Feeds:
Posts
Comments

Archive for April, 2014

I am often accused of interfering in the private lives of citizens. Yes, if I did not, had I not done that, we wouldn’t be here today. And I say without the slightest remorse, that we wouldn’t be here, we would not have made economic progress, if we had not intervened on very personal matters – who your neighbour is, how you live, the noise you make, how you spit, or what language you use. We decide what is right. Never mind what the people think.

― Lee Kuan Yew

৪৩৯.

লিখতে পারছিলাম না বলতে হাত চুলকাচ্ছিলো কয়েকদিন ধরে। আবার লিখতে বসলে কি লিখবো সেটাও ভেবে সারা। হাজারো টপিক ঘুরছে মাথায়। কতো কিছু করার আছে আমাদের – আবার, সব কিছুর হবার দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। ল্যান্ড অফ অপুর্চুনিটি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের কথা আসলেও কাজ করতে চাইলে আসল দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। অনেক কিছুই হয়নি এখনো। উন্নত বিশ্ব থেকে শুরু করে আফ্রিকার অনেক দেশ ঘোরার সুবাদে মিসিং লিংকগুলো বোঝা যায় সহজে। মিসিং লিঙ্কের মধ্যে কয়েকটা জিনিস নিয়ে আমি খুবই আশান্বিত। সাত বছর আগে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)তে আসতে পারার সুবাদে ব্যাপারটা ভাবিয়েছে আমাকে। অনেক অনেক বেশি।

৪৪০.

আমাদের সমস্যা কোথায়? আপনি কোনো কিছু করতে চাইলে সেটার কোনো নীতিমালা পাবেন না। প্রায় সবই অলিখিত। আর অলিখিত থাকার কারণে ‘শর্টকাট’ নেবার একটা প্রবণতা থাকে। আমি নিজে সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে অন্য অফিসে কাজ করতে গেলে আমার পরিচিত মানুষ খুঁজি। আর ওটাই কষ্টকর। কেন আমাকে খুঁজতে হবে পরিচিত মানুষকে? এটাতো আমার দেশ। বিদেশ তো নয়। কারণ, ওকাজটা করার জন্য প্রোসিডিউরটা নেই তাদের সাইটে। নেই কোনো দৃশ্যমান বিলবোর্ড। কি কি কাগজ জমা দিতে হবে, কতদিন লাগতে পারে, কার সাথে কথা বলতে হবে, ওসব ঠিকমতো না লেখা থাকার কারণে যতো ভোগান্তি। নীতিমালার কাজও কম হয় আমাদের। আবার নীতিমালাগুলো করিয়ে নেয় বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা। সাহায্যের একটা বড় শর্ত থাকে স্বচ্ছ নীতিমালা তৈরী করা। মজার কথা হচ্ছে ওই নীতিমালাগুলোর বেশিরভাগ আসে বিদেশী কনসালটেন্টদের হাত দিয়ে। আমরা আমাদের রেকোয়ারমেন্ট এনালাইসিস না করতে পারার কারণে ওরাই ‘আমরা কি চাই’ সেটা ঠিক করে দেয়। আমাদের ‘কম্পিটেন্স’ কি কম? আমরা কি পারি না লিখতে? পলিসি ডকুমেন্ট? কাজ করার পদ্ধতিগুলো? সহজভাবে?

৪৪১.

সামরিক বাহিনীতে আবার সবকিছুই থাকে লেখা। না লিখে যাবে কোথায়? মানুষের জীবন নিয়ে যাদের দৈনন্দিন কাজ তাদের না লিখে থাকার জো নেই। প্রায় আদিমতম পেশা হওয়াতে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি রিসার্চ জ্ঞান আছে তাদের। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে ‘লেসনস ফ্রম মিলিটারি’র গল্পগুলো বড় বড় কোম্পানিকে শিখিয়েছে অনেককিছু। এখন সবকিছুই চলে যুদ্ধক্ষেত্রের ধারনায়! আমি সামরিক বাহিনীর টেলিযোগাযোগ নিয়ে কাজ করাতে সৈনিকদের টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত প্রশিক্ষণের লেসন প্ল্যান লিখে শুরু আমার পলিসি ড্রাফটিংয়ের জীবন। একই গল্প দুবার বলতে গেলেই বিরক্তি লাগতো আমার। কাজচোরাদের কাজ একটাই। একটা কাজ বার বার না বলে ওটাকে কোথাও লিখে ফেলা। তারপর ওটাকে সময়মতো সার্কুলেট করা। লেজিনেস ইজ দ্য ফাদার অফ ইনোভেশন। লিখতে লিখতেই শিখে গেলাম কিভাবে তৈরী করতে হয় পলিসি। কাজের সুবিধার্থে তৈরী হয় নীতিমালা। মানুষের অসুবিধা করে নয়।

৪৪২.

জীবনের শুরুতে একটা কমোডর কম্পিউটারের ম্যানুয়াল হাতে পাওয়াতে মাথা খারাপ হবার যোগাড় হয়েছিলো প্রায়। সত্যিকারের অডিও ক্যাসেট দিয়ে প্রথমে লোড হতো অপারেটিং সিস্টেম, পরের ক্যাসেটটায় থাকতো অন্য এপ্লিকেশন। কম্পিউটারটা হাতে পেয়ে না চালাতে পারার কষ্টে বসলাম ম্যানুয়াল নিয়ে। ওমা, অসম্ভব কথা! এটা পড়লে ক্লাস থ্রী’র বাচ্চাও চালাতে পারবে এই মেশিন। আর মেশিনটা সবাই চালাতে পারলেই বাড়বে বিক্রি। ওই ম্যানুয়ালগুলো তৈরিতে কোটি টাকা খরচ করেছিলো হয়তোবা। জীবনের মিশন হয়ে গেলো ম্যানুয়াল লেখা। বড় হয়ে একটা বড় সময় থাকতে হয়েছিলো মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণে। ওদের ম্যানুয়ালগুলো দেখে তো চোখ ছানাবড়া। স্টেপ বাই স্টেপ, ভুল হবার জো নেই। এয়ারবাস এ-৩৮০’র ম্যানুয়াল দেখে তো আরো মুগ্ধ! বলে রাখি একটা কথা, অন্য বইয়ের সাথে ম্যানুয়াল পড়া আমার নেশা। আরটিএফএম! গুগল ‘আরটিএফএম’।

৪৪৩.

সারাদিন বিটিআরসি’র অফিসে বসে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে কাজে ঢুকে থাকাটাই ছিলো আমার লার্নিং গ্রাউন্ড। মজার কথা, ছুটিতেও যেতে চাইতাম না। শিখতে পারাটাই হচ্ছে ওখানকার সবকিছু। ওখানে টেবিলে মাথা লাগিয়ে রাখলেও আপনি শিখবেন অনেককিছু। আপনি শিখতে না চাইলেও আপনার স্টেকহোল্ডারদের চাপে শিখে যাবেন আপনি। ওদের কাজের দরকারে শিখিয়ে ছাড়বে আপনাকে। ধরা যাক, আপনি সাতশো মেগাহার্টজ ব্যান্ডের স্পেকট্রাম ছাড়তে চাইছেন বাজারে। প্রথম প্রশ্ন, কিভাবে ছাড়বেন? তারপরের কোটি প্রশ্নের কয়েকটা এমন হতে পারে, কবে ছাড়বেন, দাম কতো হলে ছাড়বেন, কোন পদ্ধতিতে ছাড়বেন, কোনটায় ভালো হবে দেশের, ইকুইপমেন্ট আছে কিনা বাজারে, ডিভাইস ইকোসিস্টেম তৈরী কিনা ইত্যাদির উত্তর নিয়ে ঘুম কেড়ে নেবে আপনার। পোস্ট গুগলের যুগে এটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। হাজারো রেগুলেটরি ডকুমেন্টেশন হচ্ছে প্রথম ধাপ। দেশ বিদেশের রেগুলেটর আর আইটিইউ’র বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দিন আপনার উইশলিস্ট। সকাল হতেই চলে আসবে শত শত লিংক। সবাই চায় তাদের দেশের রিসার্চের একটা ভালো আউটপুট যাতে পায় আরেকটা দেশ। আর বাংলাদেশকে সাহায্য করতে চায় অনেক দেশই।

৪৪৪.

একটা চিঠি ছেড়ে দিন অপারেটরদের কাছে। প্লাস, আপনার ধারনাটা দিয়ে ছেড়ে দিন ডিভাইসের ম্যানুফ্যাকচারারদের কাছে। উনারা জানেন কোথায় কি হচ্ছে, কোন টাইমলাইনে হচ্ছে, কোন রেগুলেটর কিভাবে কাজ করছে। কোথায় কি হারে কতো টাকা রিসার্চে ইনভেস্ট হচ্ছে। সব দেশের রেগুলেটররাও নির্ভর করেন অপারেটর আর ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারারদের ওপর। গ্রাউন্ড লেভেল স্টাডির জন্য। মানুষ কি চায় সেটা উনারা ছাড়া আর কে জানে? আর অ্যাপেলের মতো কোম্পানি হলে তো কথায় নেই। গ্রাহক খাবে না মানে? গ্রাহক কিভাবে খাবে সেটা নিয়ে ওর রয়েছে বিলিয়ন ডলারের রিসার্চ। সাত বছরের স্প্যানে শুনেছি দেশী বিদেশী হাজারো কোম্পানির বিজনেস প্ল্যান। আইটিইউতে জমা পড়ে হাজারো বিজনেস কেস। ওই ডকুমেন্টগুলো নিয়ে তৈরী করেছি ডিজিটাল লাইব্রেরি। হাজারো রিসার্চ। কারণ, ওই রিসার্চই সাহায্য করে পলিসি ফ্রেমওয়ার্কে।

৪৪৫.

আমাদের একটা পলিসি ডকুমেন্ট তৈরিতে প্রথমে যে জিনিসটার অভাব অনুভব করি সেটা হচ্ছে তার পেছনের রিসার্চ আর ডাটার অপ্রতুলতা। সরকারীভাবে আমাদের ইউনিভার্সিটিগুলোকে কাজে লাগানো হয় না রিসার্চে। অথচ প্রতিনিয়ত খুব কমই রিসার্চ পেপার জমা পড়ছে দেশের সমস্যা নিয়ে। আমাদের দেশের সমস্যা নিয়ে কয়টা পিএইচডি দেয়া হয়? আমি তো নিজেই চাই কয়েকটা করতে। আমাদের দেশের সমস্যা নিয়ে অন্য দেশের ইউনিভার্সিটি থেকে প্রচুর পিএইচডি নিচ্ছে বিদেশীরা। আমার কথা একটাই। অনেক মানুষ আমাদের, বিশাল বাজার – এখানে কাজ না হয়ে যাবে কোথায়? পলিসি ডকুমেন্টেশনটা তৈরী করে নেয়া যেতে পারে ইউনিভার্সিটি থেকে। আর এখন পাবলিক কনসালটেশনের যুগে পলিসি ড্রাফট করে দেবে স্টেকহোল্ডার অথবা সাধারণ মানুষ। উইকিপিডিয়ার মতো। কিন্তু কাজ করার নিয়মটা সাইটে লেখা থাকলে ওই কাজ করার ‘লাইসেন্স’টার ওপর থাকবে সবার সমান এক্সেস। কম্পিটেন্ট যে, পাবে সে। পরিচিতি থেকে নয়।

৪৪৬.

যেখানেই যাওয়া হয় সেখানের একটা ‘টেক-আউট’ নিয়ে আসার চেষ্টা করি। হোক সেটা আফ্রিকার একটা ছোট দেশ অথবা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। খোঁজার চেষ্টা করি ওরা এমন কিছু কি করেছে যেটা এখনো করতে পারিনি আমরা। সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলাম কিছুদিন আগে। এয়ারপোর্টে কিনেছিলাম লি কুয়ান উ’র বই, ফ্রম থার্ড ওয়ার্ল্ড টু ফার্স্ট: দ্য সিঙ্গাপুর স্টোরি: ১৯৬৫-২০০০। বইটা পড়ে পানি এলো চোখে। আজ গভার্নেন্সের ওপর পুরো পৃথিবীর মানুষ পড়তে যায় ওখানে। আমাদের সরকারী কর্মকর্তারাও যান ওখানে পড়তে। আমারও একটা সুযোগ হয়েছিলো টেলিযোগাযোগ রেগুলেশনের ওপর পড়তে যেতে – এই সিঙ্গাপুরে। যাদের খাবার পানিটাও কিনে খেতে হয় পাশের দেশ থেকে – তাদের বিলাসিতা সাজে না। পলিসিতে সাংঘাতিক শক্ত এই দেশটা।

৪৪৭.

হাটিহাটি পা করে পলিসি লেখা শুরু করলেও ওই কোর্সটা পাল্টে দেয় আমার জীবন। নিজের দেশের নীতিমালা লিখতে গিয়ে পড়তে হয়েছে হাজারো দেশী বিদেশী নীতিমালা। আমাদের নীতিমালাগুলো এখনো উদ্দ্যোক্তাবান্ধব নয়। আমরা সরকারী কর্মকর্তা কিছু কিছু জিনিস ইনোভেশনের ওপর ছেড়ে দিতে পাই ভয়। মাঝে মধ্যে মনে হয় দেশটা খালি আমার সম্পত্তি। প্রতিটা ক্লজ দেখে মনে হবে কিভাবে আটকে দেয়া যায় বিজনেসটাকে। হোয়াট’স-আপ অ্যাপটা বিক্রি হয়েছে আমাদের জাতীয় বাজেটের দামের সমান দিয়ে। এটা নিয়ে আমরা থ্রিলড সবাই। বক্তৃতায় ব্যাপারটা বলতে মুখিয়ে থাকি আমরা। কিন্তু এ ধরনের একটা অ্যাপ বাংলাদেশে তৈরী হতো কখনো? ওটার উত্তর চাইবো না আজ। আজ গুগল, পেপ্যাল বাংলাদেশে আসতে চাইলেও আসতে পারছে না কেন? এক বিদেশী তো মুখের ওপরে বলেছিলেন, এই ‘ড্রাকোনিয়ান’ পলিসি নিয়ে বেশি আশা কর কিভাবে?

৪৪৮.

ওই নীতিমালা লেখার উপর একটা ‘হাউ-টু’ জাতীয় বই নিয়ে আসছি শিগগিরই। প্রতিটা অর্গানাইজেশন থাকা উচিত তাদের নিজস্ব নীতিমালা। পাবলিশড! আর সে নীতিমালা কিভাবে লিখতে হবে – সেটার হাতেখড়ি হবে সামনে। দেশের নীতিনির্ধারনী থেকে শুরু করে সাধারণ ব্যবস্যার শুরুতে লাগে একটা দর্শন। ওই দর্শনটাকে অর্জন করার জন্যই তৈরী হয় পলিসি বা নীতিমালা। জাপানে একটা ডিম কিনে খেতে গেলেই চোখে পড়বে এক বিশাল ম্যানুয়াল। মানে ডিমটা ছেলার কৌশল থেকে শুরু করে ওটাকে কিভাবে ভাঙ্গতে হবে, কোন জায়গায় ধরতে হবে আর কিভাবে মুখে পুড়তে হবে সবই লেখা আছে ওই ম্যানুয়ালে। ওটা না দিলে কি হতো না? হতো। সবকিছু লিখে দেয়াটাই পড়ে একটা নিয়মে। ডিটেইলিং কিন্তু একটা সংস্কৃতি। সেটা আসে সবকিছু লেখার সংস্কৃতি থেকে।

বানাবো আপনাকে পলিসি অ্যান্তপ্রেনর, নীতিমালা উদ্দ্যোক্তা। জন কিংডনের ভাষায় ‘পলিসি উইনডো’ আর ‘পলিসি অ্যান্তপ্রেনর’ গল্প নিয়ে আসছি সামনে।

Read Full Post »

The best customer service is if the customer doesn’t need to call you, doesn’t need to talk to you. It just works.

– Jeff Bezos

৪৩১.

টেলিযোগাযোগ রেগুলেশন শিখতে গিয়ে কথা হচ্ছিলো অনেকের সাথে। দুহাজার সাতে বিটিআরসিতে আসার আগেই প্রায় হেফ-য করে ফেলেছিলাম বিশ্বব্যাংকের আর আইটিইউ’র কালজয়ী বইটা। টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি হ্যান্ডবুক। মনের টানে লিখতাম টেকনোলজি নিয়ে। নতুন প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে যাবার আগে বাজার সার্ভে করতাম। আসলো নতুন প্রযুক্তি, আর সেটা চলছে না আমাদের মানে বাংলাদেশের বাজারে। তাহলে ওটা নিয়ে লিখতে হবে অন্য ধাঁচে। সমস্যা কোথায়? সমস্যা নীতিমালায়। ইটা বা ওটা করা যাবে না। মানা করেছে কে? সবাই দেখাতো আমার এই অফিসটাকে। আর সে থেকে ওই বই পড়া। তখনও জানতাম না এই অফিসে আসতে হবে আমাকে – একদিন।

৪৩২.

সৃষ্টিকর্তা নিয়ে আসলেন এই অফিসে। দুহাজার সাতে। হাজারো জ্ঞান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এখানে। আগ বাড়িয়ে জানতে চাইলাম সবকিছু। গেলাম সবার কাছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন এই অফিসের সবাই। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) আর অন্য সব বাইরের অর্গানাইজেশনের ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করতে গিয়ে অন্য রেগুলেটরি এজেন্সিগুলোর সাথে কথা বলতে হতো প্রতিনিয়ত। বুঝতে পারছিলাম ওরা পাল্টে গেছে অনেক আগে। টেলিকমিউনিকেশন, মিডিয়া মানে তথ্য, ব্রডকাস্টিং আর আইসিটির রেগুলেটর একটাই। টেলিযোগাযোগ, ফ্রিকোয়েন্সি, আইপি, কনটেন্ট আর আইসিটির মধ্যে ফারাক না থাকাতে বেশিরভাগ দেশের রেগুলেটর একটাই। রেগুলেটর নামটাও যাচ্ছে উঠে। কারণ এটা আসলে ‘ফ্যাসিলিটিটেটর’ রোল। ইন্ডাস্ট্রকে সাহায্য করার রোল। দুরে যেতে হবে না। আমাদের পাশের সিঙ্গাপুরের রেগুলেটরের নাম ইনফো-কমুনিকেশন ‘ডেভেলপমেন্ট’ অথরিটি। হ্যা, ডেভেলপমেন্ট। আর তার কাজ হচ্ছে সবাইকে এক সাথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এদিকে, এনফোর্স করার শক্ত হাত হচ্ছে রেগুলেটর। রেগুলেটর থেকে তার কাজের অংশ সরকার সরিয়ে নিলে বিপদে পড়বে রেগুলেটর আর সরকার। দুর্বল হয়ে পড়ে এনফোর্সমেন্ট। শেষে বিপদে পড়ে দেশ।

৪৩৩.

উন্নত বিশ্বে রেগুলেটর অথবা ফাসিলিটেটর সাধারণত: থাকে অদৃশ্য রোলে। ভালো রেগুলেশন মানে সবকিছুই দৃশ্যমানভাবে লেখা থাকলে সবাই সবাইকে মেনে চলে। আর ওটাই সেলফ রেগুলেশন। মার্কেট ঠিকমতো না চললেই রেগুলেটর দৃশ্যমান হয় – সহযোগিতার হাত অথবা এনফোর্সমেন্ট নিয়ে। আর – গ্রাহক স্বার্থরক্ষায় আছে অনেকগুলো সরকারী এজেন্সি! এখানে আমার একটা ব্যক্তিগত থাম্বরুল আছে। যে দেশের মিডিয়াতে তার রেগুলেটরের নাম যতো কম আসে তার রেগুলেটরি ‘প্রেজেন্স’ ততো শক্তিশালী। বছরে একবারও রেগুলেটরের নাম মিডিয়াতে না এলে বুঝতে হবে সবকিছুই চলছে ঠিক মতো। এটা টেলিযোগাযোগের বা অক্সিজেনের মতো – থাকলে বোঝা যায় না, না থাকলেই সমস্যা। সুতরাং টেলিযোগাযোগ ঠিক আছে মানে রেগুলেটর কাজ করছে ঠিক ঠিক।

৪৩৪.

ফিরে আসি নীতিমালায়। নীতিমালা করার কথা সরকারের, রেগুলেটরের নয়। সরকারের ও ধরনের জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে অনেক সময় তাকে নির্ভর করতে হয় রেগুলেটরের ওপর। আমাদের মতো দেশগুলোর সরকারে তিন চার বছর পর পর সবার বদলি হওয়ার কারণে কোনো ডোমেইন নলেজ দাড়ায় না। অর্গানাইজেশনের ‘মেমরি’ও হয় না তৈরী। ফলে একই রেগুলেটর যখন এনফোর্সমেন্ট আর নীতিমালা তৈরী করে তখন বিপদে পড়ে সবাই। নিজের নীতিমালায় এনফোর্সমেন্ট বিপদজনক। ভুল চোখে পড়ে না। ইন্ডাস্ট্রির দেখভাল করার থাকে না কেউ। সবকিছুই ঠেকে কোর্ট কাচারিতে। ঠেকে যায় উন্নয়ন। বিপদে পড়ে সাধারণ জনগণ। তাদের দিকে দেখার থাকে না কেউই। রেগুলেটর আর ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটা দুরুত্ব তৈরী হয়। ইন্ডাস্ট্রি রেগুলেটরি ‘সার্টেইনিটি’ না পেলে পুরো লাইসেন্সের সময়কাল ধরে বিজনেস প্ল্যান না করে সেটার সময়কাল কমিয়ে নিয়ে আসে। দশ বছর ধরে যে প্রোডাক্টটার দাম হওয়া উচিত পাঁচ থেকে দশ টাকা, সেটাকে পাঁচ বছরের বিজনেস প্ল্যানে আনলে তার দাম দ্বিগুন হওয়াই স্বাভাবিক। আর সেটা বছর দুই হলে তো কথাই নেই। পুরো দামটাই চলে যায় জনগনের ওপর।

৪৩৫.

বিটিআরসিতে থাকার সময়ের বড় একটা সময় গিয়েছে নীতিনির্ধারকদের বক্তৃতার স্ক্রিপ্ট লিখতে গিয়ে। কষ্টকর হলেও লিখতে লাগতো ভালই। লেখার অভ্যাস * থাকায় সবাই ভরসা করতো আমার ওপর। কতো নীতিমালা ‘ঘোস্ট-রাইটিং’ করে দিয়েছি নীতিনির্ধারকদের, নিজের সময়ে। আর নতুন জিনিস লিখতে গিয়ে পড়তে হতো অনেক অনেক বেশি। বেশিরভাগই ছিলো ‘বাংলাদেশ কি মনে করে ওই নতুন বিষয়গুলোতে’। অফিসে বসে লেখা যেতো না বলে ওগুলো লিখতাম সবার রাতে ঘুমানোর পর। ওভারসীজ কল করার চমত্কার সময়। কথা বলতাম অনেকের সাথে। বুঝতে পারতাম কতো পিছিয়ে আছি পড়ে আমরা। ওগুলো আলাদা করে লিখে রাখতাম জার্নালে। সময়মতো শেয়ার করতাম সবার সাথে। ফাইনাল আউটকাম যাবে কমিশন মিটিংয়ে। গতবছর পোলান্ডে হয়েছিলো গ্লোবাল সিম্পোজিয়াম ফর রেগুলেটর। সব রেগুলেটর জড়ো হয় ওখানে। সেবারকার বিষয় ছিলো চতুর্থ প্রজন্মের রেগুলেশন। ওটা লিখতে গিয়ে বেশ কয়েকটা ‘এনলাইটেনড’ রেগুলেটরের সাহায্য নিয়েছিলাম আমি। ঘেমে স্ক্রিপ্টটা বানালেও মনটা ভালো হয়ে গিয়েছিলো টেলি-কনফারেন্সে ওই অনুষ্ঠানটা দেখে। যা লিখেছিলাম সে ধারায় কথা বলছে সবাই।

৪৩৬.

টেলিযোগাযোগ রেগুলেশনের আওতা যাচ্ছে কমে। আইপি বিশ্বে লাইসেন্সের আওতা আসছে ছোট হয়ে। আর বাড়ছে অন্য রেগুলেটরের কাজ। কম্পিটিশন মানে প্রতিযোগিতা আর কনজিউমার প্রটেকশন/ভোক্তা অধিকার কমিশন নিয়ে নিচ্ছে টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরের কাজ। ওই পুরনো টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি হ্যান্ডবুকের দ্বিতীয় চ্যাপ্টারই হচ্ছে প্রতিযোগিতা নিয়ে। অবাক কান্ড না?

৪৩৭.

উদাহরণ নিয়ে আসবো নাকি একটা? মোবাইল বা ল্যান্ডলাইনে প্রতি মিনিটের কল কতো হবে সেটা নির্ভর করে একটা কোম্পানি আরেকটা কোম্পানিকে কতো পয়সায় তার নেটওয়ার্কে ঢুকতে দিচ্ছে তার ওপর। ওটাকে রেগুলেটরি ভাষায় বলে টার্মিনেশন রেট। মানে টেলিটক্ থেকে রবি’র নেটওয়ার্কে কল পাঠাতে হলে রবিকে দিতে হবে আঠারো পয়সা। এটা হচ্ছে টার্মিনেশন রেট। প্রতিটা কলের জন্য এ রেট থাকাতে হোলসেল রেটই এটা। আর হোলসেল হলে ওখানে রেগুলেটর হাত দিতে পারে। আমি বলছি, পারে মানে এই নয় যে হাত দিতেই হবে। সেটা ছেড়ে দেয়া যেতে পারে বাজারের প্রতিযোগিতার ওপর। তবে, হাত দেয়ার কারণ হতে পারে বেশ কয়েকটা। যদি কোম্পানিটা দক্ষতার সাথে তার অপারেশন না চালালে সেটার দায়ভার এসে পড়ে গ্রাহকের ওপর। দক্ষ না হলে তার অপারেশনাল এক্সপেন্ডিচার মানে চালানোর খরচ বাড়বে। ফলশ্রুতিতে কল রেট বাড়বে। আর সেকারণে রেগুলেটর একটা দক্ষ অপারেটর হলে কতো টার্মিনেশন রেট হতো সেটা বের করার চেষ্টা করে। ওখান থেকে বোঝা যায় যে গ্রাহকেরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পয়সা গুনছে কি না?

৪৩৮.

আর এই টার্মিনেশন রেটটা বের করতে দরকার কস্ট মডেলিং। এখানে প্রতিটা কোম্পানির পুঙ্খানুপুঙ্খ সব খরচের হিসেব নিয়ে বের করা হয় ওই ম্যাজিক পয়সাটা। ওরকম একটা এক্সারসাইজ করেছিলাম আমার সময়ে। সময় লেগেছিলো দুবছরের মতো। কমপ্লেক্সিটির কথা চিন্তা করে আমাদের মতো দেশে ওটা প্রতি দুবছর পর পর করা যেতে পারে একেকটা কস্ট মডেলিং। মজার কথা, এটা গ্রাহকস্বার্থের সাথে যায় বলে অনেক দেশের টেলিকম রেগুলেটর ছেড়ে দিয়েছে কম্পিটিশন আর কনজিউমার প্রটেকশন/ভোক্তা অধিকার কমিশনের কাছে। ইন্টারনেটের কতো দাম হওয়া উচিত আর আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার কি কি করতে পারবেন আর পারবেন না তার সব কিছু দেখভাল করে ওই কমিশন। সীইং ইজ বিলিভিং, ঘুরে আসবেন নাকি একটা সাইট থেকে? ‘রেগুলেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ ট্যাবে কমিউনিকেশনের ওপর গণশুনানির রিপোর্ট দেখলে চোখ উঠবে কপালে।

এধরনের কমিশনগুলোর কাজ নিয়ে আসবো সামনে।

* লেখালিখির অভ্যাসটার জন্য স্বরণ করতে হয় আমার সব কমান্ডিং অফিসারদের। যারা আমাকে হাতে ধরে শিখিয়েছেন ড্রাফটিং। ইংরেজিতে। ড্রাফটিং না ভালো হয়ে যাবে কোথায়? তাছাড়া, সেনাবাহিনীতে অফিস যোগাযোগের ওপর চমত্কার কিছু কোর্সও ভিত শক্ত করে দেয় আমাদের।

Read Full Post »

Progress and motion are not synonymous.

Tim Fargo

৪২৫.

জিবুতির ওপর দিয়ে যাবার সময় মনটা ভালো হয়ে গেলো। নিচে কোরাল রীফের মতো স্বচ্ছ পানিটা পাথুরে সাগরের নিচটাও দেখাচ্ছিল কেমন করে। পানি এতো স্বচ্ছ হয় কি করে? চোখ তুলে চাইলাম এয়ারশোর ভিডিওটার দিকে। এক ঘন্টার রি-ফুয়েলিং সহ আঠারো ঘন্টার ইউএন ফ্লাইটটা আর কিছুক্ষণ পর ‘টাচ-ডাউন’ করবে আদ্দিস আবাবাতে। আর সেকারণে ইয়েমেনের ওপর দিয়ে আসা। তাজুরা গালফ ধরে ঢুকতেই এই দৃশ্য। আফ্রিকার হর্ন বলে কথা। মন ভালো না হয়ে যাবে কোথায়? মন ভালো হবার আরো কারণ আছে বেশ কয়েকটা। প্রথম – এই আফ্রিকাতে আসা। ‘ল্যান্ড অফ অপুর্চুনীটি’ বলতে অন্য কোনো দেশ বোঝালেও আফ্রিকা হচ্ছে আমার টপ ফেভারিট! পৃথিবীর দশটা ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং ইকোনমি’র সাতটাই আফ্রিকাতে। এরা কিভাবে উঠছে সেটা শিখতে চাই তাদের দেখে। পড়ছিলাম বেস্টসেলার ‘ব্রেক আউট নেশনস’ বইটা – বিমানে। দুহাজার বিশের মধ্যে স্থানীয় গ্রাহকমাত্রায় চাহিদা তৈরি হবে চার চারশো বিলিয়ন ডলারে। ভাবা যায়?

৪২৬.

দুই নম্বর ফেবারিটের গল্পটা হচ্ছে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সকে ঘিরে। ইউএন চার্টার ফ্লাইটে উঠে জানলাম ফ্লীটটা এসেছে আমার ফেভারিট আফ্রিকান এয়ারলাইন্স থেকে। আগেও লিখেছিলাম এই এয়ারলাইন্সটা নিয়ে। এক কথায় পুরো আফ্রিকা দাবিয়ে বেড়াচ্ছে এককালের এই গরীব দেশটা। আদ্দিস আবাবাকে ধরা হয় পুরো আফ্রিকার এয়ারলাইন হাব। দুবাইয়ের সাথে তুলনা না করা গেলেও এর সামনে এগিয়ে চলা ইর্ষনীয়। আফ্রিকাতে ঢুকতে হলে এদের ছাড়া নেই গতি। এয়ারলাইনটার এই উত্থানের পেছনে আছে একটা মানুষ। তাকে নিয়ে আসবো সামনে। একশোর বেশী উড়ুক্ক যন্ত্রের অনেকগুলোই বোয়িংয়ের ড্রিম লাইনার। চমত্কার ক্রু-লাইন! ব্যবহারও অসাধারণ! ওদেরকেই নিয়ে লেখা যাবে কয়েকটা বই।

৪২৭.

গত ছয় সাত দিনেই চষে বেড়িয়েছি কয়েক হাজারের বেশি কিলোমিটার। বম্বার্ডিয়ার এরোস্পেসের তুখোড় লিয়ারজেট, ইউক্রেনের আকাশের যন্ত্রদানব এমআই হেলিকপ্টার আর কার রেসিংয়ের মতো চকচকে রাস্তা মাথা খারাপ করেছে বরং। হাজারের পর হাজার মাইল পড়ে আছে মানুষের স্পর্শ ছাড়া। ডাকছে সবাইকে। এমন উর্বর মাটি আর আবহাওয়া দেখেননি কখনো। যাই ফেলবেন তাই হবে। একদম সার ছাড়াই। পুরো বসন্তের আমেজ বইছে আফ্রিকা ধরে। এই কঙ্গো আর উগান্ডায় ছিলাম বছরের মতো। সমুদ্রের পাশের জায়গাগুলো ছাড়া বাকি জায়গাগুলোতে বসন্ত – সারাবছর ধরে। আদ্রতা নেই বললেই চলে। পারফেক্ট রিটায়ারমেন্ট ডেস্টিনেশন। আমার ধারনায়। মেক্সিকোর চেয়ে ভালো রিটায়ারমেন্ট ডেস্টিনেশন। আসবেন নাকি? মানুষকে দেবার আছে অনেক কিছু – এখানে।

৪২৮.

এদিকে, ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবাতে চলে আসছে অনেক মার্কিন তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি। সেধরনের ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরী হয়ে গিয়েছে অনেক দেশেই। তবে এনার্জি সেক্টরেই কাজ হয়েছে অনেক অনেক বেশি। দুহাজার দশের মার্কিন আর ইউরোপিয়ান বিনিয়োগের তিরিশ শতাংশ হয়েছে এই আফ্রিকাতে। আর তার পয়তাল্লিশ শতাংশই ছিলো দক্ষিন আফ্রিকাতে। সেটা পাল্টেছে অনেকাংশে। প্রায় ষাট শতাংশই এখন যাচ্ছে সাব-সাহারান আফ্রিকাতে। এগুলোর বেশিরভাগ হচ্ছে ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট। ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে ওধরনের বিনিয়োগ যা মানুষের জীবনধারার উন্নয়নে ব্যবহার হয়। এ কাজগুলো পিরামিডের নিচের মানুষগুলোর ভালো করার জন্য আসে বেশি। সামাজিক আর পরিবেশের উন্নয়ন নিয়ে আসছে এই বিনিয়োগগুলো। আজ কেউ মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস নিয়ে আসলে সেটাও হবে ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট। যাতে মানুষের ভালো হবে আর তাদের ক্ষমতায়ন হবে। মেলিন্ডা আর গেটস ফাউন্ডেশনের হাজারো কোটি টাকা আসছে মানুষের কল্যানে – এই আফ্রিকাতে। কাজও হচ্ছে তৈরী।

৪২৯.

নতুন জায়গায় গেলে ওখানকার স্থানীয় টিভি চ্যানেল দেখার জন্য মুখিয়ে থাকি। ভাষা নিয়ে এখন আর কোনো সমস্যা হয় না আমার। প্রথম প্রথম না বুঝলেও আস্তে আস্তে ওই চ্যানেলের ওপর একটা পারসেপশন তৈরী হয়। ষাট শতাংশ বুঝলেই তো হলো। বিবিসি,সিএনএন আর আল-জাজিরার মতো মেন-স্ট্রিম চ্যানেল দেশের বাইরে গেলে দেখি না। গ্লোবাল নিউজ শোনার জন্য তো আর ওই দেশে যাইনি। মেন-স্ট্রিম চ্যানেলগুলো কিছুটা স্থানীয় নিউজ ‘ক্যারি’ করলেও স্থানীয় সংবাদের জন্য লোকাল চ্যানেলের বিকল্প নেই। বুরুন্ডির বৈদেশিক বিনিয়োগ নিয়ে স্থানীয় প্রিন্ট মিডিয়ার বেশ কয়েকটা অ্যাডভার্ট আমার মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে আজ সকালে। ওদের ‘ইনভেস্টমেন্ট কোড’গুলো যে কোনো কোম্পানির মাথা ঘোরাতে বাধ্য। ‘ইনসেনটিভ প্যাকেজ’গুলো বেশ আকর্ষনীয়। আমার ধারণা এর পেছনে রয়েছে বড় বড় ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং কোম্পানি। নিখুঁত ইনভেস্টমেন্ট কোড। কোন কোন সেক্টর বাইরের ইনভেস্টমেন্টের জন্য তৈরী সেটার বিশদ ধারণাও এসেছে ওই অ্যাডভার্টে। মনে আছে বিশ্বব্যাংকের ‘ডুইং বিজনেস’ ইনডেক্সটার কথা? গত তিন বছর ধরে ওরা বিশ্বের প্রথম দশটা দেশের মধ্যে ‘বেস্ট-রিফর্মার’ হিসেবে নাম করেছে। ইনভেস্টমেন্টবুরুন্ডি.কম সাইটে গিয়ে চোখ কপালে – আমার। বুরুন্ডিতে ব্যবস্যা করার বিভিন্ন খরচের কথাও এসেছে ওখানে। নিখুঁত কাজ। আমাদেরও শেখার আছে অনেককিছু। এই আফ্রিকা থেকে।

৪৩০.

কালকে খেতে গিয়েছিলাম একটা জায়গায়। এই আবিদজানে। অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট চেইন আছে এখানে। মজার কথা, লেবানীজ ব্যবসায়ীরা সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি শেখাচ্ছে এদেশটাকে। কোথায় যেন পড়েছিলাম লেবাননে থাকা মানুষের অনেকগুণ বেশি মানুষ আছে অন্যদেশ গুলোতে। উদ্যোক্তা ব্যাপারটি মিশে আছে তাদের রক্তে। তার সাথে যোগ দিয়েছে চাইনিজ ব্যবসায়ীরা। বিলিয়ন ডলার নিয়ে আসছে এখানে – ইনফ্রাস্ট্রাকচারে বিনিয়োগ করতে। ভারতও নেই পেছনে পড়ে।

আসছি সামনে।

Read Full Post »