I prefer for government to err toward less regulation, lower taxation, and free markets. And I’m a radical free trader.
– Mark McKinnon
৬৬০.
‘বেশি ইন্টারনেট ছড়ানো’ দেশগুলোর কেসস্টাডি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ওদের ব্রডব্যান্ড ‘ডিফিউশন’এ সাপ্লাই আর ডিমান্ড দুটো সাইডের ফ্যাক্টরগুলোকে কাজ করিয়েছে এক সাথে। সাপ্লাই সাইডে যখন তৈরি করেছে নেটওয়ার্ক ইনফ্রাস্ট্রাক্চার, একই সাথে ওই ব্রডব্যান্ড সার্ভিসগুলোকে সবাই যাতে ব্যবহার করতে পারে সেটার নীতিমালা করতে ভোলে নি দেশগুলো। এতে বেড়েছে ব্রডব্যান্ডের গ্রহনযোগ্যতা। বেড়েছে সার্ভিসগুলোর পরিচিতি, সরকারী সব সার্ভিস চলে গেছে অনলাইনে। ব্রডব্যান্ডের ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে গিয়ে এই ডিমান্ড সাইডের কাজ। আমাদের সাপ্লাই সাইডে বেশ কাজ হলেও ডিমান্ড সাইডে কাজ হয়েছে কম। ইন্টারনেটের সজলভ্যতা আসেনি এর দামের কারণে।
৬৬১.
সাপ্লাই আর ডিমান্ড সাইডের গল্পগুলোর মধ্যে ‘ইন্টারঅ্যাকশন’ না হলে বিপদ। দেখা গেছে সাপ্লাই সাইড ঠিকমতো কাজ করলে সেটাই বাড়িয়ে দেয় ডিমান্ড সাইড। আবার ডিমান্ড সাইড বেড়ে গেলে সাপ্লাইয়ের পাইপ মোটা হতে বাধ্য। ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়লে ওর সরবরাহ না বাড়ার কোন কারণ নেই। তবে, এই ব্যাপারগুলোর ‘ইন্টারঅ্যাকশন’ ওনেক সময় এমনি এমনি হয় না। সেটার জন্য একটা পরিবেশ লাগে। ‘মার্কেট ফেইলুর’ মানে বাজার ঠিকমতো কাজ না করলে কাজ করবে না জিনিসগুলো। বাজারে একটা বড় প্রোভাইডার ধসিয়ে দিতে পারে পুরো বাজার। আর সেকারণে সময়ে সময়ে বাজারে ‘প্রতিযোগিতা’ আছে কিনা সেটা দেখার টূল ব্যবহার করে কম্পিটিশন এজেন্সি অথবা রেগুলেটর। এটা ঠিক যে, ব্রডব্যান্ড ‘ডিফিউশন’ মানে এর ছড়ানোর জন্য দরকারী ‘ক্রিটিক্যাল মাস’ না হলে ব্যবসা টিকবে না। এখানে ‘ক্রিটিক্যাল মাস’ হচ্ছে একটা দরকারী ব্যবহারকারীর সংখ্যা। ধরুন, কয়েক লাখ। ঐটাই ব্যবসাকে দেবে একটা ‘টেকসই’ গ্রোথ।
৬৬২.
আবার দুটো ফ্যাক্টরই যদি একই সময়ে অর্থনীতিতে দেখা যায়, সেটা তার পুরো রেজাল্ট নাও দিতে পারে। যদি না দুটো সাইড পুরোপুরি ‘কোওর্ডিনেটেড’ না থাকে। দুটো সাইডের ‘সমন্বয়’ ঠিকমতো না হলে দেখা যাবে তৈরি হচ্ছে ব্রডব্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাক্চার, অনেক দেরিতে। আবার সাপ্লাই সাইড ঠিকমতো তৈরি না হলে এটা ধাক্কা খাবে ডিমান্ড তৈরিতে। বাড়বে না ব্যবহারকারী। তৈরি হবে না ‘ক্রিটিক্যাল মাস’। তৈরি হবে না ‘টেকসই’ অর্থনীতি। আর সেকারণেই, ব্রডব্যান্ড বেশি ‘ছড়ানো’ দেশগুলো প্রথমেই হাত দেয় ‘কমপ্রিহেনসিভ’ নীতিমালাতে। পুরো দেশের ‘দর্শন’ চলে আসে ওর মধ্যে। সাপ্লাই আর ডিমান্ড সাইডের সব ধরনের সমন্বয় পরিষ্কার ভাবে বোঝা যায় ওই নীতিমালাগুলো পড়লে। তবে দুটো দেশ এক ‘রুট’ – মানে এক রাস্তা না ধরলেও বেশ কয়েকটা মোটা দাগের ‘স্ট্র্যাটেজি’ মেনে নিয়েছে প্রায় সবাই। বিশ্বব্যাংক আর টেলিকম্যুনিকেশন ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের ডকুমেন্টেশনও তাই বলে। ব্রডব্যান্ড টূলকিটের হিসেবে ফিনল্যান্ড, ফ্রাণ্স, জাপান, ওমান, সিংগাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোন না কোন ভাবে কাজ করিয়েছে এই বড় দাগের স্ট্র্যাটেজিগুলোকে।
ক॰ ‘ওপেন-অ্যাক্সেস’ হোলসেল নেটওয়ার্ক তৈরি
খ॰ বেসরকারি ইনভেস্টমেন্ট আনার জন্য ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা তৈরি
গ॰ ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’র মতো ‘সবার জন্য ব্রডব্যান্ড’ ব্যাপারটা ঢোকানো হয়েছে সর্বোচ্চ নীতিমালায়
ঘ॰ ব্রডব্যান্ডের সব সার্ভিসের ডিমান্ড বাড়ানোর জন্য সবকিছুকে অনলাইনে নিয়ে এনে পাইপের দাম সস্তা করা
ঙ॰ পিপিপি, পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশীপ দিয়ে বড় বড় ইনফ্রাস্ট্রাক্চার তৈরিতে বেসরকারি খাতকে উদ্বুদ্ধ করা, এক কথায়, মধুর চাক বানানো
চ॰ আঞ্চলিকভাবে অথবা ‘নেশনওয়াইড’ ব্যবসায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের তাদের ব্যবসা তৈরিতে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দরকার মতো ভর্তুকি দেয়া
ছ॰ বড় হোলসেল প্রোভাইডার থেকে কিনে ছোট ছোট কোম্পানীগুলোকে সেই ‘রিসোর্স’ ‘রিসেল’ করার জন্য প্রণোদনা দেয়া, আর বড়রা না দিতে চাইলে সেটা বাধ্য করা
ঝ॰ * ‘লোকাল লুপ আনবান্ডলিং’য়ে বড়দের বাধ্য করা যাতে কিছু ব্যবসা করতে পারে ছোটরা
৬৬৩.
যে যাই বলুক, সাপ্লাই সাইডের নীতিমালা প্রণোদনা দেয় বেসরকারী খাতকে – ইনভেস্ট করো নেটওয়ার্কে। এখানে ইনভেস্ট করলে এটা ফ্রী! আর নেটওয়ার্কে ইনভেস্টমেন্ট মানে হাজার কোটি টাকার খেলা। ওই টাকার জন্য দরকার প্রাইভেট সেক্টরকে। ওদিকে ডিমান্ড সাইড নীতিমালা সরকারকে বাধ্য করে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ আর ব্রডব্যান্ড সার্ভিসগুলোর ওপর মানুষের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে। এটা চলে লম্বা সময় ধরে, ফলে সরকারকে এটাকে তৈরি করতে হয় শুরুতেই।
[ক্রমশ:]