Don’t tell me about your effort. Show me your results.
― Tim Fargo
৩৭৩.
পুরোনো কাসুন্দি না ঘেঁটে সামনে আগাই বরং। ডাব্লিউআরসি-০৭তে যা আলাপ হয়েছে সেটার ধারণায় আমাদের কতো স্পেকট্রাম লাগবে ২০২০ সাল নাগাদ, সেটার প্ল্যানিং করতে হবে আমাদেরই। এখনই। স্যাটেলাইট কম্যুনিটি খেপে আছে মোবাইল ইনডাস্ট্রির ওপর। তারা নাকি নিয়ে নিচ্ছে সব ফ্রিকোয়েন্সি। এদিকে ডিজিটাল টিভি’র মাইগ্রেশনের কারণে বেঁচে যাচ্ছে অনেক ফ্রিকোয়েন্সি, সেটার জন্যও চাপাচপি করছে মোবাইল ইনডাস্ট্রি। তবে দেশগুলো নেই বসে। তাদের ম্যানুফ্যাক্চারিং ইনডাস্ট্রি চাপ তৈরি করছে নিজ নিজ দেশের অ্যাডমিনিষ্ট্রেশনের ওপর। এ এক বিশাল যুদ্ধ। আইএমটি-২০০০তে সনাক্ত করা ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে মাত্র অর্ধেকটা ব্যবহারযোগ্য। বাকিটা দেশগুলো না বুঝে দিয়ে বসে আছে অন্য সার্ভিসে। এদিকে, স্পেকট্রাম না থাকায় দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে অপারেটররা। গ্রাহক বেশি, পাইপ (স্পেকট্রাম) কম। ব্যবসা করে খেতে হবে তো তাদের। দেশগুলোকে কাজ করতে হবে নতুন স্পেকট্রাম ব্যান্ড ছাড়ার ব্যপারে। অপারেটরদের দেবার ব্যপারে। ডাব্লিউআরসি-১৫এর আগে ২০২০ সালে কতো স্পেকট্রাম দরকার সেটার ‘এষ্টিমেশন’ নিয়ে কাজ করেছে আইটিইউ’র ‘ওয়ার্কিং পার্টি ৫ডি’। হিসেবে বের হলো দেশগুলোর দরকার ১৮০০ মেগাহার্টজ। নিদেনপক্ষে। তার আগের ‘এষ্টিমেশন’ বলছিলো ১১৭২ মেগাহার্টজের কথা। মোদ্দা কথা, খুঁজে পেতে বের করতে হবে আরো ৫০০ মেগাহার্টজের বেশি স্পেকট্রাম। কম নয়।
৩৭৪.
তবে, বলে নেই একটা কথা – এই মোবাইল ট্রাফিকের মোটা পাইপটা কিন্তু সনাতন নেটওয়ার্ক থেকে আসে না। বরং এটাকে যদি বলি এভাবে – মোট ট্রাফিকের ৮০ শতাংশই আসে মোবাইল হটস্পট অথবা ইনডোর কাভারেজ থেকে। হতে পারে সেটা ওয়াইফাই, ফেমটোসেল অথবা ওয়াইডব্যান্ডের ছোট ছোট সেল। অল্প যায়গায়। ‘ইনফরমা টেলিকমস এণ্ড মিডিয়া’ রিপোর্ট তাই বলে। মানুষ চায় বেশি ডাউনলোড স্পীড। সোজা কথায় – বেশি ‘থ্রুপুট’। বেশি ‘থ্রুপুট’ চাইলে মোবাইল বিটিএসগুলো থেকে ওয়াইফাই অথবা ছোট ছোট সেলগুলো কাজ করে ভালো। আর সেকারণে গ্রাহকদের এই অতিরিক্ত চাহিদা আর ভালো সার্ভিসের জন্য অপারেটরদের সাহায্য নিতে হয় সব ধরনের প্রযুক্তির।
৩৭৫.
বাংলাদেশে ‘ইউনিফাইড’ লাইসেন্সিং রেজীম না থাকায় সমস্যা হচ্ছে কিছুটা। যেমন যারা ‘অ্যাক্সেস সার্ভিস প্রোভাইডার’, গ্রাহকদের কাছে যেতে পারে যারা সরাসরি – যোগাযোগটা তারা স্পেকট্রাম দিয়ে দেবেন, না তার (ফাইবার) দিয়ে দেবেন সেটা ছেড়ে দেয়া হয় অপারেটরের কাছে। যাকে আমরা বলি ‘টেকনোলজি অ্যাগনস্টিক’ লাইসেন্সিং। আবার, অ্যাক্সেস সার্ভিস প্রোভাইডার (মোবাইল বা আইএসপি কোম্পানী) ঢুকতে পারবেন না হোলসেল প্রোভাইডারের আয়ত্ত্বাধীন ‘জুরিসডিকশনে’। ‘টেকনোলজি অ্যাগনস্টিক’ লাইসেন্সিং থাকলে অ্যাক্সেস সার্ভিস প্রোভাইডাররা ফাইবার দিয়ে গেলেন না স্পেকট্রাম দিয়ে গেলেন সেটা নির্ভর করবে অপারেটরের ওপর। কারণ তারা লাইসেন্স নিয়েছেন গ্রাহকের কাছে পৌছানোর জন্য। কি দিয়ে যাবে সেটা বিবেচ্য নয় রেগুলেটরের। ফলে তারা তৈরি করবে একটা ‘মিশ্র’ নেটওয়ার্ক। বাসা অফিসে ফাইবার। বাকি যায়গার জন্য কিনে নেবে স্পেকট্রাম। আর তাই স্পেকট্রামকে ‘ডি-লিঙ্ক’ করতে হবে লাইসেন্সিং থেকে। এগিয়ে গিয়েছে সবাই। লাইসেন্সিংয়ে।
৩৭৬.
রাস্তায় কাভারেজ দেবে মোবাইল বিটিএস (এইচএসপিএ/এলটিই)। বড় বড় শপিং মল, স্টেডিয়াম, বহুতল ফ্ল্যাট, বিশাল কণফারেন্স এরিনা – পুরো ‘থ্রুপুট’টাই ছেড়ে দেবে ওয়াইফাই অথবা ছোট ছোট সেলের ওপর। অনেক সময় এই ছোট ছোট সেলগুলো সার্ভিস দেয় ওই ফাইবারের ফিক্সড নেটওয়ার্কের মতো। গ্রাহকদের জানতেও হয় না কখন কোথায় সংযোগ পাচ্ছে। ওটা ছেড়ে দেয়া থাকে অপারেটরের ওপর। ফাইবার দিয়ে যাবে বিভিন্ন টিভি সার্ভিস। ‘অন ডিমান্ড ব্রডকাস্টিং’ অথবা নেটফ্লিক্সের মতো ‘ভিডিও অন ডিমান্ড’ সার্ভিস। ওগুলো খানিকটা ‘হেভি ইউসেজ’ সেগমেণ্টের জন্য। আর স্পেকট্রাম দিয়ে যাবে মোবাইল ডিভাইসের সংযোগগুলো। ট্রাফিক হবে কিছুটা ‘অ্যাসিমেট্রিক’, মানে ডাউনলোড বেশি হবে আপলোডের চেয়ে। স্পেকট্রাম দিয়ে কাজ করতে গেলে অপারেটরদের প্রয়োজন প্রায় সব ধরনের ফ্রিকোয়েন্সি। কিছু প্ল্যানিং নিয়ে আলাপ করি আপনাদের সুবিধার জন্য।
ক॰ ওপরের দিকের ফ্রিকোয়েন্সিগুলো চমত্কার কাজ করে – বড় বড় ‘থ্রুপুট’এর জন্য। এগুলো দিয়ে বড় ক্যাপসিটি দেয়া যায় গ্রাহকদের। ওয়াইডব্যান্ড বলে ফিক্সড নেটওয়ার্কের কাছাকাছি স্পীড দিতে পারে গ্রাহকদের। এগুলো সাধারণত: ১ গিগাহার্টজ অথবা ৩ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে কাজ করে ভালো। তবে এদের ‘ইন-বিল্ডিং’ পেনিট্রেশন নিয়ে কিছু সমস্যা হয় শহরে। তবে, ঢাকার মতো শহরে – যেখানে ৪০০ – ৫০০ মিটার পর পর রেডিও প্ল্যানিং করা হয় মোবাইল বিটিএসের, সেখানে এই সমস্যা থাকার সম্ভাবনা কম।
খ॰ সুত্র অনুযায়ী, নিচের ফ্রিকোয়েন্সি সুন্দর কাজ করে দূর দুরান্তের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে। যেখানে মোবাইল কোম্পানীর ব্যবসা কম, যদিও বাংলাদেশে ও ধরনের যায়গা পাওয়া ভার – সেখানে এক বিটিএস দিয়ে অনেক বেশি যায়গা নিয়ে যুক্ত করতে পারে গ্রাহকদের। একারণে ৭০০ মেগাহার্টজ নিয়ে পুরো পৃথিবীতে হৈচৈ। ১ গিগাহার্টজের নিচের ফ্রিকোয়েন্সিগুলো এজন্যই ছেড়ে দেয়া জরুরী। বিটিআরসিতে থাকার সময় শুরু হয়েছিল কাজটা। ভয়েস চ্যানেলগুলো ৭০০ মেগাহার্টজে ‘অফলোড’ করে ৯০০, ১৮০০ আর ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যবহার করা যেতে পারে ডাটার জন্য। আর সামনে তো আসছেই ‘ভয়েস ওভার এলটিই’। ডাটা অল দ্য ওয়ে।
গ॰ ৪০০ মেগাহার্টজের নিচে গেলে ভালো – তবে, বড় হয়ে যাবে মোবাইল হ্যান্ডসেট। এছাড়া ডিজাইন সমস্যা আছে ওর নিচের ফ্রিকোয়েন্সিগুলোতে। অস্ট্রেলিয়ান কম্যুনিকেশন্স এণ্ড মিডিয়া কমিশনের একটা হোয়াইট পেপার যদিও ব্যাপারটাকে নিয়েছে মেনে, তবে চ্যানেল ব্যান্ডউইডথ কমে এসে দাড়ায় ৬.২৫ কিলোহার্টজে।
[ক্রমশ:]
Read Full Post »