কাছাকাছি একটা দাম বেঁধে দিতো। টেলিকমে কম্পিটিশন রেগুলেশন আরো ভয়াবহ। ডোমিন্যান্ট মানে বড় অপারেটরের হাজারো আন্ডারটেকিং। আর তার বড় হবার ক্ষমতাকে অপব্যবহার করলে হয় কোর্ট কাচারী।

৫২৯.

সেই উনিশশো সাতানব্বইতে ইউরোপিয়ান কমিশন চারটা বাজার নির্ধারণ করে এই টেলিকমেই। মোবাইল, ফিক্সড লাইন মানে টিএন্ডটি, লীজড লাইন আর ইন্টারকানেকশন মার্কেট যার মাধ্যমে যুক্ত থাকে অপারেটররা দেশে বিদেশে। কারো বাজার কোন ভাবে ২৫% বা ওর ওপরে গেলেই তাকে এসএমপি মানে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার হিসেবে ধরা হয়। এসএমপি হলে তার নেটওয়ার্কে অন্য প্রতিযোগীরা যারা ঢুকবে – তাদেরকে দিতে হবে আসল দামে। প্রোডাকশন কষ্টের কাছাকাছি। মুনাফার দামে নয়। তার নেটওয়ার্ক এলিমেন্টগুলোতে আলাদাভাবে এক্সেস চাইলে সেটা দিতে বাধ্য।

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

Kings will be tyrants from policy when subjects are rebels from principle.

– Edmund Burke, Reflections on the Revolution in France

৫২১.

ফিরে আসি সমস্যায়। বছর তিনেক আগে ইউটিউব নিয়ে আলাপ হচ্ছিলো গুগলের সাথে। এরপর মাঝে মধ্যে কথা হতো বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে। আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারগুলোতে কনটেন্ট সেন্সরশীপ নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের কিছু রেগুলেশন নিয়ে ঘাটতে হচ্ছিলো। অনেকবারই। কনটেন্ট মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে থাকলে আমাদের নীতিমালা খাটে না, তবে সেটা অন্যদেশে থাকলে গুগল মানবে সেদেশের নীতিমালা। কথা চলছিলো টুইটার আর ফেইসবুকের সাথে। একই টাইমলাইনে। শুরু হয়েছিলো শর্টকোড নিয়ে। ওদের অফিসেও গিয়েছিলাম মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে। ছুটিতে থাকার সময়ে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে – বাংলাদেশে গুগল সার্ভিসগুলোর কনটেন্ট হোস্টিং করলে লাভ সবার। সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে বাইরের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ কিনতে হবে কম। কম মানে যা তা কম নয় – অনেক কম। গ্রাহকদের ইন্টারনেট এক্সপেরিয়েন্স হবে পাশের বিল্ডিংয়ের সার্ভারের মতো। ক্লিক করার আগেই হাজির পেজ।

৫২২.

গুগল দেশে আসলে আসবে ফেইসবুক, আর আসবে হাজারো ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর কনটেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক। কনটেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের কাজ হচ্ছে গ্রাহকদের কতো কাছ থেকে কতো বেশি কনটেন্ট দেয়া যায়। হাজারো পেটেণ্ট হয়েছে তাদের এই প্রযুক্তিতে। কোম্পানির হোম পেজ একটা। তবে সেটাকে জিয়োগ্রাফিকালি রেপ্লিকেট করা হচ্ছে এলাকা ভিত্তিক। ফলে বাংলাদেশ থেকে কেউ ফেইসবুক ক্লিক করলে সেটা মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে না পাঠিয়ে পাঠাবে আমাদের দেশের ভেতরের কনটেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কে (সিডিএন)। দাম দিতে হবে না দুরের রাস্তার। ফেইসবুকে ক্লিক করলে আপনার আইএসপি পাঠিয়ে দেবে দেশের ভেতরের সিডিএনে। আইআইজি মানে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে পার হতে হবে না কখনই। দাম কমবে না মানে? সবার চিন্তা একটাই। কতো সহজে আর কতো তাড়াতাড়ি লোড হবে গ্রাহকদের পেজ। তাহলে গ্রাহক থাকবে ওদের পেজে বেশি সময়। কনটেন্ট দেশের ভেতরে থাকাতে ইন্টারনেটের দাম নেমে আসবে অর্ধেকে। সে হিসেব নিয়ে আসছি পরে।

৫২৩.

আজকের টুল, ইন্টারমিডিয়ারী লাইয়াবিলিটি প্রটেকশন। মাফ করবেন। না পারতে – একটা আইনগত সঙ্গা ঝুলি থেকে বের করতে হচ্ছে আমাকে। ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো চাওয়া একটাই। অন্যের কনটেন্টের জন্য কোর্ট কাচারী করো না আমাকে। প্রশ্ন হচ্ছে – ‘ইন্টারনেট ইন্টারমিডিয়ারী’ কারা? আর কনটেন্ট তৈরী করে কারা? ইন্টারনেটের কনটেন্ট তৈরী করছে সাধারণ মানুষ। ছবি আপনার। তুলেছেন আপনি। আপলোড করছেন আপনি। গুগল বা ফেইসবুক নয়। অথবা মিডিয়া কোম্পানিগুলো। পত্রিকা অফিস তৈরী করছে তাদের অনলাইন কনটেন্ট। তাহলে ‘ইন্টারমিডিয়ারী’ কারা? আইএসপি, সার্চ ইঞ্জিন আর সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিসটা হোস্ট করে তাদের প্ল্যাটফর্ম দিয়ে। অথবা পাইপ তৈরী করে দিয়ে। সোজা কথায় – যারা এনাবলার। বাজার বা রাস্তা ইজারা দেবার মতো। কে কি বেচবে সেটা তার ব্যাপার।

৫২৪.

ঝামেলাটা অন্য জায়গায়। এদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা থাকায় সরকারগুলো চাপ তৈরী করে এই ইন্টারনেট ইন্টারমিডিয়ারী’দের ওপর। কনটেন্ট সেন্সরশিপের জন্য যারা বলছেন – তারা কিন্তু বলছেন না ওই মানুষটাকে। যিনি আপলোড করেছেন বা লিখেছেন। দেশগুলো দোষ দিচ্ছে ইন্টারমিডিয়ারীদের। অথচ, সে জানেই না কে কি লিখেছে? আবার কোন কোন কনটেন্ট সেন্সরশিপে পড়বে এটার পরিস্কার নীতিমালা না থাকায় ‘ইন্টারমিডিয়ারী’রা দেশগুলোর চাপে মুছে ফেলে কনটেন্ট। তখুনি শুরু হয় আরেক গল্প। মানুষের ভাব প্রকাশের আইনগত অধিকার খর্ব হওয়াতে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচন্ড চাপে পড়ে তারা। মানে পুরোপুরি স্যান্ডুইচড! ফলে ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো কোনো দেশে আসতে চাইলেও তারা কিছু ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চায় আগে ভাগেই। অনেক টাকার ইনভেস্টমেন্ট করতে গেলে আপনিও চাইবেন তাই।

৫২৫.

কনটেন্ট দেশে থাকলে সেই দেশের নীতিমালা মেনে চলবে সে। মানে ইন্টারমিডিয়ারীরা। যারা প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে মূলতঃ। কোন কনটেন্ট দেশের নীতিমালা বিরুদ্ধ হলে যার কনটেন্ট – দায়ী করতে হবে তাকে। কারণ, এটা ইউজার জেনারেটেড কনটেন্ট। সেটার জন্য আদেশ দিতে হবে স্বাধীন একটা লিগাল এনটিটি থেকে। অনেক দেশে দেখেছি – কোর্ট অর্ডার কাজ করে বেশি। তখন ইন্টারমিডিয়ারীরা মুছে ফেলবে নিয়ম মেনেই। যার কনটেন্ট সরানো হবে তাকেও তার মতামত দেবার সুযোগ দিতে হবে। মুছে ফেলার নির্দিস্ট একটা নীতিমালা চায় তারা। একেকজনের জন্য একেক আচরণ হলে আন্তর্জাতিকভাবে বিপদে পড়বে ওরা। তার আগেই যদি সে দেশ আইনগত ব্যবস্থা নেয়? দেশ যে তা নেবে না সেটার নিশ্চয়তা চায় তারা। আবার সেই কনটেন্টের মালিক যদি সুবিচার চেয়ে মামলা করে? মানে কেন তার কনটেন্ট মুছে ফেলা হলো?

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

When there’s a vacuum of public input, lobbyists usually fill it. But when there’s public input, the people usually win.

Morgan Carroll, Take Back Your Government: A Citizen’s Guide to Making Your Government Work For You

৫১৭.

ডাটা নেটওয়ার্কের দামাদামি একটু ভিন্ন ধরনের। ভয়েস নেটওয়ার্কে এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে কল পাঠাতে হলে যাকে পাঠাচ্ছেন তাকে দিতে হয় একটা চার্জ। এটাকে বলে আন্তসংযোগ চার্জ। আমাদের দেশে এটা আঠারো পয়সা। আবার অনেক দেশে দুটো নেটওয়ার্কের ট্রাফিক কাছাকাছি হলে ‘সেন্ডার কীপস অল’ রেজীম ভালো। বিলিংয়ের ঝামেলা কম। একেকজন আরেক নেটওয়ার্কে কল পাঠিয়ে খালাস। আর গ্রাহকের পুরো বিলটা রেখে দেবে সে। ইন্টারনেটের ট্রাফিক বিলিং আরো মজার। ধরা যাক আপনি আইএসপি ‘ক’। আমি তাহলে ‘খ’। আমাদের সমান ট্রাফিক একে ওপরকে দিলে কাটাকাটি। কাউকে দিতে হবে না পয়সা। এটাকে বলে ফ্রি-সেটেলমেন্ট। এটা যেখানে হয় সেটাকে বলে ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ। আজ আমরা ট্রাফিক কিনছি দেশের বাইরে থেকে। কারণ, আমাদের দেশের বেশিরভাগ অনলাইন পত্রিকা হোস্ট করা দেশের বাইরে। ভেতরে হলে সাশ্রয়ী হতো অনেকটা।

৫১৮.

তবে মুদ্রার ওপর পিঠটাও শুনতে হবে আপনাকে। যদি বন্ধ করে দেয় পত্রিকাটা কেউ? আবার, ইকোনমি অফ স্কেলের কারণে হোস্টিং খরচ কম – বাইরে। তবে শুরু করলেই কমে আসবে দাম। ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরী হতে সময় লাগতো না অতো। ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জগুলো সাধারণত: চলে কোম্পানিগুলোর নিজেদের মধ্যে ‘মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ থেকে। কিছুটা ‘লুজলি বাউন্ডেড’। উদ্ভাবনা বেশী হয় ওখানে। লাইসেন্স হলে কমে আসে স্পৃহাটা। আমরা যতো বেশি কনটেন্ট বানাবো দেশে – ততো কমবে ইন্টারনেটের দাম। বাইরে থেকে তখন আইপি ট্রানজিট মানে ট্রাফিক কিনবে অন্যদেশ। এরকম হতে হতে এক সময় আমাদের আর ওদের ট্রাফিক হয়ে যাবে সমান। তখন হবে কাটাকাটি। মানে খরচ শুন্য।

৫১৯.

গ্লোবাল ইন্টারনেট ফার্মগুলো ইন্টারনেটকে ‘এক্সপেরিয়েন্স’ বা অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখে। মানে তাদের সাইটে গিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা খারাপ হোক এটা চায়না সে মোটেই। তার কনটেন্ট সুদুর মার্কিন মুল্লুক থেকে আনতে গিয়ে লোডিং সময় বাড়াবার পক্ষপাতি নয় গুগল বা ফেইসবুক। সেটা চায় না অন্য ইন্টারনেট ফার্মগুলো। ক্লিক দিয়ে কনটেন্ট আসতে সময় নিলে ব্যবহারকারীরা আর আসতে চাইবে না সেই সাইটে। লক্ষ্য করেছেন কি লোডিং টাইম? মানে – যখন কনটেন্ট সার্ভারটা থাকে আপনার বিল্ডিংয়ে? কি ফুর্তিটাই না লাগে তখন? ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো চাচ্ছে ওই একই জিনিস। আসতে চাচ্ছে আপনার পাশের বিল্ডিংয়ে। অথবা আপনার শহরে। আর আমার আপনার মতোই ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোও চাচ্ছে দাম কমুক ইন্টারনেটের। প্রানপনে। যতো দাম কম সংযোগের – ততো আপটেক মানে ততো প্রসার। সেকারণে বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করছে সব ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো।

৫২০.

তবে আসতে চাইলেও পারছে না কিছু কিছু দেশের নীতিগত সিদ্ধান্তহীনতার কারণে। স্মার্ট কোম্পানিগুলো কিছু ‘ওয়ার্কারাউন্ড’ বের করে নিয়েছে এর মধ্যে। তাদের বহুল ব্যবহৃত কনটেন্টকে আবার দেশের বাইরে থেকে আনতে না হয় – সেজন্য ইন্টারনেট গেটওয়েগুলোকে দিচ্ছে তাদের ক্যাশে ইঞ্জিন। প্রায় বিনামূল্যে। এটা এমন একটা যন্ত্র – যার মাধ্যমে কম কনটেন্ট আনতে হয় দেশের বাইরে থেকে। ইন্টারনেটের বিল কমানো আর আপনার ভালো ইন্টারনেট এক্সপেরিয়েন্সের জন্য খরচ করছে বিস্তর। ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো তো আক্ষরিক অর্থে বিনে পয়সায় আপনাকে ইন্টারনেট দিতে পারলে বাঁচে। দেখছেন না – হোয়াট’স অ্যাপের মতো অনেক অ্যাপ চালাতে যে ইন্টারনেট লাগে সেটাও ফ্রি দিচ্ছে আপনার মোবাইল অপারেটর। জিরো.ফেইসবুক বা জিরো.উইকিপেডিয়া ব্যবহার করেননি বিনামূল্যে?

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

The only people who can resist a quick fix are those that are not addicts.

– Gerald Weinberg

৫১৪.

আচ্ছা, ইন্টারনেটের কাঁচামাল কি? ঠিক বলেছেন – কনটেন্ট। এটাই হচ্ছে আমাদের প্রথম ‘দাম কমানো’র টুল। তাহলে পয়সা দিচ্ছি কিসের জন্য? সংযোগ মানে ওই পাইপটার দাম হিসেবে। দুরের কনটেন্টের জন্য আনার খরচ বেশি। আর দেশে থাকলে, দাম পানির মতো। কনটেন্ট আছে কোথায়? তার আগে জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিলো আরেকটা জিনিস। আমাদের এই ইকোসিস্টেমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটার কথা বলিনি আমরা। গ্রাহক কি চান? জি, আপনাকে বলছি। আপনি কি কাজে ব্যবহার করছেন ইন্টারনেট? ফেইসবুক? সার্চ ইঞ্জিন? গুগল সার্ভিসেস? ওয়েববেসড ইমেইল? খবরের কাগজ পড়া? ফেইসবুক আছে কোথায়? মানে যা যা বললেন সেই কনটেন্ট আছে কোথায়?

৫১৫.

সব দেশের বাইরে। আপনার উত্তর। গুগল.কম.বিডি ও বাইরে। তো সংযোগের দামতো গুনতেই হবে আমাদের। আপনার বন্ধুদের নব্বই শতাংশ সবাই থাকেন বাংলাদেশে। আপনিও তাই। ফেইসবুকের বিলিয়ন কনটেন্ট আপডেট হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। কোটি ছবি হচ্ছে আপলোড। বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে। ঠিক তো? আর দেখছে কারা? আমরাই। আমরা আছি কোথায়? বাংলাদেশে। বাংলাদেশ থেকে কনটেন্ট আপলোড হচ্ছে বাইরে। আবার ডাউনলোড করছি বাংলাদেশে, দেশের বাইরে থেকে। এটাতো হতে পারে না কোন এফিসিয়েন্ট মডেল। খবরের কাগজের একই অবস্থা। অধিকাংশ পাঠক থাকে বাংলাদেশে। খবরের কাগজের কনটেন্ট তৈরী হচ্ছে বাংলাদেশে। অথচঃ পড়তে হচ্ছে সাত সমুদ্দুর পাড়ি দিয়ে। অনেক দাম দিয়ে ইন্টারনেটের পাইপ কিনে। কমবে কিভাবে ইন্টারনেটের দাম? বলুন আমাকে?

৫১৬.

মেইল করছি আপনি আমি। নব্বই শতাংশ মেইলের প্রাপক আছে কিন্তু বাংলাদেশে। তার মানে আমার মেইল কনটেন্ট আর এটাচমেন্ট সবই যাচ্ছে দেশের বাইরে। হয় সান্তা ক্লারা, না হয় আয়ারল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুরে তাদের কনটেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কে। তারপর ফিরে আসছে বন্ধুদের কাছে – সেই দামী ইন্টারনেট পাইপ দিয়ে। ব্যাপারটা এমন, আপনার বাসার ছাদের পানির ট্যাংকটা রেখেছেন আপনার বন্ধুর বাসার ছাদে – যশোরে। আপনি থাকেন ঢাকায়। পয়সা খরচ না করার জায়গা পেয়ে পানি ওঠানো আর নামানোর পাইপ বসিয়েছেন সেই ঢাকা থেকে যশোরে। একই রাস্তায় ফিরতি পাইপটাও।

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

A policy is a temporary creed liable to be changed, but while it holds good it has got to be pursued with apostolic zeal.

– Mahatma Gandhi

৫১১.

মিলিটারি একাডেমীতে প্রচন্ড চাপে অর্থনীতির ক্লাস পুরোপুরি না বুঝলেও তিনটা জিনিস একেবারে পরিস্কার। মানে ফকফকা পরিস্কার। ডিমান্ড আর সাপ্লাইয়ের গল্প। ক. দাম বাড়ে কেন? বাজারে সরবরাহ না থাকলে। আর? ওটার বিকল্প তৈরী না হলে। খ. দাম কমে কিভাবে? সরবরাহ বাড়লে। সরবরাহ বাড়ে কেন? চাহিদা বাড়লে। মানে চাহিদা বাড়লে সরবরাহ বাড়বে। উত্পাদনও বাড়বে। যতো বেশি বাড়বে উত্পাদন – দাম কমবে ইউনিট প্রতি। ইকোনমি অফ স্কেলের খেলা। মোবাইলের দাম কমছে কিভাবে?

৫১২.

দশ বিশ লাখ পিস অর্ডার না পেলে উত্পাদনে যায় না প্রোডাকশন হাউসগুলো। একই ফোন বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে মডেল ‘ক’ নাম দিয়ে। ভারতে হয়তোবা ‘খ’, চীনে ‘গ’ নামে। কয়েকটা দেশের অর্ডারের ভিত্তিতে লাখ পিস বানাচ্ছে ওই ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি। আমার লোকাল ব্র্যান্ডের ফোনটা নিয়ে কষ্টে ছিলাম অনেকদিন। হার্ডওয়্যার ভালো। তবে হাজারো ‘ব্লটওয়ার’ মানে অদরকারী সফটওয়্যার দিয়ে ‘রম’টা ছিলো ভর্তি। পরে কনকা’র একটা মডেল, বিক্রি হয় চীনে – ‘কাস্টম রম’ যোগাড় করে চালাচ্ছি সেটা। ওই একই ফোন চলছে নানা নামে। চলছেও কয়েকটা দেশে। দাম কমবে না মানে? গ. ডিমান্ড বাড়ানোর গল্পটা শিখেছি সিঙ্গাপুর থেকে। শেখাবো সবাইকে। নাহলে ডটের মতো এই ছোট দেশটাতে – দশটার কাছাকাছি সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেম থাকে কি করে?

৫১৩.

ইন্টারনেট কিন্তু ব্যতিক্রমী কিছু নয়। এটাও আমের মতো আরেকটা প্রোডাক্ট। এর দাম কমাতে বাড়াতে হবে সরবরাহ। আর সরবরাহ বাড়াতে তৈরী করতে হবে চাহিদা। তাহলে দাম কমছে না কেন? আমাদের দেশে চাহিদা নেই? এটা বললে তো মার খাওয়ার যোগাড় হবে। এমুহুর্তেই। এনালাইসিস ম্যাসন বলে নামকরা একটা কনসাল্টিং কোম্পানিতে চাকরি করতো আমার এক মার্কিন বন্ধু। সে ওই কোম্পানির একটা রিপোর্ট নিজে কিনে পাঠিয়েছিলো আমাকে। মুরগী আর ডিমের গল্প। ইন্টারনেটের প্রসার বাড়লে বাড়ে দেশের জিডিপি। আবার দেশের জিডিপি বাড়লে সচ্ছলতা বাড়ে মানুষের। তখন ইন্টারনেট কিনতে পারে মানুষ। তাহলে মানুষ ইন্টারনেট কিনবে টাকা আয় করার জন্য – নাকি সচ্ছলতা বাড়লে কিনবে ইন্টারনেট? মানে – এটা একটা সাইকেল। তবে সেটার জন্য ডিমান্ড আর সাপ্লাইয়ের দিকগুলো বোঝা জরুরি।

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

Surround yourself with the best people you can find, delegate authority, and don’t interfere as long as the policy you’ve decided upon is being carried out.

– Ronald Reagan

৫০৮.

প্রয়োজন নীতিমালার। ব্যবস্যাবান্ধব নীতিমালা তো পরে। সরকারী অফিসগুলোতে অনেককিছুই মুখে মুখে। জিনিসগুলো লেখা না থাকার ফলে এগুচ্ছে না কিছুই। আবার ‘উনি’ ছুটিতে থাকলে হবে না কাজ। লিখিত প্রসেস না থাকলে যা হয় আর কি। ‘সিটিজেন চার্টার’ দিয়ে এগিয়েছে দেশ। তবে, সেটার গতি বেশ স্লথ। ভাবছিলাম, লিখবো না নীতিমালা নিয়ে। অন্ততঃ এই বইটাতে। কারণ লেখালিখিতে আমরা বেশ দুর্বল। একারণে, বাংলায় কনটেন্ট আশ্চর্যরকম ভাবে কম। লেখালিখির ছাড়া অন্য দিক দিয়ে কিছু করা যায় না? ভুলে জিগ্যেস করেছিলাম বাইরের এক কনসালটেন্টকে। নামকরা কোম্পানির হয়ে লিখে দেন নীতিমালা – অনেক দেশকেই। বয়স্ক বলে স্নেহ করেন আমাকে। কিন্তু রাগটা লুকিয়ে রাখতে পারলেন না বলে মনে হলো।

আচ্ছা, তোমার দেশ কি চায় সেটা লিখবে না তুমি? সেটার জন্য টাইমলাইনটা গুরত্বপূর্ণ বটে।

লেখা আছে ওটা। বললাম আমি।

ভালো কথা, কিভাবে করবে সেটার অ্যাকশন পয়েন্ট – আর কারা কি কি করবে মানে মন্ত্রনালয়ের মধ্যে কাজের ডিস্ট্রিবিউশন ঠিক না থাকলে কাজ বের করা মুশকিল। থামলেন উনি।

৫০৯.

তোমাদের মতো দেশে ব্রডব্যান্ড এজেন্সী লাগবে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে। মন্ত্রনালয়গুলোর সমন্বয় করবে ওই অফিসের পেটে বসে। সোজা কথায় – খবরদারি। এক মন্ত্রনালয় সময়ের মধ্যে কাজ না বের করতে পারলে এটার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে আটকে না যায় তার প্ল্যান ‘বি’ তৈরী করা থাকবে আগেই। লিড আর সহযোগী মন্ত্রনালয়গুলো ঠিকমতো সিনক্রোনাইজড না থাকলে টাকা গচ্চা যাবার সম্ভাবনা বেশি। ইন্টার-ডিপেন্ডেন্ট কাজে টাইমলাইন না মানলে একজনের কাজ হয়ে গেলেও বসে থাকতে হয় অন্যরা কাজে গাফিলতি করলে। আর, টাইম ইজ মানি!

৫১০.

ধরুন আমাদের টেলিকম পলিসি তৈরী হয়েছে ১৯৯৮ সালে। এটা এতো ডাইনামিক ফিল্ড যে এর মধ্যে এটাকে আপডেট করা যেতো বার কয়েক। নীতিনির্ধারকরা না লেখলে লেখবে কে? তখন লিখতে হবে আমাদেরকেই। দেশতো সবার। সরকার এটা করে না ওটা করেনা বলেতো পার পাবো না আমরা কেউ। আমরাই দেশ। আপনি মানবেন – পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ কাজ হচ্ছে আরেকজনকে দোষারোপ করা। সবচেয়ে কঠিন হচ্ছে আসলে কাজটা করা।

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

Google understood that if you’re just a search engine, people assume you’re a very, very good search engine.

— Rory Sutherland

৫০৪.

বলুনতো, নীতিমালা লিখতে কি লাগে? যেকোনো রেগুলেটরের একটা বড় কাজ হচ্ছে দেশ কি চায় সেটা ঠিক করা। আবার, দেশ আসলে কি চায় সেটা নির্ভর করছে গুটিকয়েক মানুষের হাতে। তারা কি আসলে বের করতে পেরেছেন দেশটা কি চায়? ফিরে আসি ব্যক্তি পর্যায়ে। আমরা কজন লিখে রেখেছি – জীবন থেকে কি চাই আমরা? বেশিরভাগ মানুষ লেখে না সেটা। আর সেকারণে নিজে আসলে কি চায় – সেটাও জানে না সে। তাই বলে দেশের ভালো কিসে হবে সেটা লিখবো না আমরা? কি চাই আমরা? সেটাই তো নীতিমালা। আর সেটা করতে কি কি করতে হবে – সেটা হবে অ্যাকশন পয়েন্ট। যারাই থাইল্যান্ড গিয়েছেন মুগ্ধ হয়েছেন তারা – বিশাল বিশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার দেখে। বেশিরভাগ ইনফ্রাস্ট্রাকচারই কিন্তু পিপিপি’র মডেলে করা। সরকারের অতো পয়সা থাকে না কোথাও। পিপিপি হচ্ছে গিয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ। পয়সা যোগান দেবে বেসরকারী কোম্পানি – কাগজ দেবে সরকার, আইনগত ভিত্তি সহ। আমাদের পিপিপি নীতিমালা তৈরী হয়নি এখনো।

৫০৫.

উন্নত দেশগুলোতে অনেক বড় বড় কাজে সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকে না জনগণ। কারণ এই পিপিপি। যেকোনো দেশের উন্নতির ইনডিকেটর বোঝা যায় ওদেশের পাবলিক ট্রানজিট সিস্টেম দেখে। মানে জনগন কতো সহজে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পারছেন – নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। ঢাকা শহরে সেটার অবস্থা আফ্রিকার অনেক দেশ থেকেও খারাপ। অথচ ব্যবস্যা বান্ধব পিপিপি নীতিমালা থাকলে প্রাইভেট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো প্রস্তাব দিতে পারতো সরকারের কাছে। তৈরী করতো ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড। ভাগ করে ফেলতো পুরো শহর – চার পাঁচ ভাগে। একেকটা ভাগের রুট নিয়ে দেন-দরবার করতো কনসেশন পিরিয়ডটা নিয়ে। এই রুটটা দাও আমাকে পঞ্চাশ বছরের জন্য। তৈরী করবো স্কাই ট্রেন। ইনফ্লেশন হিসেব ধরে ভাড়ার একটা চার্ট জমা দিতো সরকারকে।

৫০৬.

অন্য কোম্পানি হয়তো হাজির হতো আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ের প্ল্যান নিয়ে। সরাসরি টেন্ডারে যেতো সরকার। যে সবচেয়ে কম ভাড়া (জন প্রতি মানুষের) চাইতো, তার সাথে দর কষাকষি চলতো কনসেশন পিরিয়ডটা কমানোর জন্য। টাকার সমস্যা? ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ডের আওতায় বেশিরভাগ টাকা তোলা যায় জনগণ থেকে। মানে এই ট্রানজিট সিস্টেমটার বড় একটা মালিকানা চলে যাবে মানুষের হাতে। গুগল করুন ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড’ – পাগল হয়ে যাবেন আপনি। অথবা – ‘বিওওটি’। এধরনের মেগা প্রজেক্টের জন্য চোখ রাখতে পারেন থাইল্যান্ডের বিটিএস মাস ট্রানজিট সিস্টেমের দিকে। স্কাই ট্রেনগুলো সব তাদের। এই গত বছরই জনগনের কাছ থেকে তুলেছে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি টাকা। এই ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ডের প্রজেক্ট স্পন্সর হিসেবে বড় বড় কোম্পানি থাকলেও তারা জনগণকেও সম্পৃক্ত করে ওই মেগা-ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মালিকানা নেবার জন্য। শেয়ারের দাম দশ টাকা হলে ক্ষতি কি? থাইল্যান্ডের একদম নতুন টেলিফোন কোম্পানি ‘ট্রু কর্প’ তুলেছে ১.৮ বিলিয়ন ডলার। এই ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড থেকে। নতুন মোবাইল কোম্পানিটার জন্য। একেকটা শেয়ারের দাম ছিলো দশ বাথ করে।

৫০৭.

খুলবো নাকি একটা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড? তৈরী হবে বিশ্বমানের একটা ইউনিভাসিটি? নাকি একটা হাসপাতাল, বাম্রুডগ্রাডের মতো? আগেই বলেছিলাম কিছু পারি আর না পারি – লিখতে পারি নীতিমালা। আমাদের নীতিমালা লিখতে হবে আমাদেরই। লিখে দেবে বা অন্য কেউ। সাহায্য নেবো ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং ফার্মগুলো থেকে। প্রসেস তৈরিতে ওস্তাদ তারা। একটু আগেই পড়ছিলাম অ্যাকসেন্চারের একটা রিপোর্ট। সরকারগুলোর অদক্ষতার গ্যাপগুলো ধরে ধরে দক্ষ সিস্টেম তৈরী করছে তারা। তারা জানে ভালো মতো। সমস্যা মানুষে। সিস্টেমে নয়। তৈরী করতে হবে এমন প্রসেস – মানুষের জায়গায় কলাগাছ দাড়ানো থাকলেও কাজ চলবে রীতি মেনে। নীতিমালা লেখার কোর্স শুরু করছি শিগগিরই। আপনারা হবেন ‘পলিসি আন্টপ্রেনর’ মানে নীতিমালার উদ্যোক্তা। গুগল করবেন নাকি একটু? আমার ধারণা, আমরা শুরু করলে লিখবে সবাই। সবাই মিলে লিখবো আমাদের ভবিষ্যত। ক্রাউডসৌর্সিং করে লিখে দেবো আমাদের নীতিমালা। ক্রাউডসৌর্সিং মানে উইকিপেডিয়ার মতো সবাই মিলে কোনো কাজ বের করা। আইসল্যান্ডের সংবিধান নতুন করে লেখা হয়েছে এই ক্রাউডসৌর্সিং করে। অথবা কানাডার বাজেট? ফিনল্যান্ডের কথা তো সবার জানা।

বলুনতো, শুরু করা যায় কোনটা দিয়ে? সংবিধান?

[ক্রমশঃ]

নীতিমালা লিখুন নিজেই!

নীতিমালা লিখুন নিজেই!

বইটা পাবেন স্ট্যানফোর্ডের একটা পাবলিকেশন হিসেবে। নীতিমালা কোর্স শুরু করার আগে এটা একটা অবশ্য পাঠ্য। লিংক ছবিটাতে।

Read Full Post »

Efficiency is doing things right; effectiveness is doing the right things.

– Peter F. Drucker

৫০০.

ছোটবেলা থেকে লেখাপড়া নিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিলো আমার। চট করে ধরতে পারতাম না সবকিছু। ‘ফান্ডামেন্টাল’ মানে ‘বেসিক গ্রাউন্ড-আপ’ না জানলে পারতাম না ওপরের জিনিস। কোন কিছু শুরু করতে হলে ওর ‘বেসিক’ না ধরিয়ে দিলে মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগতো। বাবা আর মা – সবকিছুর জন্য ফাউন্ডেশন কোর্স করাতে থাকলেন আমার। ক্যাডেট কলেজে গিয়ে সমস্যাটা কমে গেলো। ক্লাসে না বুঝলেও রাতে বুঝিয়ে দিতো বন্ধুরা। একেবারে শুরু থেকে। গালি একটাও পড়তো না মাটিতে। দুনিয়াটা দেয়া নেয়ার। কিছু নিলে সহ্য করতে হয় অনেককিছু। তবে পড়ার বই থেকে বাইরের বই পড়তাম বেশি। ক্লাসে পড়িয়েছে এভাবে, বাইরের বইয়ে লিখেছে আরো কয়েকভাবে – কেন হবে না অন্যটা? কিছু হলেই জানতে চাইতাম ডেফিনেশন কি বলে। এটা এখনো চলছে। ওই ডেফিনেশনের জোরে চলছি আজও। নতুন জিনিস শিখতে চাইলে পড়ো ক. ডেফিনেশন, খ. আউটকাম (বিগিন এন্ড ইন মাইন্ড), গ. কিছু উদাহরন, ঘ. ওটার কিছু সাকসেস + ফেইলড স্টোরি, ঙ. আমাদের দেশে করতে গেলে ‘লোকাল কন্ডিশন’কে ‘টুইক’ করতে হবে কোথায়? নতুন করে তৈরী করার নেই কিছু। ‘রি-ইনভেন্টিং হুইল’ করার সময় নেই আমাদের।

৫০১.

বিটিআরসিতে আসার আগেই পড়েছিলাম টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি হ্যান্ডবুক। পড়েছিলাম লেখালিখির জন্য। জানতামও না ওখানে যেতে হবে একদিন। এখানে এসেই খুঁজতে থাকলাম ফান্ডামেন্টাল কোর্স। অনলাইন হলে তো কেল্লাফতে। পড়ালেখা, তাও আবার – ইন দ্য কমফোর্ট জোন অফ আওয়ার হোম। আইটিইউ’র কোর্স খুঁজে পেলেও ভ্যাকান্সী কম। মাত্র দুজন। বের করলাম যোগসূত্র, আইটিইউতে। রাশান এক ভদ্রলোক। বেগ, বরো আর স্টিল (শেষটার পক্ষপাতি নই আমি, কারণ এর আগেই হয়ে যায় কাজ) মোডে শুরু করলাম ইমেইল যোগাযোগ। ইমেইলের মাধুর্যে না হলেও সিরিজ ইমেইল থেকে বাঁচতেই বোধহয় আমাদেরকে দেয়া শুরু করলো পাঁচটি করে ভ্যাকান্সী। দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় দেখেছি পড়াশোনায় না করেনা কেউ। উল্টো, পয়সার ছাড় দেন সহৃদয় সিনিয়ররা। কাজ ডেলিভারি দিলে শেখাতে কি অসুবিধা? আর সেকারণে আমার ‘সিভি’টা এক পাতা থেকে কিছুটা বড়।

৫০২.

জ্ঞান কিন্তু রি-ইউজেবল। ব্রিটেনের প্রায় দুশো বছর লেগেছে। শুধু শিখতেই। শিল্প বিপ্লব থেকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শিখেছে ব্রিটেন থেকে। তাদের লোক পাঠিয়ে। নোটবই ভরে নিয়ে আসতো অভিজ্ঞতার কথা। সেটা কাজে লাগিয়ে টক্কর দিয়েছে অনেক কম সময়ে। কমিয়ে নিয়ে এসেছে প্রায় একশো বছর। এশিয়ান দেশগুলো আরো বুদ্ধিমান। ইউরোপ আর অ্যামেরিকা থেকে শিখে সেটা কাজে লাগিয়েছে গত তিরিশ বছরে। এখন টক্কর দিচ্ছে সবার সাথে। হংকং, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর অন্যের অভিজ্ঞতা কাজে কাগিয়ে এগিয়েছে বেশি। পাশ্চাত্যে কোনটা কাজ করছে আর কোনটা করেনি সেটা জানলেই তো হলো! মনে আছে বৈজ্ঞানিক নিউটনের কথা? আমি যদি আজ বেশি দেখে থাকি অন্যদের চেয়ে, সেটা পেরেছি পূর্বপুরুষদের জ্ঞানের ভিত্তিতে। আজ আমি জানি ট্রানজিস্টর কি – আর কিভাবে কোটি ট্রানজিস্টর থাকে একটা চিপসেটে। এখন এটা নতুন করে উদ্ভাবন করার প্রয়োজন নেই। বরং, এটাকে ব্যবহার করে কিভাবে নতুন কিছু উদ্ভাবন করা যায় সেটাই করছে নতুন ইমার্জিং দেশগুলো। এটাকে বলা হয় লিপ-ফ্রগিং।

৫০৩.

রেগুলেটরি ফান্ডামেন্টাল শিখেছি আমরা। এখন বের করতে হবে কি চায় দেশটা। তৈরী করতে হবে কাজ করার একটা প্ল্যান। চিন্হিত করতে হবে প্রয়োগের জায়গাটা। পড়েছি শতাধিক কেসস্টাডি। আর পড়েছি ওই দেশগুলোর ন্যাশনাল ব্রডব্যান্ড মাস্টার প্ল্যান। ধরুন, চল্লিশটার মতো। দেশগুলো অনেক আগে শুরু করাতে তাদের কনসেপ্টের রিভিউ পেপারটা পড়লেই বোঝা যাবে কোনটা কাজ করেছে আর করেনি কোনটা। এটা কোন রকেট সাইন্স নয়। দেখে শেখা। ঠেকে শেখা নয়। সেটাই ‘লেট স্টার্টার অ্যাডভান্টেজ।’ দেশগুলো তাদের ব্রডব্যান্ড ছড়িয়ে দেবার সাথে দাম কমানোর জন্য তৈরী করেছে হাজারো টুল। ওই টুলের মধ্যে আমি যেগুলোই ব্যবহার করেছি – ফলাফল পেয়েছি সাথে সাথে। একটা দুটো দেশে ভুল হতে পারে, তাই বলে ভুল করবে পঞ্চাশটা দেশ? সৃষ্টিকর্তা এমন কি তাদের দিয়েছেন – আমাদের দেননি? আমাদের মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা অনেক দেশের পুরো জনসংখ্যার অনেক অনেক বেশি। বিশাল পরীক্ষিত বাজার। বিশ্বাস হচ্ছে না? গ্লোবাল টেলিকম জায়ান্ট টেলিনরের সবচেয়ে লাভজনক ভেঞ্চার কিন্তু বাংলাদেশে। ওই পরীক্ষিত টুলগুলোকে পরিচিত করবো আপনাদের সাথে। এক এক করে।

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »

The highest patriotism is not a blind acceptance of official policy, but a love of one’s country deep enough to call her to a higher plain.

– George McGovern

৪৯৭.

নিউ ইয়র্ক। লেখালিখির একটা ওয়ার্কশপের প্রথম দিন। মেন্টর শুরু করলেন লেখার কিছু নিয়ম নিয়ে। পৃথিবীর এক নামকরা লেখকের একটা কোটেশন তুলে ধরলেন উনি। ‘লেখার নিয়ম তিনটা। তবে কেউ জানে না ও তিনটা কি।’ লেখালিখি নিয়ে থাকতেই পারে এধরনের কথাবার্তা। তাই বলে ইন্টারনেট নিয়ে? তবে মজার কথা, ইন্টারনেট নিয়ে মানুষের অনেকটাই বিভ্রান্তি আছে – দাম নিয়ে বিশেষ করে। তবে সেটা নিয়ে কম কথা হয়নি। হাজারো নিয়ম আর শর্টকাট নিয়ে কথা বলছেন অনেকে। শতাধিক ফোরামে। বোদ্ধাদের সাথে কেন জানি মনের মিল হচ্ছে না নীতিনির্ধারকদের। তবে বেসিক গল্পটা না জানার কারণে সমস্যা হচ্ছে বুঝতে। সমস্যা একটাই। ব্রডব্যান্ড মানে ইন্টারনেট নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন অথবা পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশনের সমস্যা নিয়ে আলাপ করছি ফোরামে। সবাই মিলে। মজার কথা – পড়া হয়নি প্রাথমিক ক্লাসগুলোই। কেউ জানিনা ব্রডব্যান্ড একোসিস্টেমটা কি? সমস্যা সমাধানে তাই নির্দেশনা আসছে ফ্রান্সের রানীর মতো। ভাত খেতে পাচ্ছে না জনগণ? পোলাও খেলেই তো পারে। বলতে দ্বিধা নেই, আমিও দিয়েছি এধরনের নির্দেশনা। শুরুর দিকে। আবার, ফল্টলাইনগুলো চোখে পড়ছিল বেশি করে – বিশেষ করে শেষের দিকে। সাত বছর তো কম সময় নয়।

৪৯৮.

সিরিজটা লিখছি কিছুটা দায়বদ্ধতা থেকে। বিটিআরসির সাত বছরের অভিজ্ঞতা মাথায় নিয়ে ঘোরার অন্তর্জালা থেকে মুক্তি পেতে এ ব্যবস্থা। নোটবই সেনাবাহিনীতে পোশাকের অঙ্গ হবার ফলে মিস করিনি খুব একটা। জিম রনের অমোঘ ‘নেভার ট্রাস্ট ইয়োর মেমরী’ বাণীটা খুব একটা বিচ্যুতি আনতে পারেনি ‘নোট টেকিং’য়ে। এখন যুগ হচ্ছে ‘গুগল কীপ’ আর ‘এভারনোটে’র। হাতির স্মৃতি বলে কথা – মাটিতে পড়ে না কিছুই। দেশ বিদেশের ফোরাম, যেখানে গিয়েছি বা যাইনি – হাজির করেছি তথ্য। টুকেছি সময় পেলেই। ভরে যাচ্ছিলো নোটবই। পয়েন্ট আকারে। প্রোগ্রামিংয়ের মতো পয়েন্টারগুলো লিংক করা ছিলো মাথায়। ভুলে যাবার আগেই বইয়ের ব্যবস্থা। ছয়টা বই মোটে। আগের পয়েন্টগুলোকেই ভাবসম্প্রসারণ করছি মাত্র। মাথার সাহায্য নিয়ে। ইতিহাস না লিখে এগোতে পারেনি কোন দেশ। ব্রডব্যান্ডের ‘চিটকোড’ হিসেবে ধরুন কিছুটা।

৪৯৯.

বিটিআরসিতে থাকার সময় অনেকগুলো কাজ হয়েছে যেগুলোর ফলাফল কিছুটা দীর্ঘমেয়াদী। আসবে ফলাফল, তবে সেগুলোর ইন্টার-ডিপেন্ডেন্সি থাকার ফলে অন্যগুলো না হওয়াতে শেষ হাসিটা হাসতে পারছে না কেউই। ইন্টারনেট নিয়ে পাবলিক কনসালটেশন হয়েছিল কয়েকটা। ইন্টারনেটের দাম নিয়েই হয়েছিলো সেই গনশুনানী। গনশুনানী মানে হচ্ছে ব্যবহারকারীর মতামতের ভিত্তিতে নীতিমালাতে সংশোধনী আনা। দিয়েছিলাম আমার আর আমার আরেক অফিসারের ইমেইল এড্রেস। মতামত দিয়ে ভরে গিয়েছিলো আমাদের মেইল বক্স। তিন হাজারেরও বেশি ইমেইল। সময় নিয়ে পড়েছিলাম। গ্রাহক তো জানবেন না রেগুলেটরি বিষয়। বা আমাদের ইন্টারনাল ডাইনামিক্স। কিসে কাজ করবে আর কিসে নয়। তারা যা চান – তাই বলেছেন ওখানে। একদম সরাসরি। সেই গনশুনানী শেষ হবার পরে আমাদের বিটিআরসি’র অফিসিয়াল পোস্টটা অনেকবার রি-পোস্ট করেন ব্লগাররা। ভরে যেতে শুরু করে আমাদের মেইলবক্স। গ্রাহকের সমস্যা কতো ধরনের আর কি কি – পিএইচডি করা যাবে। একটা নয়, কয়েকটা। শেষটা হয়েছিলো চৌদ্দটা পয়েন্ট নিয়ে। কার্যকর করা গেছে নয়টাকে। তবে গ্রাহকের ফিডব্যাক নিয়ে রি-পজিশন করার সময় এসেছে এখন।

[ক্রমশঃ]

Read Full Post »