Feeds:
Posts
Comments

Archive for November, 2013

Ordinary life does not interest me. I seek only the high moments. … I want to be a writer who reminds others that these moments exist.

 Anaïs Nin

The aim of life is to live, and to live means to be aware, joyously, drunkenly, serenely, divinely aware.

― Henry Miller

১৮৩.

বইয়ের দোকান পেলে হুঁশ থাকে না আমার। এইটা কিনি ঐটা কিনি। অনেক বইই পড়ে রেখেছি অর্ধেকটা – পড়বো পড়বো করে পড়া হচ্ছে না। গল্পটার শুরু ‘রু দু রিভোলি’র রাস্তাটা থেকে। প্যারিসের নামকরা রাস্তা বলে কথা। পৃথিবীর সবচেয়ে ফ্যাশনেবল রাস্তাগুলোর মধ্যে এই নামটা এসেছে নেপোলিয়ানের বিখ্যাত একটা জয় থেকে – অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। রিভোলীর যুদ্ধটা হয়েছিলো সেই সতেরোশো সাতানব্বইতে। মুখ ঝুলে পড়া বড় বড় ব্র্যান্ডশপের মধ্যে চোখ ঠিকই খুঁজছে বইয়ের দোকান। উইন্ডোশপিং আমার ফেভারিট পাস টাইম!

১৮৪.

পাগল নাকি? বইয়ের দোকান আছে নাকি পৃথিবীতে? মনে নেই আমাদের নিউ মার্কেটের বইয়ের দোকানগুলোর কথা?

কথাটা ফেলে দেবার মতো নয়। তবে ফ্রেঞ্চদের কথা আলাদা। এরা জার্মানদের মতো প্রচুর বই পড়ে। সেকারণে বইয়ের দোকানগুলো অনলাইন কোম্পানির ধাক্কায় উঠে যায়নি একেবারে। ‘রথ দেখা আর কলা বেচা’র মতো বই হাতে নিয়ে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখে কেনার আনন্দটা কি আর পাওয়া যাবে অনলাইন শপিংয়ে? এদিকে বইয়ের দোকান খোঁজার অ্যাপটা কাজ করছে ভালোই। কফিশপে ঢুকে কফির পাশাপাশি ওয়াইফাইটা চালু করতেই কয়েকটা নোটিফিকেশন এলো চলে। হায়রে, কানেক্টেড লাইফ। প্রথমটাই হচ্ছে গালিয়ানি, নামকরা বইয়ের দোকান – যার ব্যবস্যা শুরু নাকি পনেরশো বিশ সালে! রিভিউ পড়তে গিয়ে মাথা খারাপ হবার জোগাড়। কিসের কফি, কিসের কি – ডাম্পস্টার বরাবর গুগলি খেললাম। নিঁখুত আর্টিলারী শট! এক দৌড়ে হাজির দোকানের সামনে। পরিচয় হলো এস্তেলের সাথে, কিছুটা অকওয়ার্ড ভাবেই।

১৮৫.

‘আনাইস নিনে’র জার্নাল সমগ্রের কয়েকটা বই ওখান থেকে কেনা। এই ‘আনাইস নিনে’র রচনার সাথে পরিচয় হেনরি মিলারের মাধ্যমে। ছোটবেলায় ওর বইগুলো শেষ করলেও সেটার মর্মার্থ ধরতে পেরেছি কিছুটা বড় হয়েই। সমস্যা না থাকলে খোদ মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে তার বইগুলো ব্যান থাকবে কেন? তাও আবার তিরিশ বছরের জন্য? নিষিদ্ধ জিনিস নিয়ে চোখ খুলে দিলে সমস্যা তো হবেই। সেখানে লিটারেরি মূল্য আছে কিনা সেটার বিতর্কে বসিনি আজ। বইগুলো ফিকশন ধরনের হলেও লেখায় তার লেখক জীবনের সংগ্রামী এক ‘আত্মজীবনী’ ফুটে উঠেছে। বইগুলো লিখেছিলেন এই প্যারিসে, পাবলিশ হয়েছিলো এখানেই। সাহায্য করেছিলেন এই আনাইস নিন। নিনের স্বামীর অস্বাভাবিক সহনশীলতা আর নিস্বার্থ ভালবাসা আমাকে ভাবিয়েছে অনেক। আর তার অফুরন্ত টাকা শুধু নিনকে নয়, হেনরি মিলারকে লিখতে সাহায্য করেছিলো। এই প্যারিসেই হেনরি আর নিনের বোহেমিয়ান লাইফস্টাইলের অনেকটাই এসেছে তার ষাট বছর ধরে লেখা এই জার্নাল সমগ্রতে। মাদাম বোভারীর ধারণাটা কিছুটা নিনের মতোই।

১৮৬.

নিনকে নিয়ে আরো গল্প নিয়ে আসবো সামনে। ফিরে আসি বরং হেনরি মিলারকে নিয়ে। ‘ট্রপিক অফ ক্যান্সার’ আর তার অন্য বইগুলো বের হয়েছিলো এই ফ্রান্সেই। যে যাই বলুক, তার লেখার অন্তরঙ্গতা আর সেটার অবার গতিই মুগ্ধ করেছে মানুষকে। এই প্যারিসেই যাকে চলতে হতো ভিক্ষাবৃত্তি করে – সে হয়ে গেল এক লিটারেরি নক্ষত্র। তার একটা বইয়ের কিছু অংশ হস্তগত হলো দিন কয়েক আগে। ‘হেনরি মিলার অন রাইটিং’ নামের এই মাথা খারাপ করা বইটার কিছু অংশ আনবো আজ। ইংরেজিতে লেখা ওই এগারোটা কমান্ডমেন্ট বাংলায় নামাচ্ছি আমার ধারণার উপর ভর করে। অনুবাদে বিশ্বাসী নই আমি। তার পার্সপেক্টিভটা আমাদের মতো করে এনেছি এখানে। এগারোটা কমান্ডমেন্ট কিন্তু লিখেছিলেন একেবারে নিজের জন্য। দেয়ালে ঝুলিয়েছিলেন কিনা জানা নেই।

ক. লিখতে হবে একটা জিনিস নিয়েই। ওটা শেষ না করে ধরা যাবে না অন্য কিছু। সয়নে স্বপনে ওটাই। নতুন জিনিস – একেবারেই নো নো! [মনে হচ্ছে পুরো একসেন্ট্রিক ধারণা, এসপার না হলে ওসপার! মাঝামাঝি বলে কিছু নেই। এই না হলে হেনরি মিলার!]

খ. [ওই সময় মিলার লিখছিলেন ‘ব্ল্যাক স্প্রিং’ নামের বইটা, চমৎকার, কমপ্লিট ম্যাডনেস, পড়েই দেখুন] কোনো কিছুতে হাত দেয়া যাবে না ওই ‘ব্ল্যাক স্প্রিং’টা না শেষ করে। বইটাতে নতুন কোনো সংযোজনও কাম্য নয় এমুহুর্তে।

গ. নার্ভাস হবার কিছু নেই। কাজ করতে হবে ঠান্ডা মাথায়। মন ভালো করে। বল্গাহীন ভাবে, যা হাতে আছে সেটা নিয়েই।

ঘ. কাজ করতে হবে শিডিউল ধরে। মুড আছে কি বা নেই, সেদিকে দেখলে কোনো কাজই হবে না। সিডিউল ধরে বন্ধ করতে হবে কাজ। কাজ মানে বুঝেছেন তো? লেখালিখি।

ঙ. মাথায় কিছু না আসলে অথবা তৈরী না করা গেলে অন্য কাজ করো। [আমার ধারণা, এডিটিংয়ের কথা বুঝিয়েছেন উনি]।

চ. প্রতিদিন লেখার স্তরগুলো বাড়াও। রচনাশৈলীতে নতুন বুনন আনো। কাজে নিড়ানি দিলেই সমস্যা।

ছ. মানবিক হও। দেখা করো মানুষের সাথে। বুঝতে শেখো মানুষকে। ঘুরতে যাও বিভিন্ন জায়গায়। ভালোলাগার কাজগুলো করো। তুষ্ট করো নিজেকে।

ঝ. করতে হবে বলে কাজ করা, সেটা নয় অবশ্যই। কাজ করবে মজার সাথে। [(ঘ) এর সাথে এর কিছুটা ব্যতয় আছে। আমার ধারণা, কাজ করার মধ্যে সুখ না থাকলে লেখার কাজ চালিয়ে যাওয়া দুস্কর]

ঞ. লেখার এই প্রোগ্রাম ভালো না লাগলে ক্ষতি নেই। কিন্তু লেখার প্রোগ্রামটাতে ফিরতে হবে পরের দিনই। ন্যারো ডাউন করে আনো পরের দিনের কাজটা। মনোযোগ বাড়াও। ফেলে দাও বাড়তি অংশ।

চ. ইচ্ছা জাগে তো আরো অনেক বই লিখতে। ভুলে যাও ওকথা। মনোনিবেশ করো যেটা লিখছো সেটার উপর। নো পিকিং!

ছ. দ্রুত লিখতে হবে – সবসময়ই। লেখাই সব। ছবি আঁকা [মিলার নিজেই কিন্তু বিশাল পেইন্টার], বন্ধুসংস্বর্গ, গান আর সিনেমা আসবে সবার পরে।

Read Full Post »

2. It’s best to do one thing really, really well.

6. You can make money without doing evil.

– Google’s “Ten things”

১৮০.

গিয়েছিলাম সেদিন নামকরা এক ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে। মোবাইল অ্যাপসের এক প্রতিযোগিতায়। চৌত্রিশ জন জুরীর একজন। শুক্রবারের ভোরের ঘুম ফেলে ছুটলাম ভবিষ্যত প্রজম্মের গল্প শুনতে। বাদ সকালের নাস্তা, ঠিক করলাম অ্যাপস দিয়ে নাস্তাটা সারবো’খন। গিয়ে দেখি হুলুস্থুল অবস্থা। পরিচিত সব ডক্টরদের (পিএইচডি ধারী) মধ্যে নন একাডেমিয়া এই চেহারা দিয়ে পার পেলাম। ভালো চেহারা নয়, আমার অভিজ্ঞতায় গোবেচারা চেহারা পার পায় সব জায়গায়। পরিচিত হলে আরো সুবিধা।

১৮১.

জুরিবোর্ডের চমৎকার ব্রিফিং শেষে চলে এলাম নিজ নিজ ক্যাটাগরির ক্লাসরুমে। মনটাই ভালো হয়ে গেলো বুদ্ধিদীপ্ত চেহারাগুলো দেখে। উসখুস করছে নতুন কিছু করার জন্য। সুযোগ পেলেই দেখিয়ে দেবে বিশ্বকে। একেকটা প্রেজেন্টেশন একেক আঙ্গিকের। মন ভালো করে দেবার ওই আইডিয়াগুলো পাল্টে দিচ্ছিলো দেহের অঙ্গভঙ্গি। প্রত্যয়ী ডেলিভারি। এক কথায় চমৎকার। শেষ হলো টীমগুলোর ডেলিভারি, দশ মিনিট করে পেলো প্রতিটা টীম। এরপর পাঁচ মিনিটের প্রশ্নোত্তর পর্ব। জুরিবোর্ডের দুজন ছিলাম আমাদের এই ক্যাটাগরিতে। প্রোগ্রামটা শেষে আমাদের দুজনকে বলতে বলা হয়েছিল কিছু একটা। ইম্প্রমচু স্পীচ বলে কথা। কি বলেছিলাম দুজন মিলে? ইংরেজিটাকে ত্রান্সক্রাইব করলাম এখানে। লিখতে গিয়ে কিছুটা সাঁজিয়েও নিলাম মনের মতো করে। রি-রাইটিং যাকে বলে আর কি!

ক. অসম্ভব ভালো লাগছে তোমাদের সাথে থাকতে পেরে। ধন্যবাদ সবাইকে – চমৎকার একটা অভিজ্ঞতা দেবার জন্য। কে পুরস্কার পাবে আর কে পাবে না সেটা থেকে বড় কথা হচ্ছে তোমরা চিন্তা করেছ সবাই। এই চিন্তা করার ইচ্ছাটাই তোমাদেরকে নিয়ে যাবে অনেকদুর। ডাকা হয়েছিলো সবাইকে। এসেছো তারাই যারা চিন্তা করছো – দিতে চাচ্ছো কিছু। পাল্টাতে চাও দেশকে। কথায় আছে না, ‘শোয়িং আপ ইজ হাফ দ্য ব্যাটেল’ অথবা ‘এইটি পার্সেন্ট অফ সাকসেস ইজ শোয়িং আপ’? শুক্রবারের ঘুম নষ্ট করে এসেছো মানে ঠেকাতে পারবে না কেউই তোমাদের। একটা মোটিভেশনাল স্পীচ শুনতে গিয়েছিলাম অনেক বছর আগে। জীবনকে পাল্টানো উপর ছিলো স্পীচটা। সময়টা ছিলো ছুটির দিন – সকাল নটায়। স্পিকারের গুষ্টি উদ্ধার করে ছুটলাম ওই কনভেনশন সেন্টারে। বক্তৃতার শুরুতেই শুক্রবারের সকাল নয়টার শানে নুযুল দিলেন বিশ্বখ্যাত সেই বক্তা। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে এই বক্তৃতাই দশ হাজার ডলার খরচ করে শোনে মানুষ। সেখানে বাংলাদেশে ফ্রী করে দিয়েছিলেন। শুধুমাত্র দেখার জন্য – কারা পাল্টাতে চান। এর অর্থ হচ্ছে যারা এসেছেন তারা আসলেই পাল্টাতে চান। আর যারা আসেননি, তারা কখনো পাল্টাতে চান নি, আর পাল্টাবেনও না। তোমাদের জন্য সেটাই প্রযোজ্য। আসতে পারাটাই জয়ী হবার পূর্বলক্ষণ। আজ বিজয়ীর মুকুট না পড়লেও কালকে ঠেকায় কে? অভিনন্দন সবাইকে।

খ. সবকিছুকে প্রতিযোগিতার মতো করে নিলে তোমরা হয়ে উঠবে অজেয়। পরবর্তীতে যেখানেই যাও না কেন, শিখতে হবে নিজেকে ‘সেল’ করতে। শিখতে হবে সেলস পিচ। সেজন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত রিহার্সাল। জার্মানিতে থাকার সময় আমার অ্যাপার্টমেন্টের সামনেই থাকতেন এক ভদ্রলোক। মধ্যবয়স্ক, পঞ্চাশের উপর বয়স। একটা কাজে গিয়েছিলাম উনার অফিসে। সেলসটীমে ছিলেন উনি। দেখা হলো তার অফিসের বারান্দাতেই। দেয়ালের দিকে মুখ করা। কি যেনো পড়ছেন মনে হলো। হাত নাড়িয়ে অদৃশ্য কাউকে কিছু বোঝাচ্ছিলেন। তাকে ইন্টারাপ্ট না করে দাড়িয়ে থাকলাম দুরে। দশ মিনিট পর ঘুরে দাড়ালেন। হাসিমুখে আমাকে নিয়ে সেই কাজে চলে এলেন। অনেকদিন পর কিছুটা কুন্ঠিত হয়েই ওই ঘটনাটার কথা জিগ্যেস করেছিলাম। বোঝা গেলো যে ওটা ছিলো একটা সেলস পিচ রিহার্সাল – দেয়ালের দিকে মুখ করে। সেলসে বের হবার আগে রিহার্সাল দেন পনেরো মিনিট। প্রতিটার আগে একবার করে। একই জিনিস করছেন পঁচিশ বছর ধরে, রিহার্সালের প্রয়োজন আছে কি? প্রশ্ন করেছিলাম। উত্তরে তাজ্জব হয়েছিলাম কিছুটা। প্রতিটা ক্রেতার ডেমোগ্রাফির উপর ভিত্তি করে প্রতিবারই নতুন গল্প ফাঁদতেন তিনি। প্রতিটা সেলসের আগে এই রিহার্সাল তাকে নিয়ে গিয়েছিলো নতুন মাত্রায়। আমার অনুরোধ প্রতিটা প্রেজেন্টেশনের আগে কমপক্ষে রিহার্সাল করবে দুবার। টীম মেম্বারদের সাথে সিনক্রোনাইজেশন না থাকলে চোখে লাগে বেশি। মনে হয় প্রজেক্টটাকে সিরিয়াসলি নাওনি তোমরা। প্রেজেন্টেশনের সময় টীম লিডারকে অন্য সবার কন্ট্রিবিউশনের কথা বলতে হবে প্রথমেই। আর সবাই দেখবে ‘টেড’ এর বক্তৃতা, এরাই পাল্টাচ্ছে পৃথিবীকে। লার্ন ফ্রম দ্য লিডারস! গেট দ্য বেস্ট অফ দ্য ওয়ার্ল্ড!

গ. দশ মিনিট, অনেক সময়। ‘বিটিং অ্যারাউন্ড দ্য বুশ’ মানে হচ্ছে তোমরা প্রিপারেশন নাওনি ভালো করে। সময়ের ডিস্ট্রিবিউশন হাতের দখলে রাখার জন্য স্লাইডশোর রিহার্সাল টাইমার ব্যবহার করলে ভালো। সবার দরকার নেই ধন্যবাদ দেবার, টীমলিডারই যথেষ্ট। নিজের অ্যাপ সম্পর্কে বলার সময় বাইরের বিশ্বে কি হচ্ছে সেটা বলতে অর্ধেক সময় নিয়ে ফেললে নিজেরই ক্ষতি। উদাহরণ হিসেবে গেমস এনভায়রনমেন্টে ফিজিক্সের জন্য বিশ্বের সব ইঞ্জিনের গল্প না দিয়ে তুমি কোনটা ব্যবহার করেছ আর কি কারণে সেটা ব্যবহার করেছ সেটা বললেই হয়ে যায় কিন্তু। প্রোটোটাইপ খুবই প্রয়োজনীয় – যা জুরিদের একটা পার্সপেক্টিভ তৈরী করতে সাহায্য করে। আমাদের মনের অজান্তে নতুন একটা পার্সপেক্টিভ ‘পুশ-ইন’ করতে পারলে তোমাদেরই লাভ। সীইং ইজ বিলিভিং।

ঘ. একটা ভালো আইডিয়া পাল্টে দিতে পারে পৃথিবীকে। সময় পেলে দুহাজার পাঁচের নিউজউইকে প্রকাশিত গুগলের দশটা গোল্ডেন রুলস দেখে নিও। অনলাইনেও পাবে। ক. ডোন্ট বি ইভিল, সব মানুষই তার ভিউপয়েন্ট দেবার ব্যাপারে প্যাশনেট থাকে। তার মানে এই নয় যে ওর অ্যাপের আইডিয়া আমার থেকে খারাপ। অন্যকে ভালো বললে সেটা ফেরৎ আসে। লার্ন টু অ্যাপ্রেসিয়েট আদার্স। খ. ইট ইয়োর ওন ডগ ফুড, যতই খারাপ হোক না কেন – ব্যবহার করবে নিজের প্রোডাক্ট। ফলে মহব্বত তৈরী হবে সেটার জন্য। জিমেইলের বেটা টেস্টার ছিলাম আমি। ইট ওজ টেরিবল! গুগলের নিজস্ব এমপ্লয়ীদের সবাই ওই বেটা টেস্টিংয়ের জিনিসটা হজম করেছিলো বলেই আজ এটা এক নম্বর ইমেইল সার্ভিস। এটা কাজ করে না আর ওটা কাজ করে না বলে ক্ষান্ত থাকেনি তারা, সেটা ফিক্স করেই ঘুমাতে গিয়েছে তিন দিন রাতের পর।

ঙ. ফাইট দাও গ্লোবাল স্কেলে! তোমার কোম্পানির রিজিওনাল অফিস হবে নিউ ইয়র্ক আর লন্ডনে। হেডকোয়ার্টার কিন্তু ঢাকায়। আর আরেকটা কথা বলি তোমাদের, থিঙ্ক গ্লোবাল, অ্যাক্ট লোকাল! পৃথিবীর ভালো জিনিসগুলো নিয়ে আসো আমাদের কাজে। ভালো লার্নিং কার্ভ ছাড়া টেকা দুস্কর। লিপফ্রগিং না করলে মরে যাব আমরা! অন্যের বাজার হয়ে আর কতদিন! চলে যাও – আফ্রিকাতে! কিছুটা দেরী হলেও কাজ করার অনেক স্কোপ আছে এখনো। বের হয়ে যাও, আজই! গো অ্যান্ড সি দ্য ওয়ার্ল্ড!

চ. পৃথিবী আজ তোমাদের হাতে। এর দেখভাল কিন্তু বর্তায় তোমাদের উপর। কোনোরকমে দুহাজার তিরিশ সাল পার হলেই বাঁচবে একশো বিশের বেশি। কি করবে তোমরা ওই বাড়তি সময়? মাসলো’র তত্ত্বের ‘সেলফ অ্যাকচুয়ালাইজেশন’ ধাপে পৌছে যাবে সবাই। বিল গেটস যা করছেন এখন। মহৎ লোকে ভরে যাবে পৃথিবী। আর এখনকার জন্য, ফোকাস অন পিপলস এমপাওয়ারমেন্ট, (ভালো করো মানুষের, একটা কাজের অ্যাপ পাল্টে দিতে পারে মানুষের জীবন), অল এলস উইল ফলো!*

ধন্যবাদ, আজ আমাদের পাল্টে দেবার জন্য!

* স্ক্রিপ্টটা লেখার সময় বার বার মনে পড়ছিল জেনিফার পলকার ‘কোডিং আ বেটার গভার্নমেন্ট’ স্পীচটার কথা। অ্যাপ ডেভেলপাররা তৈরী করছে কমিউনিটি অ্যাপ – মানুষের জন্য, সরকারকে যুক্ত করছে জনসাধারণের সাথে। স্বচ্ছতা তৈরী করতে সাহায্য করছে চমৎকার সেই প্রসেসগুলো। মানুষের মতো দোষগুনেও সরকার। দোষারোপ না করে সরকারকে সাহায্য করার মানসিকতাই পাল্টাবে আমাদের। আমাদের মতোই মানুষই চালাচ্ছে সরকার, বিচ্ছিন্ন কেউ নয়। চলুন, অ্যাপ ডেভেলপাররা সরকারকে কিভাবে সাহায্য করছে দেখে আসি বরং।

Read Full Post »

UNIX was not designed to stop its users from doing stupid things, as that would also stop them from doing clever things.

– Doug Gwyn

১৭৬.

অ্যাপ নিয়ে কম ঘাটাঘাটি হয়নি। মোবাইল অ্যাপের কথা বলছি। ব্যাকগ্রাউন্ড দেই একটু। নব্বইয়ের দিকে ইউনিক্সের হেডলেস সার্ভার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এর কার্নালের প্রেমে পড়া। বিরানব্বইতে এলো লিনাক্স। পায় কে আমায়। আমার ডেস্কটপ থেকে কিভাবে যেনো পড়ে গেলো উইন্ডোজ ৩.১১| চুরানব্বই সাল বলে কথা। না চেনে নেটওয়ার্ক কার্ড আর না চেনে কোনো হার্ডওয়্যার। মনোযোগ দিলাম কার্নালের দিকে। এই প্যাচ আর ওই প্যাচ নিয়েই কাটতো দিন। না ভাই, ওই ‘প্যাচ’ না কিন্তু। আর, হবে না মানে? হতেই হবে। এই ডিভাইস চেনে না মানে? ইউজনেট আছে কি জন্য? ঠিক ঠিক তৈরী করে ফেলবো ডিভাইস ড্রাইভার! আর সেকারণে ইন্টারনেটের উপরে রয়েছে অসম্ভব মায়া। আতুর ঘর থেকে দেখে আসছি একে। সত্যিকারের মানুষ করেছে আমাকে। বলুন আমাকে, কি পারছেন না এমুহুর্তে। আ’ল ডেলিভার! আমার জানার দরকার নেই সবকিছুর। আমি জানি একটা জিনিস, কে পারে কোন কাজটা। আর আছে ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্সের ষ্টিপ লার্নিং কার্ভ। আসল ব্যাপার হচ্ছে যেকোনো জিনিসপত্র দ্রুততম সময়ে  শেখার জন্য সেই ‘দ্রুততম সময়ে শেখার টেকনিক’টা জানতে হবে আগে। দেবো নাকি একটা পয়েন্টার? ঠেকায় কে আমায়? ক্রাউডসোর্সিং নিয়ে আর নাই বা বলি!

১৭৭.

আমাদের সময়ে এই নিউজগ্রুপগুলো ছিলো গডসেন্ড! ইউনিক্স টু ইউনিক্স কপি মানে ইউইউসিপির উপর এনএনটিপি পোর্ট ১১৯ কাজ করতো মধুর মতো। আর হাতে খড়ি হলো এমবেডেড লিনাক্স প্রোগ্রামিংয়ে। হাইগেইন এন্টেনা থেকে শুরু করে কোথায় ব্যবহার হয় না এটা? বাসার কোন কোন জিনিস এমবেডেড লিনাক্সে চলে বলে ধরা খাব নাকি? দূর থেকে রুট এক্সেস নিয়ে বাসাকে হ্যাক করানোর মানে হয় কোনো! বিজিবক্স, ইউনিক্সের পজিক্স এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড্রয়েডেও চলে বলে আরো ভয়। মাইক্রোকন্ট্রোলারগুলো এমবেডেড লিনাক্স দিয়ে চালানো যায় চমৎকার! দুনিয়া হাতের মুঠোয়।

১৭৮.

দুহাজার দশের শুরুতেই কিনলাম একটা অ্যান্ড্রয়েড হ্যান্ডসেট। এইচটিসির ফ্ল্যাগশীপ প্রোডাক্ট। বেকুব (মহা বেকুব বলে কথা) প্রোডাক্ট ম্যানেজার এর রম ডিজাইন করলো মাত্র পাঁচশো বারো মেগাবাইট দিয়ে। পুরো অপারেটিং সিস্টেম লোড হবার পর থাকে মাত্র একশো মেগাবাইটের মতো খালি। বাকি অ্যাপসের জন্য ওই স্পেস! আমি হলে ফায়ার করে দিতাম প্রোডাক্ট ম্যানেজারকে! অবশ্য দুহাজার নয়ে ওর বেশি চিন্তা করতে পারেনি ব্যাটা। ওই সমস্যাটা ছাড়া এই এইচটিসি ডিজায়ারের তুখোড় হার্ডওয়্যার তাকে করেছিলো ‘প্রোডাক্ট অফ দ্য ইয়ার’| হাইডেফিনেশন ভিডিও রেকর্ড করতে পারতো নিমিষেই হ্যান্ডসেটটা। তুখোড় হার্ডওয়্যারের কারণে আমার মতো আরো বেকুব(!) যারা কিনেছিলো যন্ত্রটা, ফেলে দিতে পারছে না কোনোভাবেই। বড় কথা, ফেলে দিতে চাই – নষ্ট হয়না কেন জানি। এইচটিসি ছেড়েছিল ওটা অ্যান্ড্রয়েড ২.২ দিয়ে (কোডনেম ফ্রয়ো)।

১৭৯.

পরের ভার্সন জিনজার ব্রেডটাকেও ঠিকমতো দিতে পারেনি রমের স্পেস ছিলো না দেখে। ব্যবহারকারীদের রোষে পড়ে কোনো রকমে অনেকগুলো বিল্টইন অ্যাপস ফেলে একটা ডেভেলপার ভার্সন বের করে দেয় – একটা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে। ওটা আবার ওভার দ্য এয়ার (ওটিএ) আপডেট ছিলো না। গা শিউড়ে উঠছিলো আমার অ্যান্ড্রয়েড ২.২ নিয়ে বাকি জীবন পার করার চিন্তা করতে। আমার মতো ধরা খাওয়া অন্য এইচটিসি ডিজায়ারের মালিকদের আছে ফোরাম। নির্যাতিত স্বামীদের ফোরামের মতো। চিন্তা কি আমার? সমস্যা হলো পুরানো এসডি কার্ডটা নিয়ে। নতুন কিনতে যতো আপত্তি আমার। কিছুদিন লিনাক্স চালালাম ওটার ওপর। খারাপ না। অ্যাপসের স্বল্পতা হেতু ফিরলাম আবার অ্যান্ড্রয়েডে। তবে ৪.২ মানে জেলিবিন নিয়ে। ফোন পুরনো হয়েছে তো কি হয়েছে – ওর কি শখ নেই? চালু হতে সময় নেয় একটু, এই যা। সকালে ঘুম থেকে উঠতে তো দেরী করি আমরাও। দোষ কোথায় ওর? যন্ত্রের কি থাকতে নেই মন?

Read Full Post »